Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ডাকাতিয়ার বুকে প্রভাবশালীদের ভেসাল জাল, মাছের বংশ বিস্তার হুমকিতে

প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. আকতারুজ্জামান, চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা) থেকে

চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলাকে বিভক্তকারী ডাকাতিয়া নদী লক্ষাধিক মানুষের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন। বর্ষা মৌসুমে মূলত এ নদীর মাছই দুই উপজেলার বিভিন্ন চর, ছোট নদী, পুকুর, জলাশয়সহ সকল জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে এবং পরবর্তীতে বংশ বিস্তার করে। অপ্রতিরোধ্য ভেসালের ব্যবহারের কারণে এ সম্ভাবনাময় নদীর মাছের বংশ বিস্তার ধ্বংসের ধারপ্রান্তে। সরেজমিন ডাকাতিয়া নদীর চিওড়া ইউনিয়নের চিলপাড়া অংশে গিয়ে দেখা যায়, মাছের বংশ বিস্তার হুমকিতে। নদীর ১ কিলোমিটার অংশে প্রায় ১০-১২টি ভেসাল রয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নদীর দুই পাশে রয়েছে কারেন্ট জাল ও অন্যান্য জাল। যত্রতত্র জালের কারণে নদীর এক অংশ থেকে আরেক অংশে একটি ছোটমাছও পার হতে পারে না। এমন অবস্থা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার মুন্সিরহাট ইউনিয়নের ছাতিয়ানী, বৈলপুর, কনকাপৈতের মরকটা, তারাশাইল, জাগজুর, গুনবতীর পরিকোটসহ বেশ কয়েকটি স্থানে। মৎস্য সংরক্ষণ আইনে ভেসাল, চুঙ্গিজালসহ স্থায়ী মাছ ধরার স্থাপনা বসানো নিষিদ্ধ। কিন্তু এ নিষেধকে তোয়াক্কা না করে প্রতিবছরই ডাকাতিয়ার বুকে এভাবেই প্রভাবশালীরা ভেসাল ও কারেন্ট জাল ব্যবহারের মাধ্যমে মাছের প্রজনন ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করছে। চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মৎস্য অফিসের তথ্যমতে, চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় প্রায় ২৭ কিলোমিটারজুড়ে ডাকাতিয়া নদী। এ নদীতে শৈল, কৈ, মাগুর, পুঁটি, বাইলসহ বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছের সংখ্যাই বেশি থাকে। চৌদ্দগ্রাম ও নাঙ্গলকোট উপজেলার একমাত্র বড় নদী ডাকাতিয়ায় প্রাকৃতিকভাবে মাছ উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার শতকরা ৩০-৩৫ ভাগ ভেসালের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সরওয়ার জাহাঙ্গীর জানান, ডাকাতিয়ার বুকে স্থাপিত ভেসালগুলো মূলত প্রভাবশালীদের মাধ্যমে বসানো। তাই অনেক সময় এগুলো অপসারণে গেলে বাধার সম্মুখীন হতে হয়। বর্তমান সরকার নদীসহ প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে জেলে ব্যতীত অন্যদের উচ্ছেদের জন্য কার্ডের ব্যবস্থা করেছে। যাতে করে জেলে ব্যতীত প্রাকৃতিক জলাশয়ে অন্য কেউ মাছ ধরতে না পারে। এক্ষেত্রে জেলেদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে নিয়মিত। ভেসালের ব্যবহার বন্ধ করার জন্য ইতোমধ্যেই ভেসাল বসানো অনেক জেলের জেলে কার্ড বন্ধ রাখা হয়েছে এবং ভেসাল না উঠানো পর্যন্ত জেলেদের কার্ডগুলো স্থগিত থাকবে। এছাড়াও চৌদ্দগ্রামে জেলেদের মাঝে ঐক্য সৃষ্টির লক্ষ্যে শিগগিরই জেলে ফেডারেশন গঠন করা হবে বলেও জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডাকাতিয়ার বুকে প্রভাবশালীদের ভেসাল জাল
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ