বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সুনামগঞ্জের গোবিন্দগঞ্জ-দোয়ারাবাজার সড়কে ১১১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে ৯টি পিসি গার্ডার সেতু। একটি দোয়ারাবাজার সীমান্তে ও অন্য ৮টি সেতু ছাতক উপজেলায়। সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের গোবিন্দগঞ্জ-থেকে দোয়ারাবাজারের নৈনগাঁও গ্রাম পর্যন্ত ৯টি সেতুর মধ্যে কাজ শেষ হয়েছে ৭টির। চার লেন বিশিষ্ট দুইটি সেতুর কাজ চলছে ধীরগতিতে।
এতে বিকল্প পথে যানবাহন চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সামান্য বৃষ্টিপাতে বিকল্প রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে প্রায়ই যানজট লেগেই থাকে। সেতুগুলোর নির্মাণকাজ শেষ হলে যোগাযোগের দিক দিয়ে অনেকটা ভোগান্তি দূর হবে। চরম দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবে এ অঞ্চলের মানুষ। সড়কে যানজটমুক্তভাবে চলতে পারবে যাত্রীবাহী বাস, মালবাহী ট্রাক, কভার্ডভ্যানসহ অন্যান্য যানবাহন।
জানা যায়, গোবিন্দগঞ্জ থেকে ছাতক পর্যন্ত সরু ও দোয়ারাবাজার সড়কে একাধিক বেইলী ব্রিজ ছিল। ব্রিজগুলো দিয়ে দীর্ঘদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করেছে যাত্রীবাহী ও মালবাহী যানবাহন। যানজটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কে যা চলাচল বন্ধ থাকতো। ব্রিজের রেলিং ভেঙে ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন খাদে পড়ে একাধিক দুর্ঘটনার ঘটেছে। এসব বিষয় নিয়ে দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয় এবং কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি পড়ে। অবশেষে গোবিন্দগঞ্জ-দোয়ারাবাজার সড়কে ৯টি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে জামিল ইকবাল লিমিটেড, রানা বিল্ডার্স লিমিটেড ও জনজেবী প্রাইম লিমিটেড নামে তিন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পৃথক তিনটি প্যাকেজে পুরাতনগুলো ভেঙে শুরু হয় পিসি গার্ডার সেতু কাজ। তৈরি করা হয় যানবাহন চলাচলের জন্য বিকল্প বেইলী ব্রিজ ও এ্যাপ্রোচ সড়ক। দীর্ঘ ভোগান্তির পরে হলেও সড়কে সেতু নির্মিত হওয়ায় খুশি এ অঞ্চলের মানুষ।
ছাতক পৌরশহরের নোয়ারাই বাজারের ব্যবসায়ী, সুনামগঞ্জ জেলা রড-সিমেন্ট মার্চেন্ট গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক কয়েছ আহমদ বলেন, গোবিন্দগঞ্জ থেকে ছাতক পর্যন্ত ব্রিজগুলো মারাত্বক ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। এ সড়কে মালামাল পরিবহনে অতিরিক্ত টাকা ব্যয় হতো। তিনি বলেন, সড়কে নির্মানাধিন সেতুগুলোর কাজ শেষ হলে সড়ক পথে পরিবহনে ঝুঁকি থাকবে না। উন্নত হবে যোগাযোগ ব্যবস্থা। ছাতকের গোবিন্দগঞ্জের বাসিন্দা, প্রগতি পরিবহন গ্রুপের ট্রাক চালক খালেদ আহমদ বলেন, এ সড়কে এক যুগ ধরে বিভিন্ন কোম্পানির ট্রাকের মাধ্যমে তিনি লাফার্জ হোলসিমের সিমেন্ট পরিবহন করে আসছেন সারা দেশে। ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ সড়কে ছোট ছোট ব্রিজগুলো ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হতেন। নতুন সেতু নির্মাণ হওয়ায় ঝুঁকি কমে আসছে। ফোরলেন বিশিষ্ট নির্মাণাধিন সেতু দু’টির কাজ দ্রুত শেষ হলে সড়কে যানজট মুক্ত থাকবে।
ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন তালুকদার বলেন, দুই আড়াইশ’ বছরের ঐতিহ্য এখানের বালু ও পাথর ব্যবসা। এ ব্যবসা-বাণিজ্যের উপর ভর করে এখানের অর্থনীতির চাকা ঘুরে। এছাড়া বিভিন্ন কল-কারখানা গড়ে উঠায় এক সময় ছাতক শহরটি সারা দেশে বেশ পরিচিতি লাভ করে। সুনামগঞ্জ জেলার মধ্যে এ উপজেলা থেকে সরকার অধিক রাজস্ব পায়। তিনি বলেন, ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত সড়কটি দীর্ঘদিন অবহেলিত ছিল। সড়কের ব্রিজগুলো ছিল নড়বড়ে অবস্থায়। সরু ব্রিজগুলোতে জুড়াতালি দিয়ে চলছে অনেকদিন। বর্তমানে এ সড়কে এক সাথে ৬টি ও দোয়ারাবাজার সড়কে আরও ৩টি সেতু নির্মাণসহ সুরমা নদীর উপর নির্মানাধিন সেতুটি উদ্বোধন হলে ছাতক- দোয়ারাবাজারবাসী যোগাযোগ ক্ষেত্রে অনেকটা উন্নতি হবে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের ছাতকের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাসুদ আহমদ সিদ্দিকী বলেন, ১১১ কোটি টাকা ব্যয়ে গোবিন্দগঞ্জ থেকে ছাতক পৌরশহর পর্যন্ত ৬টি ও সুরমা নদীর অপারে দোয়ারাবাজার সড়কে আরও ৩টিসহ মোট ৯টি পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ হচ্ছে। ইতোমধ্যে ৭টি সেতুর মূল কাজ শেষ হয়েছে। এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের ছাতকের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, জামিল ইকবাল লিমিটেডের প্যাকেট-১এর আওতায় তকিপুর থেকে সড়কের মাধবপুর পর্যন্ত টু-লেনের চারটি সেতু, রানা বিল্ডার্স লিমিটেডের প্যাকেজ-২এ পেপারমিল ও রহমত ভাগ এলাকায় চার লেনের দুইটি সেতু, প্যাকেজ-৩ এ জনসেবী প্রাইম লিমিটেডের সুরমা নদীর অপারে টেঙ্গারগাঁও, নৈনগাঁও ও লক্ষিভাউর নামক স্থানে টু-লেনের তিনটি সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে তকিপুর, গড়গাঁও, হাসনাবাদ, মাধবপুর, টেঙ্গারগাঁও, লক্ষিভাউর ও নৈনগাঁও ৭টি সেতুর মূল কাজসহ এ্যাপ্রোচের কাজও প্রায় শেষ হয়েছে। শুধু রঙের কাজ বাকী আছে। এসব সেতু দিয়ে প্রতিদিন চলছে যানবাহন। এছাড়া পেপারমিল ও রহমতভাগের ফোরলেনের দুইটি সেতুর কার্যক্রম চলছে। আগামী বছরের জুন মাসের মেয়াদের মধ্যে ৯টি পিসি গার্ডার সেতুর যাবতীয় কাজ সম্পন্ন হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।