Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১, ২৫ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

১১ দফা দাবিতে শাহবাগে গণঅনশন ও গণঅবস্থান

বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০২১, ১:২৯ পিএম

সম্প্রতি দুর্গাপূজার সময় দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার প্রতিবাদে ১১ দফা দাবিতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গণঅনশন, গণঅবস্থান ও বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ।

সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তদন্তে সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন সহ মোট ১১ দফা দাবি নিয়ে শনিবার সকাল ৬টা থেকে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘর চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে সংগঠনটি। এছাড়া চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে একযোগে পালিত হয়েছে এই কর্মসূচি। বেলা ১২টা পর্যন্ত কর্মসূচি চলার কথা থাকলেও তা শেষ হয় পৌনে ১ টায়।

শাহবাগে সকাল ৭টায় এই কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত হন সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের নেতা হাসানুল হক ইনু। এ সময় তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্মান্ধ, জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলা পরিকল্পিত ছিল। হামলাকারীরা হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগাতে চেয়েছিল। বাংলাদেশের মুসলিম সমাজ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হস্তক্ষেপে দাঙ্গা লাগানো সম্ভব হয়নি।’

ইনু বলেন, ‘সমাজের দিকে যখন আমি তাকিয়েছি, তখন দেখেছি গ্রামে, পাড়ায়, মহল্লায় হিন্দু-মুসলিম সদভাব বজায় রাখছেন। এটাই হচ্ছে আশার কথা, এটাই হচ্ছে বাস্তবতা। সাম্প্রদায়িক শক্তি, যারা আক্রমণ পরিচালনা করে তাদের একটা মাত্রা আছে। তারা পাকিস্তান পন্থায় বিশ্বাস করে, তারা একাত্তরের রাজাকারদের সাথে সম্পৃক্ত, জামায়াতে ইসলামীর সাথে সম্পৃক্ত ও সম্পর্কিত এবং বিএনপির সাথে তারা সম্পৃক্ত। বিএনপি রাজাকার, যুদ্ধাপরাধী ও ধর্মান্ধদের ছাতা ধারাবাহিকভাবে ধরে রেখেছে এবং এরফলে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।


এধরনের ‘সাম্প্রদায়িক হামলা’র পুনরাবৃত্তি যেন না হয় সেজন্য ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাসদের এই নেতা আরও বলেন, ‘হামলা ঠেকাতে না পারার জন্য দায়ী প্রশাসনের একটি অংশ। এই হামলার প্রতিবেদন দেখে আমার মনে হয়েছে এই হামলা ঠেকাতে কিছু ক্ষেত্রে ব্যর্থতা আছে, কিছু ক্ষেত্রে অদক্ষতা আছে, কিছু ক্ষেত্রে গাফেলতি আছে। নোয়াখালীসহ বেশ কয়েক জায়গায় আমি দেখেছি প্রশাসনের উদ্দেশ্যমূলক নিষ্ক্রিয়তা। এটা খুবই ভয়াবহ ঘটনা। এই ধরনের হামলা ঠেকাতে সাম্প্রদায়িক জঙ্গি গোষ্ঠীকে আর ছাড় দেওয়া যায় না।’

দাবিগুলো হলো: দূর্গোৎসবকে কেন্দ্র করে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তদন্তে সুপ্রীম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত সকল মন্দির, বাড়িঘর পুনঃনির্মাণ, গৃহহীনদের
পুণর্বাসন, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ প্রদান ছাড়াও আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও নিহতদের প্রতিটি পরিবারকে অন্যুন ২০ লক্ষ টাকা প্রদান বিকল্পে প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের একজনকে যোগ্যতা অনুযায়ী
চাকরিতে নিয়োগের জন্যে সরকারের প্রতি আহ্বান, বস্তুনিষ্ঠ নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক হামলাকারী ও তাদের পেছনে থাকা
চক্রান্তকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেফতার করে বিশেষ ক্ষমতা আইন, সন্ত্রাস দমন আইনের আওতায় এনে বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দ্রুততম সময়ে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা,
সাম্প্রদায়িক হামলাকারীদের রোধে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনা সত্ত্বেও
প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষের মধ্যে যারা দায়িত্ব পালনে গাফিলতি ও অবহেলা করেছেন তাদের চিহ্নিত করে অনতিবিলম্বে তাদের বিরুদ্ধেও দ্রুত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ, বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যম ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদিতে ধর্মীয় বিদ্বেষ ছাড়াও সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিচ্ছে যারা তাদেরকে চিহ্নিত করে বিশেষ ক্ষমতা আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত, প্রধানমন্ত্রীর সুস্পষ্ট নির্দেশনা সত্বেও সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের মোকাবেলায় যেসব জনপ্রতিনিধি এগিয়ে আসেননি তাদেরকেও চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক রাজনৈতিক পদক্ষেপ
গ্রহণ, ২০০১-২০০৬ সাল পর্যন্ত সংগঠিত সাম্প্রদায়িক ঘটনাবলি তদন্তে মাননীয় সুপ্রীম
কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের নির্দেশনায় গঠিত সাহাবুদ্দিন কমিশনের সুপারিশ সম্বলিত রিপোর্ট অনতিবিলম্বে জনসমুক্ষে প্রকাশ ও এর সুপারিশ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, ১৯৭২ সালের সংবিধান পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে সরকারি দলের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুত সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন,বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন, অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পন আইনের দ্রুত বাস্তবায়নসহ ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কাছে প্রদত্ত অঙ্গিকার দ্রুত বাস্তবায়ন।



 

Show all comments
  • জাহানারা বেগম ২৩ অক্টোবর, ২০২১, ১:৫৭ পিএম says : 0
    মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, জননেত্রী জনগনের মা। আমার একটি আকুল আবেদন যে, আমি এক অসহায় ছোট বোন। আমার মা বাবা কেউ নেই তাই আমি আমার ভাইয়ের জন্য আমি আপনার কাছে একটি মিনতি কামনা করছি। আমার বড় ভাই পাঁচ সেপ্টেম্বর অর্থরীন মামলায় গ্রেফাতার হয়। ছয় সেপ্টেম্বর সাঁজা হয়ে যায়। সে এখন জেল খানায় আছে। তাকে অনেক চেষ্টা করে জামিন করানো যায় নি। উকিলের কাছে গিয়ে ছিলাম কিন্তু টাকা ছাড়া সে এ কাজ করতে চায় না। টাকার জন্য আমি এলাকাবাসির কাছে গিয়েছিলাম কিন্তু তারা কেউ এগিয়ে আসে না। আর্থিক সংকটের কারণে আমার এক ছোট ভাইও মারা গিয়েছে গত 31/1/2021। অতএব, বিনীত নিবেদন উপরোক্ত বিষয়টি বিবেচনা করে আমাকে সাহায্যর জন্য বাধিত করবেন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সাম্প্রদায়িক সহিংসতা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ