Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ফর্ম আর কন্ডিশনকে জয়ের মিশন অস্ট্রেলিয়ার

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০১ এএম | আপডেট : ১২:০২ এএম, ২৩ অক্টোবর, ২০২১

ওয়ানডে বিশ্বকাপ পাঁচবার জিতলেও এখনো পর্যন্ত একবারও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিততে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। ২০১০ সালের আসরে একেবারে কাছাকাছি গিয়েও ফিরতে হয়েছিল খালি হাতে, ফাইনাল ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে হেরে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছিল রানার্স-আপ হয়ে। তবে সর্বশেষ ২০১৬ সালের আসরে সেমিফাইনালের আগেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নিয়েছিল তারা।

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সাম্প্রতিক ফর্মটা একেবারেই ভালো যাচ্ছে না অজিদের। টানা ৫টি টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারের স্মৃতি নিয়ে তারা গিয়েছে বিশ্বআসরে। সর্বশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজেও নাকানিচুবানি খেয়েছে অজিরা, ৪-১ এ সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ১০টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির মাঝে অস্ট্রেলিয়া জিততে পেরেছে মোটে ২টি। ফর্মটা তাই একেবারেই পক্ষে নেই তাদের।

তবে ফর্ম, পরিসংখ্যান যাইহোক দলীয় শক্তিমত্তার কথা বিবেচনায় নিলে অস্ট্রেলিয়া অবশ্যই অনেক এগিয়ে থাকবে। ব্যাটিংয়ে দলের মূল ভরসা হতে যাচ্ছেন দলীয় অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। বিধ্বংসী এই ব্যাটার নিজের দিনে দুমড়েমুচড়ে দিতে পারেন দুনিয়ার যেকোনো বোলিং লাইনআপকেই। এবছর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১০টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলা ফিঞ্চের গড় ৩৬, অবশ্যই দারুণ। বিশ্বকাপেও তার ব্যাটিংয়ের ওপরই ভরসা করবে অস্ট্রেলিয়া।

ওপেনিংয়ে ফিঞ্চের সঙ্গী ওয়ার্নারের বেলায় আবার উল্টো চিত্র। সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না তার, ভুগছেন রানখরায়। কী আন্তর্জাতিক ম্যাচ, কী আইপিএল, রানের দেখা নেই কোথাওই। তবে টি-টোয়েন্টির বিস্ফোরক ব্যাটারদের মধ্যে ওয়ার্নার অবশ্যই থাকবেন। তার ফর্মে ফেরার জন্য দারুণ উপলক্ষ হতে পারে এবারের বিশ্বকাপ, আর যদি সত্যিই ফর্মে ফিরতে পারেন তিনি, অজিদের ওপেনিং জুটি নিঃসন্দেহে হয়ে উঠবে প্রতিপক্ষের জন্য ভয়াবহ।

তাছাড়া আইপিএল থেকে দুর্দান্ত ফর্ম নিয়েই বিশ্বকাপে গেছেন টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। প্রায় ৪৩ ছোঁয়া(৪২.৭৫) গড়ে এবারের আইপিএলে ম্যাক্সওয়েল রান করেছেন ৫১৩। যেখানে স্ট্রাইকরেট ১৪৪.১০! অসাধারণ বললেও হয়ত কম হয়ে যাবে। তাছাড়াও ব্যাট হাতে কার্যকরী হতে পারেন উইকেটরক্ষকব্যাটার ম্যাথু ওয়েড, অলরাউন্ডার মার্কাস স্টয়নিস এবং ফর্মে থাকা মিচেল মার্শ।

ব্যাটিং দুর্দান্ত হলেও স্পিনে কিছুটা দুর্বলতা আছে অজিদের, যা ভোগাতে পারে বিশ্বকাপে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে বরাবরই স্পিনারদের জন্য কিছুটা সহায়তা থাকেই। সেসব উইকেট, কন্ডিশনকে কাজে লাগিয়ে অজি স্পিনাররা কতটুকু ভালো করতে পারেন তাই হচ্ছে দেখার বিষয়। দলের মূল দুই স্পিনার অ্যাডাম জাম্পা এবং অ্যাস্টন অ্যাগারের কেউই আহামরি ভালো ফর্মে নেই। বাংলাদেশ সফরে ধীরগতির স্পিনিং ট্র্যাকের ফায়দাও নিতে পারেননি অ্যাগার, ৫ ম্যাচ খেলে উইকেট পেয়েছেন মোটে ৩টি। অন্যদিকে জাম্পা এবছর অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ১৪টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে উইকেট নিয়েছেন ১৩টি। স্কোয়াডের তৃতীয় স্পিনার মিচেল সুইপসন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একেবারেই অনভিজ্ঞ, ম্যাচ খেলেছেন মাত্র ৭টি।

তবে পেসারদের মধ্যে আতঙ্কের নাম হতে যাচ্ছেন মিচেল স্টার্ক। গতি, সুইং, বৈচিত্র্য সবকিছু দিয়েই ব্যাটারদের পরাস্ত করার কৌশল ভালোই জানা আছে স্টার্কের। এর পাশাপাশি বড় টুর্নামেন্ট এলেই স্টার্কের জ্বলে ওঠা যেন অবধারিত, এবারের বিশ্বকাপে স্টার্কের কাছ থেকে দারুণ পারফরম্যান্সের আশা তাই করতেই পারে অজিরা। স্টার্কের পাশাপাশি গতির ঝড় তোলার জন্য প্রস্তুত থাকবেন আরেক পেসার প্যাট কামিন্স। কামিন্স, স্টার্করা অবশ্যই হুমকির কারণ হতে যাচ্ছেন প্রতিপক্ষের জন্য। আরেক পেসার জশ হ্যাজলউডও সঙ্গী হবেন এই জুটির। কামিন্স-স্টার্ক-হ্যাজলউড ত্রয়ী মিলে অজিদের পেস বোলিং ইউনিটকে বেশ দুর্বোধ্য করে রাখবেন বলেই আশা করা যাচ্ছে।

তবে চিন্তার বিষয়ও আছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে উইকেট, কন্ডিশন খুব বেশি পেসারদের সহযোগিতা করে না। এশিয়ার আবহাওয়াতে খেলে অতটা অভ্যস্তও নয় অজি শিবির। সেক্ষেত্রে অচেনা পরিবেশে তাদের পারফরম্যান্স কেমন হয় তাও একটি বড় প্রশ্ন।

এবারের বিশ্বকাপে সরাসরি সুপার টুয়েলভে খেলবে অস্ট্রেলিয়া। গ্রুপ-১ এ তাদের প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং প্রাথমিক পর্ব পেরিয়ে আসা আরও দুই দল। গ্রুপে ইংল্যান্ড এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মত দুই পরাশক্তি থাকায় তাদের টপকে অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনালে যাওয়াটা কিছুটা কঠিনই বটে। তবুও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তো আর শেষ কথা বলে কিছু নেই।

আগামী ২৩ অক্টোবর আবুধাবিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে অস্ট্রেলিয়া।

একনজরে অস্ট্রেলিয়ার বিশ্বকাপ স্কোয়াড : অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), প্যাট কামিন্স (সহ অধিনায়ক), ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ, অ্যাস্টন অ্যাগার, জশ হ্যাজলউড, জশ ইংলিস, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, কেন রিচার্ডসন, মিচেল স্টার্ক, মার্কাস স্টয়নিস, ম্যাথু ওয়েড, অ্যাডাম জাম্পা, মিচেল সোয়েপসন।

স্ট্যান্ডবাই : ড্যান ক্রিশ্চিয়ান, ড্যানিয়েল স্যামস ও নাথান এলিস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টি২০ কাপ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ