রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা
মোটা অংকের মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের ২১ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে কাশিয়ানী উপজেলার তারাইল সমবায় সমিতির পরিচালনা কমিটি। কষ্টার্জিত টাকা খুঁইয়ে পথে বসতে চলেছে এলাকার সাড়ে ৪শ’ দরিদ্র গ্রাহক। তারা টাকা ফেরত পেতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ১ বছর আগে ক্ষতিগ্রস্তরা প্রতিকার চেয়ে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে একটি লিখিত অভিযোগ করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাকে অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দেন। সাবেক উপজেলা সমবায় অফিসার মো. আলম হোসেন ভুয়া সদস্য, উচ্চ সুদে ঋণ বিতরণ, সদস্যদের ভুয়া ভাউচার, হিসাবে গড়মিলসহ নানা অনিয়মের মাধ্যমে সমিতির টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন। ওই কর্মকর্তা গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর নং-৯৭৯ স্মারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত প্রতিবেদনের চিঠি কাশিয়ানী ইউএনও বরাবর প্রেরণ করেন। পত্রটি ইউএনও অফিসের অফিস সহকারী মোহাব্বত হোসেন চলতি বছরের ১১ফেব্রুয়ারি গ্রহণ করলেও রহস্যজনক কারণে ইউএনও অফিসে চিঠিটি পাওয়া যাচ্ছে না। প্রতিবেদন দাখিলের প্রায় ১ বছর পার হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রহক মোমেনা বেগম রহিমা বেগম জানান, ২০১২ সালের তারাইল গ্রামের কামরুল ইসলাম শেখ ও ইউপি মেম্বার সাহের আলী মোল্লাসহ স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি “তারাইল সঞ্চয় ও ঋণ দান সমবায় সমিতি লি.” নামে একটি সমিতি সমবায় অধিদপ্তরের অধীনে নিবন্ধন করেন। তারাইল হাইস্কুল সংলগ্ন মোড় এলাকায় একটি ঘরে কার্যালয় খুলে সমিতির কার্যক্রম শুরু করে। এরপর ওই এলাকার সহজ-সরল ও সাধারণ মানুষকে অধিক মুনাফার প্রলোভন দেখায়। ফলে সদস্যরা প্রলোভনে পড়ে ব্যাংকে টাকা না রেখে ওই সমবায় সমিতিতে টাকা জমা রাখেন। দৈনিক সঞ্চয়ের মাধ্যমে সদস্যদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করে সমিতির কর্মীরা। এভাবে প্রায় ৪৪৪ জন সদস্যদের কাছ থেকে ২১ লাখ, ৯৩ হাজার, ৬৫৬ টাকা সঞ্চয় সংগ্রহ করে। হঠাৎ ২০১৪ সালের এপ্রিল মাসের দিকে সমিতির কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। সদস্যরা তাদের টাকা ফেরত চাইলে সমিতির সংশ্লিষ্টরা নানা তালবাহানা করতে থাকে। এক সময় সমিতির লোকেরা টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে এবং সদস্যদের নানা ভয়ভীতি দেখানো হয় বলে তারা জানান। মো. কাজী রব্বানী নামের এক সদস্য জানান, আমি তারাইল সমবায় সমিতিতে ১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা সঞ্চয় জমা রেখে ধরা খেয়েছি। এখন টাকা চাইলে তারা নানা তালবাহানা করছেন। এছাড়া এলাকার আরো কয়েকজন মহিলা সদস্যদের সাথে কথা হয়। এরমধ্যে শাহিনা আক্তার কুটি ৫ হাজার ৬ শ’, নার্গিস বেগম ২ হাজার ৮ শ’ টাকা জমা রেখেছেন বলে জানায়। এ সমবায় সমিতিতে টাকা রেখে পথে বসার উপক্রম হয়েছে কয়েকশ’ দরিদ্র সদস্যের। তারা অভিযোগ করেন, সাবেক উপজেলা সমবায় অফিসার মো. আলম হোসেন তদন্তে টাকা আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি তদন্ত প্রতিবেদন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে দায়ের করেছেন। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনটি ওই অফিস থেকে গায়েব করে দেয়া হয়েছে। তাই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এ ব্যাপারে সমিতির সভাপতি ও হিসাবরক্ষক কামরুল ইসলাম শেখের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সব টাকা ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে। ঋণ গ্রহীতারা টাকা দিচ্ছে না বলে টাকাগুলো তাদের কাছে আটকা পড়েছে। তবুও টাকা আদায়ের জন্য আমরা কমিটি করে দিয়েছি। সহ-সভাপতি ইউপি মেম্বার শাহের আলী মোল্লা টাকা আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, টাকাগুলো ঋণ গ্রহীতার কাছে দেয়া রয়েছে। এলাকার কিছু সুযোগসন্ধানী ঋণ নিয়ে বিবাদ সৃষ্টি করে সমিতির টাকাগুলো ফেরত দিচ্ছে না। ইউএনও অফিসের অফিস সহকারী মোহাব্বত হোসেন চিঠি উদাওর বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমি চিঠিটি গ্রহণ করেছি। ফাইল খোঁজাখুঁজি করলে চিঠিটি পাওয়া যাবে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কামরুল হাসান বলেন, দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।