Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৪০ সচিবের বিরুদ্ধে রিট

এক যুগেও বাস্তবায়ন হয়নি যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সংক্রান্ত রায়

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

শিক্ষাঙ্গন এবং কর্মক্ষেত্রে নারী-শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবাযন না করায় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের ৪০ সচিবের বরুদ্ধে রিট করা হয়েছে। জন প্রশাসন সচিবকেও রিটে বিবাদী করা হয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে অ্যাডভোকেট সৈয়দা নাসরিন ও মো. শাহিনুজ্জামান রিটটি ফাইল করেন। বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়ার নেতৃত্বাধীন ভার্চুয়াল ডিভিশন বেঞ্চে রিটের শুনানি হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন রিট ফাইলকারী দুই আইনজীবী।

রিটে উল্লেখ করা হয়, ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট কর্মস্থল ও শিক্ষাঙ্গনে নারী ও শিশুদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধের জন্য দিকনির্দেশনা চেয়ে একটি রিট করা হয়। শুনানি শেষে ২০০৯ সালের ১৪ মে হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে হাইকোর্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, গণমাধ্যমসহ সব প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে ‘যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি’ গঠনের আদেশ দেন।

হাইকোর্টের ওই রায়ের পর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে দেশের সব সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে তা বাস্তায়নের নির্দেশ দেয়। কিন্তু তা পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। হাইকোর্টের ওই রায়ে বলা হয়, ‘কমিটিতে কমপক্ষে পাঁচজন সদস্য থাকবেন। কমিটির বেশির ভাগ সদস্য হতে হবে নারী এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের বাইরে থেকে ২ সদস্য নিতে হবে। সম্ভব হলে একজন নারীকে কমিটির প্রধান করতে হবে।’
এ বিষয়ে সচেতনতা ও জনমত তৈরির জন্য হাইকোর্টের নির্দেশনায় আরও বলা হয়, ‘সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রতি শিক্ষাবর্ষে পাঠদান কার্যক্রমের শুরুতে এবং প্রতি মাসে শিক্ষার্থীদের নিয়ে অরিয়েন্টেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। সংবিধানে বর্ণিত লিঙ্গ সমতা ও যৌন নিপীড়ন সম্পর্কিত দিকনির্দেশনা বই আকারে প্রকাশ করতে হবে’।
হাইকোর্টের রায়ে যৌন নিপীড়নের সংজ্ঞায় বলা হয়, শারীরিক ও মানসিক যেকোনো ধরণের নির্যাতনই যৌন হয়রানির মধ্যে পড়ে। ই-মেইল, এসএমএস, টেলিফোনে বিড়ম্বনা, পর্নোগ্রাফি, যে কোনো ধরনের অশালীন চিত্র, অশালীন উক্তিসহ কাউকে ইঙ্গিতপূর্ণভাবে ‘সুন্দরী’ বলাও যৌন হয়রানির পর্যায়ে পড়ে। শুধু কর্মস্থল কিংবা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই এ ধরণের হয়রানি ঘটে না, রাস্তায় চলাচলের ক্ষেত্রে যে কোনো ধরণের অশালীন উক্তি, কটুক্তি করা, কারও দিকে খারাপ দৃষ্টিতে তাকানো ইত্যাদি যৌন হয়রানি হিসেবে গণ্য করা হবে।

রায়ে আরও বলা হয়, ‘কোনো নারীকে ভয়ভীতি প্রদর্শন, যে কোনো ধরণের চাপ প্রয়োগ করা, মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে সম্পর্ক স্থাপন, অশালীন চিত্র, দেয়াল লিখন, আপত্তিকর কিছু করাও যৌন হয়রানির মধ্যে পড়ে।’ যৌন হয়রানি রোধে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে অ্যাডভোকেট ফাহিমা নাসরিন মুন্নী ২০১০ সালের ২ নভেম্বর জনস্বার্থে হাইকোর্টে অপর একটি রিট করেন।

দীর্ঘ শুনানির পর আদালত কয়েক দফা নির্দেশনাসহ রায় প্রদান করেন। এছাড়া ২০১১ সালের ২৬ জানুয়ারি যৌন হয়রানি বন্ধে ৭ দফা নির্দেশনাসহ রায় দেন বিচারপতি মো. ইমান আলী এবং বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের সমন্বয়ে গঠিত তৎকালিন ডিভিশন বেঞ্চ।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শিশু

১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ