Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অপুর ঘূর্ণিতে কুপোকাত সিলেট

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২০ অক্টোবর, ২০২১, ১২:১১ এএম

জয় ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার। হাতে ৭ উইকেট নিয়ে ১৮ রানের সমীকরণ মেলাতে দেরি করেনি ঢাকা বিভাগ। নাজমুল ইসলাম অপুর গড়ে দেওয়া মঞ্চে সিলেট বিভাগকে সহজেই হারিয়ে জাতীয় লিগে (এনসিএল) শুভ সূচনা করেছে তারা। গতকাল সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের একাডেমি মাঠে আসরের প্রথম স্তরের ম্যাচে স্বাগতিকদের ৭ উইকেটে হারিয়েছে সাইফ হাসানের দল। দুই দলের বিবর্ণ ব্যাটিংয়ের প্রদর্শনীতে প্রথম রাউন্ডের এই ম্যাচের ফল এসেছে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনেই।
আগের দিনের ৩ উইকেটে ৪৮ রান নিয়ে খেলতে নেমেছিল ঢাকা। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান রকিবুল হাসান ও তাইবুর রহমান মিলে এদিন ২.৫ ওভার খেলে দলকে লক্ষ্যে পৌঁছে দেন। রকিবুল ৩২ বলে ৩ চারে ১৫ ও তাইবুর ২৫ বলে ১ চারে ৮ রান করেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে ঢাকার জয়ের নায়ক বাঁহাতি স্পিনার অপু। সিলেটের প্রথম ইনিংসে ২৩ রানে ৬ উইকেট নেন তিনি। তাতে দলটি গুটিয়ে যায় মোটে ৬৭ রানে। দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমেও অপুর ঘূর্ণি জালে আটকা পড়ে তারা। ৪ উইকেট তিনি পান ৪১ রানে। সবমিলিয়ে তার শিকার ৬৪ রানে ১০ উইকেট।
আগামী রোববার দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে রংপুর বিভাগের মুখোমুখি হবে ঢাকা। আর অলক কাপালির সিলেট মোকাবিলা করবে খুলনা বিভাগের বিপক্ষে।
এনামুলের আক্ষেপ, সোহরাওয়ার্দীর ৬ উইকেট
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের মূল ভেন্যুতে প্রথম স্তরের অপর ম্যাচে কাক্সিক্ষত সেঞ্চুরির কাছাকাছিই পৌঁছে গিয়েছিলেন এনামুল হক। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলেন না তিন অঙ্কে পা রাখতে। তাকে ফেরানো সোহরাওয়ার্দী শুভ করলেন দুর্দান্ত বোলিং। তবে বাঁহাতি এই স্পিনারের ৬ উইকেটের পরও রংপুর বিভাগের বিপক্ষে লিগ নিয়েছে খুলনা বিভাগ।
৪ উইকেটে ১৭১ রান নিয়ে দিন শুরু করা খুলনাকে গতকাল ২৬০ রানে থামিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করছে রংপুর। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৪২ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করেছে তারা। প্রথম ইনিংসে খুলনার লিডের মূল কারিগর এনামুল। ৮৪ রান করেন ডানহাতি এই ওপেনার।
প্রতিপক্ষের লিড ৩ রানের বেশি হতে দেননি সোহরাওয়ার্দী। ৮৭ রান দিয়ে ৬ উইকেট নেন বাঁহাতি এই স্পিনার। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে এটি তার ২২তম পাঁচ উইকেট। ৩ উইকেট নিয়ে অবদান রাখেন মুকিদুল ইসলাম। এদিনের খেলায়ও বাগড়া দিয়েছে বৃষ্টি। পরে আলোকস্বল্পতায় দিনের খেলা শেষ হয়ে যায় নির্ধারিত সময়ের আগেই।
কক্সবাজারে ব্যাটে-বলের জমজমাট লড়াই
বৃষ্টিতে পুরো একটি দিন ভেসে যাওয়ায় ম্যাচে ফল হয়তো সম্ভব নয়, কিন্তু কক্সবাজারের শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় স্তরের ম্যাচে দারুণ জমল ব্যাটে-বলের লড়াই। সালমান হোসেন ও শামসুল ইসলামের ফিফটির পরও দারুণ বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে লিডের আশা জাগাল ঢাকা মেট্রো। তবে শেষের ব্যাটসম্যানদের দৃঢ়তায় ২ রানের লিড নিল বরিশাল বিভাগ।
তৃতীয় দিন শেষে মেট্রোর রান বিনা উইকেটে ২৫। সাদমান ইসলাম ১২ ও রাকিন আহমেদ ১৩ রানে ব্যাট করছেন। শেষ বেলায় ১৩ ওভার নিরাপদে কাটিয়ে দেন এই দুই ওপেনার। প্রথম ইনিংসে ২৩৯ রান করা মেট্রো এগিয়ে ২৩ রানে। ৬ রান নিয়ে দিন শুরু করা বরিশাল প্রথম ইনিংসে করে ২৪১। বৃষ্টির জন্য দ্বিতীয় দিন মাঠে গড়ায়নি কোনো দল।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৩৪ রানে পাঁচ উইকেট নেন শরিফউল্লাহ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এর আগে একবারই পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন ঢাকা মেট্রোর এই বোলার। সেবার ৬৩ রানে নিয়েছিলেন ৫টি। পেসার শহিদুল ইসলাম ৪ উইকেট নেন ৪১ রানে।
এক বিন্দুতে হৃদয়-নাঈম
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় স্তরের আরেক ম্যাচের প্রথম ইনিংসে আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে ফিফটি করা তৌহিদ হৃদয় ফের পার করলেন পঞ্চাশ। এবার দেখেশুনে খেলে। তবে একটি জায়গায় মিলে গেল তার দুটি ইনিংসই। দুবারই আউট হলেন ৬৮ রানে! হাত ঘুরিয়ে আবারও ৪ উইকেট নিলেন নাঈম হাসান। আর তাতে রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে জয়ের সুবাস পাচ্ছে চট্টগ্রাম বিভাগ। ৮ উইকেট হাতে রেখে তাদের দরকার আর কেবল ৬২ রান।
প্রথম ইনিংসে ১৬৬ রানে গুটিয়ে যাওয়া রাজশাহী দ্বিতীয় ইনিংসে কিছুটা লড়াই করে অল আউট হয় ২৫৯ রানে। প্রথম ইনিংসে ১৮৩ রানে এগিয়ে থাকায় চট্টগ্রামের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় তাই মাত্র ৭৭ রানের। তৃতীয় দিন শেষ করেছে তারা ২ উইকেটে ১৫ রান তুলে।
৩ উইকেটে ৭৯ রান নিয়ে দিন শুরু করা রাজশাহীর হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ফিফটি করেন জহুরুল ইসলামও। ১৪৫ বলে ৪টি চার ও ২ ছক্কায় তিনি করেন ৫৩ রান। ১৪৮ বলে ১০ চারে ৬৮ হৃদয়, প্রথম ইনিংসে তিনি ৬৮ রান করেন ৭৯ বলে। সাত ও আট নম্বরে নেমে যথাক্রমে ফরহাদ রেজা ৪০ ও সানজামুল ইসলাম করেন ৩৯ রান। দুই ইনিংসেই ৪টি করে ম্যাচে ১০৩ রানে ৮ উইকেট নেন অফ স্পিনার নাঈম।

ঢাকা বিভাগ-সিলেট বিভাগ, সিলেট
সিলেট : ৬৭ ও ২য় ইনিংস : ১৭৪। ঢাকা : ১৭৬ ও ২য় ইনিংস : (লক্ষ্য ৬৬) (আগের দিন ৪৮/৩) ২০.৫ ওভারে ৬৬/৩ (রকিবুল ১৫*, তাইবুর ৮*; ইবাদত ১/৮, আবু জায়েদ ১/১৬, রাহাতুল ১/১১)। ফল : ঢাকা বিভাগ ৭ উইকেটে জয়ী।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ