পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বোরকা কিংবা নিকাব পরে ছাত্রলীগের প্রোগ্রামে না যেতে নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগ নেত্রী মাসুমা ইয়াসমিন। একইসাথে ছাত্রলীগের যে কোন কর্মসূচির সময় ক্লাস থাকলেও সেটি বাদ দিয়ে প্রোগ্রামে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশন দিয়েছেন ওই নেত্রী। বোরকা পরে মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সামনে আসায় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের সভাপতি বেনজির হোসেন নিশি ধমক দিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেছেন একাধিক ছাত্রী।
জানা যায়, ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের গ্রুপে রাজনীতি করেন রোকেয়া হল ছাত্রলীগের ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক মাসুমা ইয়াসমিন। তিনি আগামীতে হল কমিটির শীর্ষ পদ প্রত্যাশী। এজন্য যে কোন কর্মসূচি থাকলে কিংবা ছাত্রলীগ সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয়ে আসলে হল থেকে ছাত্রীদের নিয়ে শোডাউন দেন। ছাত্রলীগ সভাপতির সামনে পৌঁছালে তার নির্দেশ সাথে থাকা প্রত্যেককে ছাত্রলীগ সভাপতিকে সালাম দিতে হবে। আর এসময় কোন ছাত্রী বোরকা কিংবা নেকাব পরতে পারবে না। এমনকি কোন কর্মসূচি (সভা-মিছিল) থাকলেও সেখানেও এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে।
রোকেয়া হলের একাধিক ছাত্রী জানান, মাসুমা ইয়াসমিন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের রাজনীতি করেন। তিনি রোকেয়া হল ছাত্রলীগের ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক। থাকেন হলের ৭মার্চ ভবনের ৬১৯ নং রুমে। গত শনিবার রাত দশটায় প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের নিজের রুমে ডাকেন মাসুমা। তিনি বলেন, তোমাদেরকে যেহেতু আমি হলে তুলেছি তাই আমার প্রতি তোমাদের কৃতজ্ঞতা থাকা দরকার। কৃতজ্ঞতার খাতিরে যেন আমরা উনাকে ছাড় দেই। সামনের দেড় মাস উনি যেখানে বলবেন সেখানে যেনো আমরা যাই।
সেখানে উপস্থিত এক ছাত্রী বলেন, আপু আমাদের বলেছে, জয় ভাই (ছাত্রলীগ সভাপতি) ক্যাম্পাসে আসলে আমাদের ক্লাস থাকলেও যেন আমরা কিছুক্ষণের জন্য সেখানে গিয়ে ভাইকে সালাম দিয়ে আসি। যারা যারা বোরকা পরে তারা এই দেড়মাস যেনো বোরকা-নিকাব না পরে। শুধু হিজাব পরে প্রোগ্রামে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এ ঘটনায় ক্ষোভ জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমি বোরকা-হিজাব না পরলেও আমার অন্য সহপাঠী যারা বোরকা-নিকাব পরে এটি তাদের জন্য বিব্রতকর। উনি এ ধরণের নির্দেশনা দিতে পারেন না। উনি কারো পোশাক পরার স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করতে পারেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা এখানে পড়ালেখা করতে এসেছি। সেখানে উনারা আমাদের জোর করে প্রোগ্রামে নিয়ে যাচ্ছেন। তার উপর আমাদের পোশাকে হস্তক্ষেপ করছেন। এটি প্রচণ্ড ঘৃণার কাজ।
তবে এ বিষয়ে ছাত্রলীগ নেত্রী মাসুমা ইয়াসমিন বলেন, ক্লাস না করে প্রোগ্রামে যোগ দেওয়ার বিষয়টা আমি কাউকে বলিনি। আর সম্পূর্ণ মুখ বন্ধ না করে মাস্ক পরতে বলেছি। মুখ বন্ধ থাকলে সালাম দিলে অনেক সময় শোনা যায়না। তাই মাস্ক পরতে বলেছি। মাস্ক পরলেও তো মুখ ঢাকা থাকে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রোকেয়া হল প্রভোস্ট প্রফেসর জিনাত হুদা বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই। আর এটি আমার বিষয়ও না। এটি ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমার এখানে কিছু করার নেই।
এদিকে বোরকা পরে মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টচার্যকে সালাম দিতে আসায় কর্মীদের ধমক দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ছাত্রলীগের সভাপতি বেনজির হোসেন নিশির বিরুদ্ধেও। বেনজির হোসেন নিশি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
জানা যায়, গত সোমবার মধুর ক্যান্টিনে বেনজির হোসেন নিশি তার অনুসারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে সালাম দিতে মধুর ক্যান্টিনে নিয়ে আসেন। এসময় এসব বর্ষের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী নিকাব পরে আসলে তাদেরকে ধমক দেন নিশি। সামনে নিকাব-বোরকা পরে আর প্রোগ্রামে না আসার নির্দেশও দেন তিনি। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে নিশি বলেন, এরকম কিছু হয়েছে বলে আমার জানা নেই। তবে আমার নাম ধরে হলে ছাত্রলীগে পদ প্রত্যাশী কোন নেত্রী জুনিয়রদের এটি বলতেও পারে। তিনি বলেন, আমাদের হলটি পিছনে হওয়ার কারণে ছাত্র শিবিরের মেয়েরা এখানে বেশি থাকতো, যারা হাত-মোজা, পা-মোজা এবং বোরকা পরে থাকে। এজন্য হয়ত হলে পদ প্রত্যাশী নেত্রীরা জুনিয়রদেরকে সাবধান করে তাদেরকে চোখ, কান, মুখ খোলা রাখতে বলেছে যেনো তাদের কেউ সন্দেহ না করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।