বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চিকিৎসক, নার্স এবং চিকিৎসা কর্মী সহ চিকিৎসা সহায়ক সরঞ্জামের সংকটের মধ্যেও দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ৯টি জেলার করোনা রোগী চিকিৎসায় বরিশাল শের এ বাংরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলা ছাড়াও মাদারীপুর, শরিয়তপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার বিপুল সংখ্যক করোনা রোগীও গত ১৮ মাসে এ হাসপাতালে চিকিৎসা গ্রহন করেছে। এমনকি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থান সংকুলনের অভাবে বিভিন্ন সময়ে বাগেরহাটের অনেক করোনা রোগী শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
গত বছর মার্চের মধ্যভাগ থেকে গত ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয়টি জেলার জেনারেল হাসপাতাল এবং ৪০টি উপজেলা হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যে ৫ হাজার ৯০৬ জন করোনা আক্রান্তকে ভর্তি করা হয়েছে, তার ২ হাজার ৩৪৮ জনই শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া দক্ষিণাঞ্চলের এসব হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আইসোলেশনে যে ১১ হাজার ৯৫২ জনকে ভর্তি করা হয়েছে, তার ৪ হাজার ৯৭২ জনই ভর্তি হয়েছেন শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ইতোমধ্যে এ হাসপাতালটির করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত ৭ হাজার ৩২০ জনের মধ্যে ৫ হাজার ৮৮১ জনই ছাড়পত্র নিয়ে ঘরে ফিরেছেন।
তবে এ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে এ পর্যন্ত ভর্তিকৃত ২ হাজার ৩৪৮ জনের মধ্যে ৪২৬ জন এবং আইসোলেশনে ভর্তিকৃত ৪ হাজার ৯৭২ জনের মধ্যে ৯৮৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগ ও হাসপাতাল কতৃপক্ষের মতে গত দেড় বছরে হাসপাতালটির করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে মৃত্যুবরনকারী ১ হাজার ৪১৪ জনের মধ্যে ৪২৬ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছিল। আইসোলেশন ওয়ার্ডে মৃত্যুবরনকারী ৯৮৮ জনের মধ্যে সোমবার সকাল পর্যন্ত ২৮ জনের নমুনা পরিক্ষার রিপোর্টের অপেক্ষায় ছিলেন হাসপাতাল কতৃপক্ষ।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত সরকারী এ চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করলেও চিকিৎসক ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে রোগী এবং তাদের স্বজনদের অভিযোগও রয়েছে। তবে এরপরেও গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে ১ হাজার বেডের এ হাসপাতালে প্রথমে ১২৫টি শয্যা নিয়ে করোনা ওয়ার্ড চালু করা হলেও পর্যাক্রমে তা ৩শর ওপরে উন্নীত হয়েছে। ইতোমধ্যে হাসপাতালটিতে ৩০টি আইসিইউ বেড চালু করা হয়েছে। এছাড়আও ১১টি ভেন্টিলেটর ও ৭৭টি হাই ফ্লো নেজাল ক্যাানোলা এবং ১টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর চালু রয়েছে হাসপাতালটিতে। সিলিন্ডারের মাধ্যমেও এ পর্যন্ত প্রায় নিরবিচ্ছিন্ন অক্সিজেন সরবারহ অব্যাহত ছিল।
ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমন পরিস্থিতির আশাব্যঞ্জক উন্নতি হওয়ায় হাসপাতালটিতেও রোগীর সংখ্যা যথেষ্ঠ হ্রাস পেয়েছে। সোমবার সকাল পর্যন্ত এ হাসপাতালটির করোনা ওয়ার্ডে কোভিড পজিটিভ নিয়ে মাত্র ৭ জন চিকিৎসাধীন এবং ১৯ জন আইসিইউ’তে পর্যবেক্ষনে ছিলেন। গত ২৪ ঘন্টায় শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে কোন নমুনা পরিক্ষায় হয়নি। দক্ষিণাঞ্চলে এখন করোনা শনাক্তের হার ১ভাগের নিচে। যা গত মধ্য জুলাইতে ছিল প্রায় ৭৪ ভাগ। এ হাসপাতাালটিতে ভর্তিকৃতদের মধ্যে এপর্যন্ত ২ হাজার ৭৩ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৯৩ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। অবশিষ্ট ১ হাজার ৮শ জনের দেহে করোনা নেগটিভ শনাক্ত হয়।
এদিকে করোনা সংক্রমন পরিস্থিতির আশাব্যঞ্জক উন্নতি হওয়ায় ইতোপূর্বে করোনা ডেডিকিটিড হাসপাতাল হিসেবে ঘোষিত বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে পুনরায় সব ধরনের রোগী ভর্তি শুরু হয়েছে। শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর স্থান সংকুলন না হওয়ায় পরিস্থিতি সামাল দিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় আগষ্টের শুরুতে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালটিতে ‘করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল’এ রূপান্তর করে অন্যসব রোগী ভর্তি বন্ধ করে দেয়। প্রায় একমাসে হাসপাতালটিতে ৩ শতাধীক কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয়েছিল।
এসব ব্যাপরে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সাইফুল ইসলাম জানান, অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও গত ১৮ মাস ধরে আমরা অন্যসব রোগীর মত করোনা সংক্রমিতদের যথাযথ চিকিৎসার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত এ হাসপাতালে সুস্থতার হার যথেষ্ঠ ভাল বলেও জানান তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।