Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

১০ উইকেটের বিশাল জয় ওমানের

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৭ অক্টোবর, ২০২১, ৬:৫৯ পিএম | আপডেট : ৭:১৩ পিএম, ১৭ অক্টোবর, ২০২১

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারলো না পাপুয়া নিউগিনি। মাসকাটের আল আমেরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে প্রথম রাউন্ডের প্রথম ম্যাচে পিএনজিকে রীতিমতো উড়িয়ে দিয়েছে ওমান।

আজ পিএনজিকে ১০ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে স্বাগতিক দেশটি। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ইতিহাসে ওমান তৃতীয় দল, যারা ১০ উইকেটে জিতলো। টস হেরে আগে ব্যাটিং করতে নামা পিএনজি ৯ উইকেটে ১২৯ রান তোলে । জবাবে ১৩.৪ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়েই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ওমান।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাটিং করতে নেমে দেখেশুনে খেলতে থাকেন দুই ওপেনার আকিব ইলিয়াস ও যতিন্দর সিং। তবে সময় যত গড়িয়েছে, তত মারকুটে মেজাজে ব্যাট চালাতে শুরু করেন তারা। এই দুই ব্যাটসম্যানের কাছেই হেরে যায় পিএনজি। দুজনই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন। আকিব ৪৩ বলে ৫টি চার ও একটি ছক্কায় ৫০ রানে অপরাজিত থাকেন। যতিন্দর ৪২ বলে ৭টি চার ও ৪টি ছক্কায় ৭৩ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন।

এর আগে ব্যাটিং করা পিএনজিকে সবচেয়ে বেশি ভুগিয়েছেন ওমান অধিনায়ক জিশান মাকসুদ। ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতা বাঁহাতি এই স্পিনার ৪ ওভারে মাত্র ২০ রান খরচায় ৪টি উইকেট নেন, যা টি-টোয়েন্টিতে ওমানের সেরা বোলিং। এ ছাড়া দুই পেসার বিলাল খান ও কলিমুল্লাহও দারুণ বোলিং করেন। দুজনেরই শিকার ২টি করে উইকেট।

টস জিতে পিএনজিকে ব্যাটিংয়ে পাঠান জিশান মাকসুদ। ব্যাটিংয়ে নেমে দুঃস্বপ্নের শুরু হয় পিএনজির। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলেই টনি উরাকে ফিরিয়ে দেন বিলাল খান। ওমানের বাঁহাতি এই পেসার কোনো রান খরচা না করেই প্রথম ওভার শেষ করেন।

দ্বিতীয় ওভারে আরও বিপদ বাড়ে পিএনজির। এই ওভারে আরেক ওপেনার লেগা সিয়াকার স্টাম্প উপড়ে নেন ওমানের ডানহাতি পেসার কলিমুল্লাহ। এই ওভারে তার খরচা ১ রান।

মাঝ দরিয়ায় পড়ে যাওয়া দলকে পথ দেখাতে শুরু করেন অধিনায়ক আসাদ ভালা ও চার্লস আমিনি। এই জুটিতে দারুণভাবে গুরে দাঁড়ায় পিএনজি। ৭৯ রান যোগ করেন ভালা-আমিনি। ৩৭ রান করা আমিনির বিদায় ভাঙে এই জুটি।

১৩ রান করা সেসে বাউকে নিয়ে আরেকটু পথ পাড়ি দেন ভালা। এ সময় পিএনজি অধিনায়ক তুলে নেন দেশ ও নিজের পক্ষে বিশ্বকাপের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। ৪৩ বলে ৪টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৫৬ রান করে বিদায় নেন তিনি।

প্রতিপক্ষ অধিনায়ক ফিরতেই বল হাতে জ্বলে ওঠেন ওমানের অধিনায়ক জিশান মাকসুদ। একাই পিএনজির ইনিংস ধসিয়ে দেন তিনি। ১৬তম ওভারে তিনটি উইকেট তুলে নেন তিনি। এরপর বাকি ব্যাটসম্যানরা আর কেউ দলের হয়ে রান করতে পারেননি।

ওমানের লক্ষ্য ১৩০

টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে দারুণ শুরু করে তারা। তবে প্রতিরোধ গড়েছে পাপুয়া নিউগিনি। শূন্য রানে ২ উইকেট হারানোর পর ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে দলটি। কিন্তু হঠাৎ করে ছন্দপতন। আসাদ ভালা ও চার্লস আমিনির প্রতিরোধ ভেঙে যাওয়ার পর জিশান মাকসুদের স্পিনে ১২৯ রানে পাপুয়া নিউগিনি থামে ৯ উইকেটে।

প্রথম আসরে তিন ম্যাচের একটি জেতা ওমান এবার আরো উচ্চাশা নিয়ে মাঠে নামছে। কারণ প্রথমবার ঘরের মাঠে বিশ্বকাপ খেলছে সহআয়োজক হওয়ার কারণে।

নারীদের ব্যান্ড দল ঢাক-ঢোল বাজিয়ে মাঠে ঢুকেছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে পর্দাও উঠল সপ্তম বিশ্বকাপের।

ওমান অধিনায়ক জিশান মাহমুদ বলেছেন, বিকালের গরমে শুকনো পিচে তিনি তার স্পিনারদের কাজে লাগাতে চান। স্বাগতিকদের দলে রয়েছেন শীর্ষ উইকেটশিকারি ও স্পিন অলরাউন্ডার জিশান মাকসুদ এবং ২৯ বছর বয়সী উইকেটকিপার নাসিম খুশি।

পাপুয়া নিউ গিনিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আসাদ ভালা। লেগ স্পিনার সিজে আমিনি ও অলরাউন্ডার নর্ম্যান ভানুয়া ছাপ রাখতে পারেন তাদের প্রথম বিশ্বকাপে।

প্রথম ও দ্বিতীয় ওভার মিলিয়ে পাঁচ বলের ব্যবধানে দুটি উইকেট হারায় পাপুয়া নিউগিনি। ডাক মারেন দুই ওপেনার টনি উরা ও লেগা সিয়াকা। প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে বিলাল নেন উইকেট। তারপর দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে কলিমউল্লাহ নেন অন্য উইকেট। রানের খাতা না খুলতেই ওমান হারায় ২ উইকেট, পরে অধিনায়ক আসাদ ভালা ও চার্লস আমিনি প্রতিরোধ গড়েছেন পঞ্চাশ ছাড়ানো জুটিতে। পাওয়ার প্লের প্রথম ৬ ওভারে ৪০ রান করে ২ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে।

দারুণ ছন্দে ছিলেন আসাদ ও আমিনি। ১০ ওভার যেতেই ভুল বোঝাবুঝিতে ভাঙে এই জুটি। ১২তম ওভারের তৃতীয় বলে নন স্ট্রাইকে থাকা আমিনি সিঙ্গেল নিতে গিয়ে আসাদের সংশয়ের কারণে ফিরে যান। ততক্ষণে বোলার মোহাম্মদ নাদিম রান আউট করেন তাকে। ২৬ বলে চারটি চার ও ১ ছয়ে ৩৭ রানে মাঠ ছাড়েন আমিনি। অধিনায়কের সঙ্গে তার জুটি ছিল ৮১ রানের।

৪০ বলে চারটি চার ও তিনটি ছয়ে হাফ সেঞ্চুরি করা আসাদ থামেন ৫৬ রান করে। কলিমউল্লাহর কাছে শেষ হয় তার ৪৩ বলে সাজানো ইনিংসের।

আর দাঁড়াতে পারেনি পাপুয়া নিউগিনি। ৮১ রানে ৩ উইকেট হারানো দলটি ৯ উইকেট হারায় ১১৮ রানে। মাকসুদ ১৬তম ওভারে তিন উইকেট নেন। পরের ওভারে এই স্পিনার নবম উইকেট তুলে নেন। ৪ ওভারে ২০ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়ে ওমানের সফল বোলার তিনি।

আমিনির বিদায়ে ওমানের স্বস্তি

শূন্য রানে দুই উইকেট হারানোর পর দাপটের সঙ্গেই ওমানের বোলারদের মোকাবেলা করছিলেন আমিনি ও ভালা। তারা দুজনে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৮১ রান। এরপর রান আউটে কাটা পড়েন চার্লস আমিনি। ফেরার আগে তিনি করেছিলেন ৩৭ রান। ভালা অপরাজিত আছেন ৪৪ রানে। নতুন ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে এসেছেন সেসে বাউ।

১২ ওভার শেষে পাপুয়া নিউগিনির সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৮৫ রান।

ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পাপুয়া নিউগিনি

দ্রুত দুই উইকেট পতণের পর আমিনি ও ভালার ব্যাটে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে পাপুয়া নিউগিনি। প্রথম তিন ওভারে যেখানে ২ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ ছিল মাত্র ১১ রান। সেখানে পাওয়ার প্লে শেষে দলটির সংগ্রহ ২ উইকেট হারিয়ে ৪০ রান।

আমিনি ১২ বলে ২৪ রানে ও ভালা ১৬ বলে ১৪ রানে অপরাজিত আছেন। টুর্নামেন্টের প্রথম ছক্কাটি আসে আমিনির ব্যাট থেকে। এছাড়াও তিনি মেরেছেন চারটি চার। অধিনায়ক ভালার ব্যাট থেকে এসেছে ২ টি বাউন্ডারি।

শূন্য রানে দুই উইকেট নেই পাপুয়া নিউগিনির

টসে জিতে ফিল্ডিং নিয়ে স্বপ্নের সূচনা পেল ওমান। প্রথম ওভারে বিল্লাল খানের বলে রানের খাতা খোলার আগেই ফিরে যান পাপুয়া নিউগিনির ওপেনার টনি উরা। দ্বিতীয় ওভারে কালিমুল্লাহও একই পথ ধরে ফিরিয়ে দেন লেগা সাইকাকে। ১.৩ ওভারের মাথায় স্কোরবোর্ডে কোন রান তোলার আগেই দুই উইকেট হারায় নিউগিনি।

দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে চার্লস আমিনির ব্যাটে স্কোরবোর্ডে প্রথম রানের দেখা পায় দলটি। শেষ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তাদের সংগ্রহ ৩ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে ১১ রান। আমিনি ৯ রানে ও অধিনায়ক আসাদ ভালা ১ রানে অপরাজিত আছেন।

বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচে টস জিতে ফিল্ডিংয়ে ওমান

অবশেষে সকল শঙ্কার অবসান ঘটিয়ে মাঠে গড়ালো আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। রোববার (১৭ অক্টোবর) আল আমিরাত ক্রিকেট গ্রাউন্ডে পাপুয়া নিউ গিনির বিপক্ষে ওমানের টস জয়ের মধ্যে দিয়ে শুরু হলো ক্রিকেটের এই সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের বিশ্ব আসর। টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা।

ওমান-নিউগিনির মধ্যকার এ ম্যাচ দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সপ্তম আসরের প্রাথমিক পর্বের খেলা শুরু হলো। আসরটি ভারতের মাটিতে হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে ওমান ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে পুরো বিশ্বকাপের আয়োজক হিসেবে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডই (বিসিসিআই) থাকছে।

সর্বশেষ ২০১৬ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর ২০১৮ সালে হওয়ার কথা ছিল। তবে ২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য ২০১৮ সালের আসরটি বাতিল করা হয়। আর সূচি অনুযায়ী ২০২০ সালে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে হওয়ার কথা থাকলেও করোনার স্থগিত হয়ে যায়। ফলে পাঁচ বছর পর ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সপ্তম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ।

এবারের আসরে মোট ১৬ দল অংশ নিচ্ছে। প্রাথমিক পর্বের দু’টি গ্রুপে রয়েছে আটটি দল। আর সুপার টুয়েলভে দু’গ্রুপে আছে আটটি দল।

প্রাথমিক পর্বে ‌‘এ’ গ্রুপে খেলছে- শ্রীলঙ্কা, আয়ারল্যান্ড, নামিবিয়া ও নেদারল্যান্ডস। বাংলাদেশ রয়েছে ‘বি’ গ্রুপে। সেখানে তাদের প্রতিপক্ষ ওমান, পাপুয়া নিউগিনি ও স্কটল্যান্ড।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: টি২০ কাপ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ