পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
৪৭ বছর আগে কুড়িতিবা শহরে বিশ্বের প্রথম বিআরটি নির্মাণ করে ব্রাজিল। ‘রেদে ইন্তেগ্রাদা ডি ট্রান্সপোর্তে’ নামের সেই বিআরটির কাজ শেষ করতে সময় লেগেছিল চার বছর। সহজে, স্বল্প ব্যয়ে ও দ্রুততম সময়ে নির্মাণ এবং বিপুল পরিমাণ মানুষের গণপরিবহন চাহিদা মেটাতে সক্ষম হওয়ায় বিশ্বজুড়ে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেতে শুরু করে ‘বিআরটি সিস্টেম’। ‘গ্লোবাল বিআরটি ডাটা’ নামের একটি ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, বর্তমানে বিশ্বের ১৭৯টি শহরে এক বা একাধিক বিআরটি ব্যবস্থা রয়েছে।
এদিকে পাকিস্তানও একাধিক শহরে বিআরটি গড়ে তুলেছে। এর মধ্যে দুই বছরের মধ্যে লাহোর মেট্রোবাস, দেড় বছরের মধ্যে ইসলামাবাদ-রাওয়ালপিন্ডি মেট্রোবাস নামের দুটি বিআরটি করিডোর নির্মাণ করে পাকিস্তান। অন্যদিকে এক বছরের মধ্যে গুয়ানঝু শহরে ২২ কিলোমিটারের বেশি দীর্ঘ বিআরটি করিডোর তৈরি করেছে চীন। মালয়েশিয়ার সুবাং জায়া শহরে সানওয়ে লাইন বিআরটি তৈরিতে সময় লেগেছে কম-বেশি দুই বছর। দুই বছরের মধ্যে হ্যানয় শহরে বিআরটি তৈরি করেছে ভিয়েতনাম।
একাধিক শহরে বিআরটি করিডোর গড়ে তুলেছে ভারত। দেশটির প্রথম বিআরটি তৈরি করা হয় পুনে শহরে। এ বিআরটি করিডোরের কাজ শুরু হয় ২০০৫ সালে। চালু হয় ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে। এখন পর্যন্ত ভারতের সেরা বিআরটি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে আহমেদাবাদের ‘জনমার্গ’। মোটামুটি দুই বছরের মধ্যে তৈরি করা হয় এ বিআরটি করিডোর।
সড়কের একটা অংশ আলাদা করে পরিচালনা করা হয় বিশেষ বাস সেবা। এ অংশটিতে অন্য কোনো গাড়ির প্রবেশাধিকার থাকে না। নির্মাণ পদ্ধতি সহজ হওয়ায় বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) করিডোর দ্রুত গড়ে তোলা যায়। খরচও হয় কম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একটি বিআরটি করিডোর গড়ে তুলতে নয় মাস থেকে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত সময় লাগে।
বিশ্বের বেশির ভাগ বিআরটি করিডোর তৈরি করতে এমন সময়ই লেগেছে। এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে যাচ্ছে ঢাকায় নির্মাণাধীন বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি। মূল কাজ শুরুর পাঁচ বছর পর এসে প্রকল্পটির অগ্রগতি ৬২ শতাংশ। এমন পরিপ্রেক্ষিতে নির্মাণকাজের ধীরগতিতে বাংলাদেশের বিআরটি করিডোরটি অনন্য নজির স্থাপন করতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০ দশমিক ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয় ২০১২ সালে। নকশা আর দরপত্রের কাজ শেষ করতেই চলে যায় পরের চার বছর। ২০১৭ সালে শুরু হয় পূর্ত কাজ। এখন পর্যন্ত প্রকল্পটির অগ্রগতি প্রায় ৬২ শতাংশ। দুই দফা সংশোধন করে বাস্তবায়নের মেয়াদ বাড়িয়ে নেয়া হয়েছে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত। এটি হিসাবে ধরলে বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি নির্মাণ করতে সময় লাগতে যাচ্ছে ১০ বছর। আর পূর্ত কাজ শুরুর পর থেকে হিসাবে ধরলে সময় লাগতে যাচ্ছে ছয় বছর। যদিও প্রকল্পটির যে গতি এগোচ্ছে, তাতে ২০২২ সালে শেষ করা নিয়েও শঙ্কা এখনও কাটেনি।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ও ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) এক্সটারনাল এক্সপার্ট পুলের সদস্য ড. মো. হাদিউজ্জামান বলেন, বিআরটি তৈরি করতে নয় মাস থেকে দুই বছরের বেশি সময়ের প্রয়োজন হয় না। তিনি বলেন, ব্রাজিলে বিশ্বের প্রথম বিআরটি তৈরি করতে সময় লেগেছিল চার বছর। সেই সময়ের চেয়ে বর্তমানে নির্মাণ প্রযুক্তি অনেক বেশি উন্নত। বিআরটির মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে কোনোভাবেই দুই বছরের বেশি সময় লাগার কথা না, এটা বিশ্বজুড়ে স্বীকৃত।
তাহলে বিমানবন্দর-গাজীপুর বিআরটি তৈরি করতে এত সময় লাগছে কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিআরটি সাধারণত করা হয় শহরের মধ্যে। কিন্তু আমরা করছি ব্যস্ততম জাতীয় মহাসড়কে। ব্যস্ত এ সড়কের ট্রাফিকের চাপ অবশ্যই নির্মাণকাজ বিঘ্নিত করছে। পাশাপাশি প্রকল্পটিতে ঠিকাদারের দক্ষ জনবল এবং আধুনিক নির্মাণ প্রযুক্তি ব্যবহারে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। ঘাটতি রয়েছে তাদের অর্থপ্রবাহেও। যে তিনটি সরকারি সংস্থা প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে, তাদের সঠিক সমন্বয় না থাকাটাও বড় সমস্যা। সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ও বিস্তারিত নকশা তৈরির কাজ করা হয়েছে দুর্বলভাবে। এসব কারণ বিআরটির বাস্তবায়নকে দীর্ঘায়িত করছে। ফলে নির্মাণ সময় এবং ব্যয় দুই দিক দিয়েই এ বিআরটি প্রকল্প ‘খুব সম্ভবত’ বিশ্বরেকর্ড গড়তে যাচ্ছে বলে মনে করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।