বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দেশের ২০টি সাধারণ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে সমন্বিত গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের এ ভর্তি পরীক্ষায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়(কুবি)কেন্দ্রে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ৭ হাজার ২৬ জন। গুচ্ছপদ্ধতিতে পরীক্ষা সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবি এ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয় স্বাতন্ত্র্যতা হারিয়েছে এবং ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে যে আমেজ তা নষ্ট হয়েছে।
এই শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছভুক্ত ২০টি সাধারণ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি (জিএসটি) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় প্রতি আসনে লড়ছেন ১০ জন শিক্ষার্থী। ভর্তি কমিটি সূত্রে জানা যায়, এবার বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য বিভাগসহ তিনটি ইউনিটে রয়েছে মোট ২২ হাজার ১৩টি আসন। এর বিপরীতে আবেদন করেছেন দুই লাখ ৩২ হাজার ৪৫৫ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ‘এ’ ইউনিটে এক লাখ ৩১ হাজার ৯০১ জন, ‘বি’ ইউনিটে ৬৭ হাজার ১১৭ জন এবং ‘সি’ ইউনিটে ৩৩ হাজার ৪৩৭ জন শিক্ষার্থী আবেদন করেছেন।
১৭ অক্টোবর (রোববার) বিজ্ঞান অনুষদের ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা দিয়ে শুরু হবে জিএসটির গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা। এরপর ২৪ অক্টোবর মানবিক বিভাগের ‘বি’ ইউনিটে এবং ১ নভেম্বর বাণিজ্য বিভাগের ‘সি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
তবে এ পদ্ধতির পরীক্ষা নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১০ জন শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিবছর ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে একটা উৎসবের আমেজ থাকতো। এর আগে প্রতিবছর ৬০-৭০ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হতো। সে তুলনায় এবার মাত্র ৭০০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। এছাড়াও গুচ্ছতে একসাথে অনেক বিশ্ববিদ্যালয় থাকা মেধাবী শিক্ষার্থী পাওয়ার সম্ভাবনাও কম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক বলেন, গুচ্ছ পদ্ধতির এ প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃত্ব কমেছে, সব কিছু কেন্দ্রীয় ভাবে নিয়ন্ত্রিত হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব বেশি কিছু করার নেই। অন্যবার বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি কুমিল্লা নগরীর প্রায় ২০ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেন্দ্র থাকলেও এবার শুধু বিশ্ববিদ্যালয়েই পরীক্ষা হবে।
এছাড়াও ভর্তি পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠনগুলোর তৎপরতা থাকে। এবার পরীক্ষার্থী কম থাকায় এবং দুরবর্তী অঞ্চল গুলোর পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কম হওয়ায় তাদের কার্যক্রমেও ধীরগতি দেখা দিয়েছে। এ বিষয়ে কক্সবাজার স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমডি মোস্তাফা বলেন, এবারের ভর্তি পরীক্ষায় দূরবর্তী অঞ্চল থেকে শিক্ষার্থী আসার সম্ভবনা কম। তাই আঞ্চলিক সংগঠনগুলো অন্যান্য বছরের মতো প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারেনি।
গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে বিশ^বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শামীমুল ইসলাম বলেন, পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের দুর্ভোগ লাগব করতে এখানে মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রত্যাক্ষ নির্দেশনা ছিল। একটি প্ল্যাটফর্মে কিভাবে পরীক্ষা নেওয়া যায়। বিভিন্ন সময় উদ্যোগ নেওয়া হলেও বাস্তবায়ন হয়নি। এবার যেহেতু করোনার প্রেক্ষাপটও ছিল সে বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা নিয়ে আমাদেরও নানা উদ্বেগ-উৎকন্ঠা আছে। তারপরও এখন পর্যন্ত প্রক্রিয়া যেভাবে এগিয়েছে ঠিক আছে বলে মনে হচ্ছে।
সব বিশ^বিদ্যালয় মেধাবী শিক্ষার্থী পাবে কিনা জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে আমরা দু’টি শিক্ষাবর্ষ পিছিয়ে পড়ছি। দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীরাও পড়াশুনার মধ্যে নেই। এখন যদি একটি অংশগ্রহণমূলক পরীক্ষা হয় এবং শিক্ষার্থীরা স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে তাহলে এখানে যারা নির্বাচিত হবেন তারা নিশ্চয় নিজেদের মেধা-যোগ্যতা দিয়ে নির্বাচিত হবে। সুতারাং অসুবিধা হবে বলে মনে হচ্ছে না।
বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এমরান কবির চৌধুরী বলেন, ‘এটি একটি সরকারী সিদ্ধান্ত। মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, ইউজিসির সিদ্ধান্তে এটা করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের কল্যাণে। এটা তো আমাদের একার কারো সিদ্ধান্ত না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।