Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শরৎ পেরিয়ে হেমন্তের প্রাক্কালেও দক্ষিণাঞ্চলে তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের ওপরে

বৃষ্টিপাতের ঘাটতি ফসল উৎপাদনে ঝুঁকি বৃদ্ধি করছে

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০২১, ১:৪৪ পিএম

শরতের দুঃসহ গরম হেমন্তের প্রাক্কালেও অব্যাহত থাকার মধ্যে শুক্রবার রাতে দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে মাঝারী থেকে ভারি বৃষ্টিপাতে জনজীবন সিক্ত হলেও এখনো বৃষ্টির ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। পঁচিশ কিলোমিটার বেগের ঝড়ো হাওয়ার সাথে দেড় ঘন্টায় প্রায় ১৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। এ সময়ে পটুয়াখালী ও গোপালগঞ্জে ৩৮ মিলিমিটার করে এবং কলাপাড়াতে ৪৭, ভোলাতে ২৮ ও মাদারীপুরেও ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু শনিবারও দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের ওপরে ছিল।

চলতি মাসে দক্ষিণাঞ্চলে স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রী সেলসিয়াস থাকার কথা। কিন্তু শুক্রবারে বরিশালে তাপমাত্রার পারদ ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠে যায়। যা ছিল স্বাভাবিকের প্রায় ছয় ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশী। পাশাপাশি বৃষ্টিপাতের পরিমাণও গত কয়েক মাসের মত চলতি মাসের প্রথম পনের দিনেও যথেষ্ট কম রয়েছে। তবে আবহাওয়া বিভাগের দীর্ঘ মেয়াদী বুলেটিনে অক্টোবর মাসে দক্ষিণাঞ্চল সহ সারা দেশে স্বাভাবিকের বেশী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে।
টানা দুঃসহ তাপ প্রবাহে দক্ষিণাঞ্চলের জনজীবন যথেষ্ট বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে। পুরো শরৎ জুড়ে তাপমাত্রার পারদ দিনের বেলা স্বাভাবিকের ওপরে থাকার পাশাপাশি হেমন্তের কার্তিকের প্রাক্কালেও পরিস্থিতির কোন পরিবর্তন লক্ষ্যণীয় নয়। বরং ৩০ আশি^ন বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল স্বাভাবিকের প্রায় পাঁচ ডিগ্রী সেলসিয়াস বেশী।

আবহাওয়া বিভাগের মতে জানুয়ারিতে শতভাগ এবং ফেব্রæয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বরিশাল অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল স্বাভাবিকের প্রায় ৯৯% কম। মে মাসে বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিকের ৫১.১% কম বৃষ্টিপাতের পরে জুলাই মাসেও তা ছিল ১৯.৭% কম। অথচ এ সময়ে সারা দেশে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল স্বাভাবিকের ১৮.৬% বেশী। এমনকি সদ্য বিদায়ী সেপ্টেম্বরেও বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে পাঁচ দশমিক ৯ ভাগ কম। আর চলতি মাসে একশ ছিয়াত্তর মিলিমিটারের স্থলে দক্ষিণাঞ্চলে ষাট থেকে একশ পঁচানব্বই মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দেয়া হলেও মাসের প্রথম পক্ষে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র পয়ষট্টি মিলিমিটার।

বছর জুড়ে বৃষ্টিপাতের ঘাটতির সাথে তাপমাত্রার আধিক্য স্বাভাবিক জনজীবনের পাশাপাশি ফসলের জন্য ঝুঁকি বৃদ্ধি করে চলেছে। বর্তমানে মাঠে থাকা দক্ষিণাঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমন উৎপাদনের জন্য বর্তমন বিরূপ আবহাওয়া অনুকূল নয়। তেমনি আসন্ন শীতকালীন রবি ফসলকেও ঝুঁকিতে ফেলতে পারে বলে মনে করছেন কৃষিবিদগণ। দক্ষিণাঞ্চলের ১১ জেলায় চলতি খরিপ দুই মৌসুমে প্রায় ৭ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্য অর্জিত হলেও বিরূপ আবহাওয়ায় প্রায় ১৯ লাখ টন চাল উৎপাদন লক্ষ্যে পৌঁছা নিয়ে শংকিত কৃষকগণ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আবহাওয়া

২৯ জানুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ