Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টাটা-ইন্দিরার চিঠি ভাইরাল!

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৪ এএম

দীর্ঘ ৪১ বছর পর ভাইরাল জেআরডি টাটা এবং ইন্দিরা গান্ধির এক চিঠি! এই চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড করেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। ‘আমি অত্যন্ত দুঃখিত যে, আপনি আর এয়ার ইন্ডিয়ার সঙ্গে যুক্ত নন’, চিঠিতে লিখেছেন ভারতের একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। ১৯৭৮ সালে হাতে লেখা চিঠিতে জেআরডি টাটাকে এমনই লিখেছিলেন প্রাক্তন ইন্দিরা গান্ধী। যিনি সেই সময় প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে ছিলেন না। ৪১ বছর পর ভাইরাল হয়েছে সেই চিঠি। আর তা ভাইরাল হতেই আলোড়ন ফেলেছে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়েই।
ঋণগ্রস্ত জাতীয় উড়ান সংস্থা এয়ার ইন্ডিয়ার ক্ষমতা নিজেদের হাতে ফিরে পেয়েছে টাটা সন্স। তার মাঝেই টুইটারে এই চিঠি সামনে এনেছেন কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ। ১৯৭৮ সালের ১৪ ফেব্রæয়ারিতে জেআরডি টাটাকে এয়ার ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে দিতে বলা হয়েছিল। তারপরেই সেই চিঠি লিখেছিলেন ভারতের একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী। কী লেখা রয়েছে সেই চিঠিতে?
চিঠিতে লেখা আছে, ‘আপনি (টাটা) শুধুমাত্র চেয়ারম্যান ছিলেন না, আপনি ছিলেন এয়ার ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা এবং লালন-পালনকারী। যিনি ব্যক্তিগত স্তরে গভীর উদ্বেগ বোধ করতেন। সাজসজ্জা থেকে এয়ার হোস্টেসদের শাড়ি-ক্ষুদ্রতম বিষয়ে আপনি নিখুঁতভাবে মনোযোগ দেওয়ার ফলে এয়ার ইন্ডিয়া আন্তর্জাতিক স্তরে উঠেছিল। এমনকি সেই তালিকার শীর্ষে নিয়ে গিয়েছিল।
১৯৩২ সালে এয়ার ইন্ডিয়া প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জেআরডি টাটা। সেই সময় উড়ান সংস্থার নাম ছিল টাটা এয়ারলাইন্স। ১৯৪৬ সালে সংস্থার নাম পাল্টে রাখা হয় এয়ার ইন্ডিয়া। তবে স্বাধীনতার পর সরকারের সঙ্গে টাটার সম্পর্কের দিক বদল হয়। ১৯৪৭ সালের অক্টোবরে এয়ার ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল চালুর পরামর্শ দিয়েছিল টাটা গ্রæপ। প্রস্তাব অনুযায়ী, সরকারের হাতে থাকত ৪৯ শতাংশ মালিকানা। অতিরিক্ত দু’শতাংশ শেয়ারও কেনার সুযোগ ছিল। টাটার দখলে থাকত ২৫ শতাংশ শেয়ার। বাকি শেয়ার থাকত অন্যান্য বেসরকারি সংস্থার হাতে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই সেই প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছিল সরকার। পাঁচ বছর পর এয়ার ইন্ডিয়ার জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। জাতীয়করণের পরও ২৫ বছর এয়ার ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান ছিলেন জেআরডি টাটা। ১৯৭৮ মোরারজি দেশাইয়ের সরকারে রোষ গিয়ে পরে তার ওপর। টাটাকে সরিয়ে দেওয়া হয় এয়ার ইন্ডিয়ার যাবতীয় দায়ভার থেকে।
তারপরই ইন্দিরা গান্ধী চিঠিতে বলেন, ‘আপনি এবং আপনার উড়ান সংস্থাকে নিয়ে গর্বিত আমরা। কেউ আপনার থেকে এ সন্তুষ্টি বা সরকারের কৃতজ্ঞতা ছিনিয়ে নিতে পারবে না।’ দু’জনের মধ্যে ‘ভুল বোঝাবুঝির’ বিষয়টির উল্লেখ করে চিঠিতে ইন্দিরা দাবি করেছিলেন, তাঁকে প্রবল ‘চাপের’ মধ্যে কাজ করতে হত। সেইসঙ্গে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, ‘অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের মধ্যে রেষারেষি’ ছিল। যে ইন্দিরা গান্ধীর সরকার ১৯৮০ সালের এপ্রিলে জাহাঙ্গির রতনজি দাদাভাই টাটাকে দুটি সংস্থার বোর্ডে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব দিলেও তা খারিজ করে দেন এই বিজনেস আইকন।
তবে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর চিঠির উত্তর দিয়েছিলেন টাটা। বলেছিলেন, ‘উড়ান সংস্থা গড়ে তোলার জন্য আমার ভ‚মিকার বিষয়ে আপনি যা উল্লেখ করেছেন, তাতে আমি অভিভ‚ত।’ সহকর্মী, কর্মী এবং সরকারকেও ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন জেআরডি টাটা।
এদিকে এই চিঠি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোডের পর তা দ্রæত ভাইরাল হয়। ইন্দিরা গান্ধীর লেখা জেআরডি টাটাকে এক চিঠি এই আগেও ভাইরাল হয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেই চিঠিতে শ্রীমতি গান্ধী জেআরডি টাটাকে সুগন্ধী উপহার দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। শ্রীমতি গান্ধীর সঙ্গে জেআরডি টাটার এক সুসম্পর্কের ইঙ্গিতও মিলেছে এ চিঠিতে। সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ