পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার পেছনে জলবায়ু পরিবর্তনের দায় রয়েছে, বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়ার পেছনেও দায়ী জলবায়ু পরিবর্তন। জনস্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক এই প্রভাব আগামী দিনগুলোতে আরও বাড়তে পারে। গতকাল এক ওয়েবিনারে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনে ফলে বাংলাদেশে প্রকৃতিতে যে ঋতু বৈচিত্র্য তা লোপ পাচ্ছে। এক ঋতুর সঙ্গে আরেক ঋতুর যে পার্থক্য তা মুছে যাচ্ছে। আর্দ্রতা কমে আসার পাশাপাশি তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের মাত্রা বাড়ছে। এতে শহর এলাকায় ডেঙ্গুর মতো বাহকনির্ভর রোগের প্রকোপ বাড়ছে। ভবিষ্যতে রাজধানী শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ আরও বাড়তে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে গণ তাপমাত্রা বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর এই কারণেই ধীরে ধীরে লোপ পাচ্ছে ঋতুভেদে আবহাওয়ার বৈচিত্র্য। তাই যখন শীত থাকার কথা তখন তাপমাত্রা তুলনামূলক বেশি থাকছে। আবার আগের তুলনায় এখন গ্রীষ্মকালের সময় বাড়ছে। তাতে বাড়ছে গরমও। এমনিভাবে দীর্ঘ হচ্ছে বর্ষাকাল। তাতে রোগ-বালাই বেশি হচ্ছে। আর এইসবই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে হচ্ছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ১৯৯০ সালের পর থেকে প্রতি দশকে সারা বিশ্বে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রকোপ দ্বিগুণ হচ্ছে। ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর বড় প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল। ওই বছর সারাদেশে যত মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিল, তার অর্ধেকই ঢাকায় হয়েছিল। আর ঢাকায় ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার ছিল সারাদেশের ৭৭ শতাংশ। কারণ ২০১৯ সালে ঢাকায় প্রচুর বৃষ্টি হয়েছিল। গত ৪৫ বছরে এমন বৃষ্টি আর হয়নি। পরেও অনেক বৃষ্টি হয়েছিল। ফলে অনুক‚ল তাপমাত্রা আর আর্দ্রতা ডেঙ্গুর ব্যাপক বিস্তারে ভূমিকা রেখেছিল।
আবহাওয়ার এই বদলের কারণে বর্ষাকালে শহরগুলোতে যেমন বাহকনির্ভর রোগের প্রকোপ বাড়ছে তেমনি শুকনো মৌসুমে বাড়ছে শ্বাসতন্ত্রের রোগ, যাতে মূল ভূমিকা রাখছে বায়ুদূষণ। এ ছাড়া বিশ্বব্যাংকের এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের ১৬ শতাংশ মানুষ বিষণ্ণতায় আক্রান্ত। আর ৬ শতাংশের মধ্যে উদ্বেগ দেখা গেছে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, বাংলাদেশ সবচেয়ে দুর্বল দেশের মধ্যে থাকা সত্তে¡ও উল্লেখযোগ্যভাবে জলবায়ু পরিবর্তন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে। দেশটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে একটি স্থায়িত্ব তৈরি করেছে এবং কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির জন্য সহায়ক বলে বিবেচিত হচ্ছে। তিনি বলেন, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের একটি সুস্পষ্ট প্রভাব উঠে এসেছে এ প্রতিবেদনে। এ জন্য বাংলাদেশের শক্তিশালী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি। যা উদীয়মান জলবায়ু সংবেদনশীল রোগের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় সহায়তা করতে পারে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনের সিনিয়র অপারেশন অফিসার এবং সহ-লেখক ইফফাত মাহমুদ বলেন, শক্তিশালী তথ্য সংগ্রহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ জলবায়ু সংবেদনশীল রোগের বিবর্তনকে আরও ভালোভাবে ট্র্যাক করতে পারে। বিশেষ করে স্থানীয় পর্যায়ে সঠিক আবহাওয়ার তথ্য লিপিবদ্ধ করে এবং এটিকে স্বাস্থ্যের তথ্যের সঙ্গে যুক্ত করে সম্ভাব্য রোগের প্রাদুর্ভাবের পূর্বাভাস দেওয়া জরুরি। তাহলে জলবায়ুভিত্তিক ডেঙ্গুর প্রাথমিক সতর্কীকরণ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
অনুষ্ঠানে সাংসদ সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা। নীতিনির্ধারণের ক্ষেত্রে এ গবেষণা তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। আলোচনায় অংশ নিয়ে পরিবেশবিদ সেলিমুল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে যেসব গবেষণা হয়, তাতে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর গবেষকদের ভূমিকা কম। এ ধারায় পরিবর্তন আনতে হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।