Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চলচ্চিত্রে এখন দেশাত্মবোধক গান হয় না আশিক বন্ধু

প্রকাশের সময় : ১১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চলচ্চিত্রে এখন দেশাত্মবোধক গান করা হয় না বললেই চলে। চলচ্চিত্রে ডিজিটালের ছোঁয়া লাগলেও নেই মা, মাটি দেশের কোনো গান। বিগত বছরগুলোর চলচ্চিত্র পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, প্রায় কোনো সিনেমায়ই দেশাত্মবোধক গান সংযোজন করা হয়নি। কেবল প্রেম-রোমান্স আর কমেডি ভিত্তিক গানই করা হয়েছে। এতে নতুন প্রজন্মের দর্শক দেশের গান কি তা যেন ভুলতে বসেছে। অথচ একটা সময় আমাদের চলচ্চিত্রে দেশাত্মবোধক গান দেখে দর্শক দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হতো। গানগুলো তাদের মুখে মুখে ফিরত। শিহরণ জাগাত। এ সময়ের সিনেমার গল্পেও দেশপ্রেমের ছোঁয়া খুব কম থাকে। দেশের প্রতি মমত্ববোধ ও দেশপ্রেম নিয়ে লেখা গল্পের সিনেমা হয় না। কেবলই প্রেম-পিরিতি আর দ্ব›দ্ব-সংঘাতকে প্রাধান্য দেয়া হয়। গান সিনেমার অন্যতম একটি উপাদান এবং তা দর্শককে আন্দোলিত করে। তবে দেশপ্রেমের গান যেভাবে হৃদয়ে দাগ কাটে, অন্য কোনো গান ভালো লাগলেও তা হৃদয়ে স্থায়ী হয় না। কেন দেশাত্মবোধ গান এ সময়ের সিনেমায় দেখা যায় না এ ব্যাপারে প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী সৈয়দ আব্দল হাদী বলেন, ‘এই সময়টাতে দেশপ্রেমের সংকট প্রকট আকার ধারণ করছে। মানুষ অনেক বাণিজ্যিক হয়ে যাচ্ছে। সমাজের নানা জটিলতায় মানুষ ব্যস্ত, তবে দেশের প্রতি যে মমতা প্রকাশ করে দায়িত্ব পালন করাও একটি কাজ তা ভুলতে বসেছে। চলচ্চিত্র বড় মাধ্যম। এখান থেকে মানুষ দেশপ্রেম শিখতে পারে, তাই চলচ্চিত্র দেশের গল্প বা দেশাত্মবোধক গান রাখা প্রয়োজন। আমাদের পরিচালক, প্রযোজকরা এখনও চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন। কিন্তু দেশের গানকে কেন অবহেলা করছেন, বুঝতে পারি না। বছরে অন্তত কিছুসংখ্যক দেশের গান হলেও তো তারা চলচ্চিত্রে সংযোজন করতে পারেন। আরেক প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী খুরশিদ আলম বলেন, ‘অতীত ইতিহাস ভুলে যাওয়া আমাদের অনেকটা স্বভাবে পরিণত হয়েছে। তাই দেশের গানেরও অভাব দেখা দিয়েছে। অথচ একসময়ের কালজয়ী দেশাত্মবোধক গানগুলো এখনো মানুষের মনে গেথে আছে এবং তা থাকবেই। তবে নতুন নতুন দেশের গান হোক, দেশের গল্প নিয়ে আরো অনেক চলচ্চিত্র নির্মাণ হোকÑ এটাই আমাদের চাওয়া। এই প্রজন্মের শিল্পীরা দেশের গানগুলো আরো বেশি প্রচার ও প্রসার করে তুলতে পারে। নানা প্রচার মাধ্যম, ফেসবুক, ইউটিউবে আরো বেশি আয়োজনে দেশের গান, মুক্তিযুদ্ধের সিনেমাগুলোর প্রচার বাড়াতে হবে।’ সঙ্গীতের সুরে বিমোহিত হন যে কেউ। একটি গান, আর সুরের মাঝে মগ্ন হয়ে মানুষ অনুপ্রেরণা খুঁজে পান। এমন ইতিহাস আমাদের মুক্তিযুদ্ধে রয়েছে। আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে সঙ্গীতের সুরে জেগেছিল বাংলার মানুষ। দেশের জন্য লড়াই করার সাহস নিয়েছেন গানে গানে। মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি, সালাম সালাম হাজার সালাম, একাত্তরের মা জননী, যে মাটির বুকে ঘুমিয়ে আছেসহ অসংখ্য কালজয়ী দেশের গান মুক্তিযুদ্ধ এবং দেশাত্মবোধের অনুপ্রেরণা হয়ে আছে। দীর্ঘ সময় পেরিয়েও এসব কালজয়ী গান এখনো আমরা মুগ্ধ হয়ে শুনি। তবে হতাশার বিষয় হলো, বর্তমানের চলচ্চিত্র, নাটকে, বা অ্যলবামে দেশের গানের বড় আকাল চলছে। এটা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। আমাদের চলচ্চিত্র নির্মাতা, সঙ্গীতশিল্পী প্রত্যেকেরই উচিত দেশাত্মবোধক গানের প্রতি জোর দেয়া।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চলচ্চিত্রে এখন দেশাত্মবোধক গান হয় না আশিক বন্ধু
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ