পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
পশ্চিমবঙ্গের মোট তিনটি আসনে বৃহস্পতিবার উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। রোববার ছিল ফলাফল ঘোষণার তারিখ। এদিন ভোট গণণা শেষে দেখা যায়, ভবানীপুরে বিপুল ভোটে জয়ী হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাকি দুই আসন মুর্শিদাবাদ জেলার জঙ্গিপুর এবং শমসেরগঞ্জেও বিপুল ব্যবধানে জিতেছে তৃণমূল। এই দুই আসনেই তৃণমূলের প্রার্থী ছিলেন দুই মুসলিম।
এক ভোট, অনেক রেকর্ড। এক দিকে যেমন মমতা নিজের জয়ের রেকর্ড ভেঙেছেন, তেমনই এই কেন্দ্রের সব ওয়ার্ডেই তৃণমূল জিতেছে। আর এর জন্য ভবানীপুরের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতাও স্বীকার করেছেন তিনি। মমতা জিতবেন এটা নিশ্চিত ছিলই। কিন্তু কত ব্যবধানে জিতবেন তা নিয়ে জল্পনা ছিল তুঙ্গে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গোটা ভারতের নজর ছিল ভবানীপুর কেন্দ্রের দিকে। গণনার শুরু থেকেই এগিয়ে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গণনা যত এগিয়েছে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের থেকে ভোটের ব্যবধান তত বেড়েছে। দলের অনেকেই দাবি করেছিলেন ৫০-৮০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জিতবেন মমতা। বিপুল ভোটে জয়ী হলেন তিনি। ভবানীপুরের মানুষ তাকে ৫৮ হাজার ৮৩৫ ভোটে জেতালেন। সেই সঙ্গে ভবানীপুরে জয়ের হ্যাটট্রিক করলেন মমতা।
জয়ের পরে মমতা বলেন, ‘সারা বাংলা খুব আঘাত পেয়েছিল যখন সব ভোটে জিতেও একটায় জিততে পারিনি। সেটা নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। সেটা নিয়ে এখন কিছু বলছি না। অনেক চক্রান্ত চলেছিল। সব চক্রান্ত জব্দ করে দিয়েছে বাংলার মানুষ, ভবানীপুরের মানুষ। ভবানীপুরের মানুষের কাছে আমি চিরঋণী।’ তিনি বলেন, ‘কোন ওয়ার্ডে আমরা হারিনি। এই প্রথম এটা একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। ২০১৬-তে যখন লড়েছি তখন একটা দুটো ওয়ার্ডে ভোট কম পেয়েছিলাম। কিন্তু এ বার সব ওয়ার্ডে জিতেছে দল। জায়গাটা ছোট্ট, কিন্তু তার বৃত্তটা অনেক বড়। আজ মন ভরে গিয়েছে, ভবানীপুরের মানুষ দেখিয়ে দিল।’
মমতা জিতবেন এটা নিশ্চিত ছিলই। কিন্তু কত ব্যবধানে তিনি জিতবেন সে দিকেই নজর ছিল সব রাজনৈতিক দলগুলির। তাই বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই গোটা দেশের নজর ছিল ভবানীপুর কেন্দ্রের দিকে। গণনার শুরু থেকেই এগিয়ে ছিলেন মমতা। গণনা যত এগিয়েছে বিজেপি প্রার্থী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়ালের থেকে তার ভোটের ব্যবধান তত বেড়েছে। ২১ রাউন্ড শেষে বিশাল ভোটে জয় পেলেন তৃণমূল নেত্রী। তার প্রাপ্ত ভোট ৮৫ হাজার ২৬৩। প্রাপ্ত ভোটের হার ৭১ দশমিক ৯১ শতাংশ। সেখানে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থী বিজেপি-র প্রিয়ঙ্কা পেয়েছেন ২৬ হাজার ৪২৮ ভোট। তার প্রাপ্ত ভোটের হার ২২ দশমিক ২৯ শতাংশ। এর আগে বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর কেন্দ্রে ৫৭ দশমিক ৭১ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন তৃণমূল নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। সেখানে বিজেপি নেতা রুদ্রনীল ঘোষ পেয়েছিলেন ৩৫ দশমিক ১৬ শতাংশ ভোট।
অন্য দুই আসনে তৃণমূল দুইজন প্রার্থীই হচ্ছেন মুসলমান। জঙ্গিপুর কেন্দ্র থেকে রাজ্যের সাবেক মন্ত্রী জাকির হোসেন জিতেছেন ৯২ হাজার ৩৬৫ ভোটে। অর্থাৎ, তিনি মমতার থেকেও বেশি ব্যবধানে জয় পেয়েছেন। শমসেরগঞ্জ থেকে তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল ইসলাম জিতেছেন ২৬ হাজার ১১১ ভোটে। দুই প্রার্থীই এই নিয়ে দ্বিতীয় বার জিতলেন ওই আসন দু’টিতে। সব মিলিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলার মোট ২২টি বিধানসভা আসনের মধ্যে এখন ২০টি আসনই তৃণমূলের দখলে।
রাজ্যে বিধানসভা ভোটের আগে শমসেরগঞ্জের কংগ্রেস প্রার্থী প্রয়াত হন। এর ফলে ওই কেন্দ্রে সেই সময় ভোট হয়নি। জঙ্গিপুর কেন্দ্রেও বাম প্রার্থীর মৃত্যুর ফলে ভোট স্থগিত হয়ে যায়। কংগ্রেসের হাত ঘুরে এক সময় আরএসপি-র দখলে গিয়েছিল জঙ্গিপুর। তবে ২০১৬ সালে প্রথম ওই কেন্দ্র জিতে নেন জাকির। এ বারও তার ব্যতিক্রম হল না। বরং আগের বার ২০ হাজারের সামান্য বেশি ব্যবধান এ বার বেড়েছে সাড়ে চার গুণ। জাকির বিজেপি প্রার্থী সুজিত দাসের থেকে ৯২ হাজার ৩৬৫টি ভোট বেশি পেয়েছেন। তিনি পেয়েছেন মোট ১ লাখ ৩৫ হাজার ৯৮৫টি ভোট। বিজেপি প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ৪৩ হাজার ৬২০। এ ছাড়া আরএসপি প্রার্থী জানে আলম মিয়ার প্রাপ্ত ভোট আট হাজার ৯৬৭। বিপুল জয়ে উচ্ছ¡সিত জাকির বলছেন, ‘এই রায় জনগণ দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের ধারায় মানুষ বিশ্বাস রেখেছেন। বিজেপি যে মিথ্যা বলে এটা তার প্রমাণ। আমরা সকলে মিলে চেষ্টা করেছি। সেই চেষ্টারই ফল এটা।’
শমসেরগঞ্জ আসনটি দ্বিতীয় বারের জন্য জিতেছেন তৃণমূল প্রার্থী আমিরুল। তার আগে ওই আসনটি ছিল বামেদের দখলে। ২০১৬ সালের থেকে তার জয়ের ব্যবধান বেড়েছে অনেকটা। এ বার তিনি জিতেছেন ২৬ হাজার ১১১ ভোটে। নিকটতম প্রতিদ্ব›দ্বী কংগ্রেসের জাহিদুর রহমান পেয়েছেন ৭০ হাজার ৯টি ভোট। এই কেন্দ্রে তৃতীয় স্থানে বিজেপি প্রার্থী মিলন ঘোষ। তিনি পেয়েছেন ১০ হাজার ৭৭৭টি ভোট। ওই কেন্দ্রেই সিপিএম প্রার্থী মহম্মদ মোদাসসর হোসেন পেয়েছেন ৬ হাজার ১৪৫টি ভোট। আমিরুল বলছেন, ‘আমরা জিতব বলেছিলাম। মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।’ এদিকে, জিতেই চার উপনির্বাচনের প্রার্থী ঘোষণা করেন মমতা। খড়দহে উপনির্বাচন প্রার্থী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। শান্তিপুরে ব্রজকিশোর গোস্বামী। দিনহাটায় উদয়ন গুহ। গোসাবায় বাপ্পাদিত্য নস্কর এবং সুব্রত মÐলের মধ্যে যে কোনও একজন প্রার্থী হবে বলে জানালেন মমতা।
মমতার জয়ের দিনে বিজেপি’র রাজ্য নেতারা কেউই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হননি। দলের পক্ষে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন সাধারণত সংবাদমাধ্যম থেকে দূরে থাকা রাজ্য সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যমের জন্য ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আর ভবানীপুরের প্রার্থী যাবতীয় প্রতিক্রিয়া জানালেন ফেসবুক, টুইটারে। ভোট প্রচারে বড় ভ‚মিকা নিলেও ফল ঘোষণার দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত সংবাদমাধ্যমের সামনে আসেননি সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ বা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অথচ, প্রায় প্রতিদিনই কোনও না কোনও কারণে সাংবাদিক সম্মেলন করেন তারা।
ভবানীপুর জয়ের পর মমতাকে শুভেচ্ছা বার্তা দিয়ে নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত বলেন, ‘জনগণের রায় বরাবর মাথা পেতে নিয়েছে বিজেপি। তবে এই নির্বাচনে জনতার রায় কতটা প্রতিভাত হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছেই। মাত্র ৫৭ শতাংশ মানুষ ভোট দিতে এসেছিলেন। একটি বিরাট অংশের মানুষ ভোট দিতে আসতে পারেননি বা আসেননি। ভোটের আগে ভবানীপুর থেকে বিজেপি-কে ধুয়ে মুছে সাফ করে দেয়ার প্রতিশ্রæতি দিয়েছিল তৃণমূল। সেটা ওরা পারেনি। এত সংখ্যক মানুষের সমর্থন পেয়ে আমরা আপ্লুত।’ সূত্র : এবিপি, হিন্দুস্থান টাইমস, টিওআই, বিবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।