Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আল্লাহর রহমত প্রাপ্তরাই সফলকাম

এ. কে. এম .ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০০ এএম

যদি কেউ এ কথাটি সঠিক বলে মনে করে যে, দোজখের আগুন হয়তো একদিন ঠাণ্ডা হয়ে যাবে, তাহলে কি মুশরিক ও কাফিররা নিজেদের গোনাহসমূহ হতে পাক-সাফ হয়ে দয়া ও করুণার অধিকারী হয়ে যাবে? এর উত্তর হচ্ছে এই যে, কোরআনুল কারিমে সুস্পষ্টভাবে বিশ্লেষণ রয়েছে যে, শিরক ও কুফরের গোনাহ ক্ষমা করা হবে না। অর্থাৎ এর পরকালীন শাস্তি অনিবার্য ও অপরিহার্য। আর একথাও মনে রাখতে হবে যে, শিরক ও কুফরের শাস্তি হবে চিরকালের জন্য। মোট কথা, যতক্ষণ পর্যন্ত দোজখ কায়েম থাকবে তারা এই আজাব থেকে নিস্তার লাভ করবে না।

কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছায় এমন দিন যদি আসে যখন দোজখের আজাবের মেয়াদকাল শেষ হয়ে যাবে, তাহলে সে সময় সে অপরাধীরা আজাব হতে মুক্তি লাভ করাও আশ্চর্যকর নয়? এ প্রশ্নের জবাবও আল কোরআনে এভাবে দেয়া হয়েছে, আল্লাহ বলবেন, ‘দোজখের আগুনই হচ্ছে তোমাদের ঠিকানা, সেখানে তোমরা চিরকাল অবস্থান করবে, কিন্তু আল্লাহ পাক যা ইচ্ছা করেন, নিশ্চয় তোমার প্রতিপালক প্রজ্ঞাশীল ও বিজ্ঞানময়।’ (সূরা আল আনয়াম : আয়াত-১২৮)

এই আয়াতের শেষ অংশটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। এতে বলা হয়েছে যে, ‘তোমার প্রতিপালক প্রজ্ঞাশীল ও বিজ্ঞানময়।’ এখানে নির্দিষ্টভাবে ‘রব’ শব্দটির ব্যবহারে বুঝা যায় যে, ‘আল্লাহর শানে রাবুবিয়াত অর্থাৎ প্রতিপালনের মর্যাদাসুলভ ইচ্ছা যদি কার্যকরী হয় এবং তার সীমাহীন জ্ঞান-বিজ্ঞান যদি ইচ্ছা করে, তাহলে দোজখের সমাপ্তির পর হয়তো তারা রেহাই পেতে পারে। কিন্তু এ ক্ষেত্রেও সন্দেহ থেকে যায় যে, তারা এরপর জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে কি না? কেননা হজরত ঈসা আ.-এর জবাবে কোরআনুল কারিমে আল্লাহপাক এই ঘোষণা জারি করেছেন, ‘অবশ্যই যে আল্লাহর সাথে অংশী স্থাপন করবে, তার জন্য আল্লাহপাক জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন এবং তার ঠিকানা হচ্ছে দোজখ।’ (সূরা মায়েদাহ : আয়াত ৭২)।

অপর এক আয়াতে ঘোষণা করা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই যারা আমার আয়াত বা নিদর্শনাবলিকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে এবং তা মেনে নিতে অহঙ্কার করেছে, তাদের জন্য আকাশসমূহের দরজা উন্মুক্ত করা হবে না এবং তারা জান্নাতেও প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না সুঁইয়ের ছিদ্রপথে উট প্রবেশ করতে পারে।’ (সূরা আ’রাফ : আয়াত ৪০)।

মোটের ওপর, আল্লাহর ঘোষিত শাস্তির বিধানের উদ্দেশ্য হচ্ছে এই যে, যদি দোজখের শাস্তির সীমা শেষও হয়ে যায়, তবুও জান্নাতের সীমারেখার মাঝে তাদের পদচারণা সম্ভব হবে না। তবে আল্লাহপাকের দয়া ও মায়ার পরিমণ্ডল খুবই বিস্তৃত। যেমন তিনি স্বয়ং দোজখিদের সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন, ‘তারা চিরকাল দোজখে অবস্থান করবে, যতদিন আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী বিদ্যমান থাকবে, যদি তোমার রব অন্যরূপ ইচ্ছা করেন। অবশ্যই তোমার প্রতিপালক যা চান, তা-ই করেন।’ (সূরা হুদ : আয়াত ১০৬-১০৭)

তার এই রহমত ও করুণার পরিমণ্ডলকে কে কমাতে পারে? কেননা তিনি স্বয়ং রহমতের বিস্তৃতি সম্পর্কে ঘোষণা করেছেন, ‘আমার রহমত প্রতিটি বস্তুকে পরিবেষ্টন করে রেখেছে।’ (সূরা আ’রাফ : আয়াত ১৫৬)। এই সাধারণ রহমতের বিস্তৃতি থেকে আসমান ও জমিনের কোনো অংশ খালি আছে কি? তদুপরি রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর প্রতি মিথ্যারোপকারীদের সম্পর্কে আল্লাহপাক ঘোষণা করেছেন, ‘সুতরাং যদি তারা তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করতে চায়, তাহলে বলে দাও যে, তোমাদের প্রতিপালক সুবিস্তৃত রহমতের অধিকারী এবং তার আজাবকে গোনাহগারদের ওপর হতে ফেরানো যাবে না।’ (সূরা আল আনআম : আয়াত ১৪৮)।



 

Show all comments
  • রফিকুল ইসলাম ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৫ এএম says : 0
    আল্লাহ পাক মানুষকে দুর্বল করে সৃষ্টি করেছেন, তাই মানুষ মাত্রই ভুল বা পাপ হতে পারে কিন্তু একজন প্রকৃত আল্লাহর বান্দা সে একই ভুল বার বার করে না।
    Total Reply(0) Reply
  • রুবি আক্তার ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৫ এএম says : 0
    বর্তমান বিশ্বময় মহামারি চলছে। এরপরও আমরা প্রতিনিয়ত নানান পাপ কর্মে লিপ্ত। বর্তমান উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আমাদের উচিত আল্লাহর কাছে তাওবা করা।
    Total Reply(0) Reply
  • কামরুল ইসলাম ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৬ এএম says : 0
    আমরা যদি আল্লাহর কাছে আমাদের পাপের জন্য ক্ষমা চাই এবং তাওবাহ করি তাহলে আল্লাহ তাআলা আমাদের ক্ষমা করতে পারেন। আল্লাহ চান যে, তার বান্দারা যেন তার কাছে ক্ষমা চায়।
    Total Reply(0) Reply
  • তারেক আজিজ ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৬ এএম says : 0
    হতাশা ও নৈরাশ্যকে দূরে সরিয়ে আল্লাহ পাক আশার বাণী শুনিয়েছেন। তাই আমরা যারা বিভিন্ন ধরণের পাপে লিপ্ত, আমরা যদি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই তাহলে তিনি আমাদের ক্ষমা করবেন।
    Total Reply(0) Reply
  • তোফাজ্জল হোসেন ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৪:০৭ এএম says : 0
    মুমিন ব্যক্তির অন্তরে অবশ্যই আল্লাহর ভয় ও তাঁর রহমতের আশা রাখতে হবে। পরকালের নাজাতের জন্য ইবাদত-বন্দেগির পাশাপাশি এটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলাম

৩ মার্চ, ২০২৩
২ মার্চ, ২০২৩
১ মার্চ, ২০২৩
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন