বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
দক্ষিণাঞ্চলে সেপ্টেম্বর মাসে করোনা পরিস্থিতির অবিশ্বাস্য ও আশাব্যঞ্জক উন্নতি সাধারণ মানুষ থেকে স্বাস্থ্য বিভাগ সহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাঝেও নতুন আশার আলো সৃষ্টি করেছে। গত জুলাই-আগষ্ট মাসে অত্যন্ত নাজুক ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমণের সাথে মৃত্যুর মিছিলও ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছিল। এরইমধ্যে সেপ্টেম্বর মাসের শুরু থেকে পরিস্থিতির ইতিবাচক পরিবর্তন হতে শুরু করে। দক্ষিণাঞ্চলে এ পর্যন্ত সর্বমোট ৪৪ হাজার ৯৮১ জন আক্রান্তের মধ্যে জুলাই ও আগষ্ট মাসেই সংখ্যাটা ছিল ২১ হাজার ৪৩১। আর এ অঞ্চলে মৃত ৬৭৭ জনের মধ্যে উল্লেখিত দুমাসেই মারা গেছেন প্রায় ৩ শ জন। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসে এসে পরিস্থতির আশাব্যঞ্জক উন্নতি ঘটেছে।
সারাদেশে ইতোমধ্যে বরিশাল বিভাগের করোনা পরিস্থিতি একটি মডেল হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে। এমনকি স্বাস্থ্য সচিবের উপস্থিতিতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর দক্ষিণাঞ্চলে করোনা পরিস্থিতির আশাব্যঞ্জক উন্নতি নিয়ে ‘বরিশাল মডেল’ নামে একটি বিশেষ অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়।
সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমনে মাত্র ২ হাজার ৯০ জন আক্রান্তের মধ্যে ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ২৩ জনের মধ্যে ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ২২ জনের মৃত্যু হলেও মাসের দ্বিতীয় পক্ষে মারা গেছেন মাত্র ১জন। অথচ আগষ্ট মাসে ৯ হাজার ৪৪৬ জন আক্রান্তের মধ্যে ১৬৭ জন ও জুলাই মাসে ১১ হাজার ৯৮৫ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ১৩২ জন। আর জুন মাসে আক্রান্ত ২ হাজার ৩৮০ জনের মধ্যে মৃত্যু হয়েছিল ২৫ জনের। এ নিরিখে চলতি বছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে জুলাই মাসে। যা আগষ্ট হয়ে সেপ্টেম্বরের শুরু পর্যন্ত দাপিয়ে বেড়িয়েছে পুরো দক্ষিণাঞ্চলে।
এরমধ্যে বিভাগের মাত্র ৬% জনসংখ্যার বরিশাল মহানগরীতে পরিস্থিতিটা ছিল আরো ঝুকিপূর্ণ। দক্ষিণাঞ্চলে সর্বমোট শনাক্ত প্রায় ৪৫ হাজারের মধ্যে শুক্রবার পর্যন্ত এনগরীতেই আক্রান্তের সংখ্যা ছিল প্রায় সাড়ে ১০ হাজার। যা মোট আক্রান্তের প্রায় ২৪% এবং বরিশাল জেলার প্রায় ৬০%। ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বরিশোল জেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৮ হাজার ২৩৫। তবে সেপ্টেম্বর মাসে এ নগরীতে মাত্র একজনের মৃত্যু হয়েছে করোনা সংক্রমনে। আক্রান্তের সংখ্যাও লক্ষণীয়ভাবে কমলেও এখনো ৬ জেলার শীর্ষে এ নগরী। এপর্যন্ত নগরীতে মৃতের সংখ্যা ১০১। যা দক্ষিণাঞ্চলে মোট মৃত্যুর প্রায় ১৫%।
দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় গত বছরে ১৮ মার্র্চ থেকে শুক্রবার, ১ অক্টোবর সকাল পর্যন্ত ২ লাখ ১৩ হাজার ৮১৬ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৪৪ হাজার ৯৮১ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন ৬৭৭ জন। তবে পরিস্থিতির আশাব্যঞ্জক উন্নতির পরেও এখনো গড় শনাক্তের হার ২১.০৪% হলেও গতমাসে সংক্রমন হার ছিল ৪%-এর নিচে। এমনকি গত সপ্তাহের গড় শনাক্তের হার ছিল ২%-এর কমবেশী।
অপরদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ১ অক্টোবর সকাল পর্যন্ত সমগ্র দক্ষিনাঞ্চলে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যায় শীর্ষে ছিল মহানগরী সহ বরিশাল জেলা। তবে গড় শনাক্তের হারে শীর্ষে ছিল ঝালকাঠী। ৪ উপজেলার ছোট এ জেলায় ১৮ হাজার ৩৪২ জনের নমুনা পরিক্ষায় শনাক্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৬০৩। গড় শনাক্তের হার ২৫.১০%। জেলাটিতে এপর্যন্ত মারা গেছেন ৬৯ জন। অপরদিকে মৃত্যুহারে শীর্ষে বরগুনা জেলা। জেলাটিতে ২৫ হাজার ২০৮ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৩ হাজার ৮৬৬ জনের দেহে করেনা পজিটিভ শনাক্ত হলেও মৃত্যু হয়েছে ৯৭ জনের। গড় মৃত্যুহার ২.৫১%। তবে জেলাটিতে গড় শনাক্তের হার বিভাগের সর্বনি¤েœ ১৫.৩৪%।
শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বরিশালে ৭৬ হাজার ২১৯ জনের নমুনা পরিক্ষায় শনাক্তের গড়হার ২৩.৯২%। মহানগরী সহ জেলায় গড় মৃত্যুহার ১.২৬%। পটুয়াখালীতে ৩৯ হাজার ১১২ জনের নমুনা পরিক্ষায় শনাক্তের সংখ্যা ৬ হাজার ১৮৯। মারা গেছেন ১০৭ জন। গড় শনাক্ত ও মৃত্যু হার যথাক্রমে ১৫.৮২% ও ১.৭৫%। ভোলাতেও ৬ হাজার ৮১৪ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ৯১ জন। পিরোজপুরে শনাক্তের গড়হার ২৪.০১%। জেলাটিতে এপর্যন্ত ৫ হাজার ২৭৪ জন আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছেন ৮৩ জন।
এদিকে শুক্রবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় দক্ষিনাঞ্চলের ৬ জেলায় ৫৪১ জনের নমুনা পরিক্ষায় ১৫ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে মহানগরীতে ৩ জন সহ বরিশাল জেলায়ই আক্রান্তের সংখ্যা ৮। গত তিনদিনে কোন মৃত্যু সংবাদ নেই দক্ষিণাঞ্চলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।