পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চাহিদা বাড়ায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে মার্কিন ডলারের দাম। এতে করে মান হারাচ্ছে টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলার বিক্রি করেও দামের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে পারছে না। গতকাল আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে প্রতি ডলারের দাম আরো ১২ পয়সা বেড়ে ৮৫ টাকা ৪৭ পয়সায় দাঁড়িয়েছে। তবে খোলাবাজার ও নগদ মূল্যে ডলার আরও বেশি দামে ৮৮ থেকে ৮৯ টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একদিকে প্রবাসীদের পাঠানো আয় বা রেমিট্যান্স গত তিন মাস ধরে ধারাবাহিকভাবে কমছে। আবার প্রত্যাশা অনুযায়ী আসছে না রফতানি আয়। অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় দেশে আমদানি চাপ বেড়েছে। এর দায় পরিশোধে বাড়তি ডলার লাগছে। ফলে বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এতে করে টাকার বিপরীতে বাড়ছে ডলারের দাম। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা মজুত রয়েছে। বাজার স্থিতিশীল রাখতে ব্যাংকগুলোর চাহিদার বিপরীতে ডলার বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দীর্ঘদিন স্থিতিশীল থাকার পর গত মাসের শুরুতে (আগস্ট) হঠাৎ টাকার বিপরীতে বাড়তে শুরু করে ডলারের দাম। যা এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২৯ সেপ্টেম্বর ব্যাংকগুলোর নিজেদের মধ্যে লেনদেনের জন্য প্রতি ডলারের বিনিময় মূল্য দাঁড়িয়েছে ৮৫ টাকা ৪৭ পয়সা; যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ মূল্য। গত ২ সেপ্টেম্বর এ দর ছিল ৮৫ টাকা ২০ পয়সা। আর গত মাসের শুরুতে আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম ছিল ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা। এ হিসাবে ৩৮ কর্মদিবসের ব্যবধানে ডলারের বিপরীতে ৬৭ পয়সা দর হারিয়েছে টাকা। এর আগে ২০২০ সালের জুলাই থেকেই ৮৪ টাকা ৮০ পয়সায় স্থিতিশীল ছিল ডলার। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, যখন বাজারে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ বেশি ছিল তখন ডলার কিনেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এখন সরবরাহ কমে যাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী ডলার বিক্রি করছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, করোনার কারণে দীর্ঘদিন আমাদের আমদানি কম ছিল। তখন ডলারের চাহিদাও কম ছিল। এখন পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় মূলধনীয় যন্ত্রপাতি ও পণ্য আমদানি বেড়েছে। এর ফলে ডলারের চাহিদায় বাড়তি চাপ সৃষ্টি হয়েছে, দাম বেড়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বাজারের চাহিদা অনুযায়ী এখন ডলার বিক্রি করছে জানিয়ে মুখপাত্র বলেন, মঙ্গলবারও ১০০ মিলিয়ন (১০ কোটি) ডলার বিক্রি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চলতি অর্থবছরে অর্থাৎ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত ৭৮৬ মিলিয়ন ডলার (৭৮ কোটি ৬০ লাখ ডলার) বাজারে বিক্রি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আগে বাজার স্থিতিশীল রাখতে ডলার কেনায় রেকর্ড গড়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২০২০-২১ অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সবমিলিয়ে প্রায় আট বিলিয়ন (৮০০ কোটি) ডলার কেনা হয়। তার আগে ২০১৩-১৪ অর্থবছরে পাঁচ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার কিনেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত অর্থবছরের আগে সেটিই ছিল সর্বোচ্চ ডলার কেনার রেকর্ড। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়েও ২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার কেনে আর্থিক খাতের এ নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওয়েবসাইটে সবশেষ ১৪ সেপ্টেম্বর ব্যাংকগুলোর ঘোষিত মুদ্রা বিনিময় হার অনুযায়ী, নগদ ডলারের দর সবচেয়ে বেশি উঠেছে ব্র্যাক ও এনআরবিসি ব্যাংকে। ব্যাংকগুলোর নগদ ডলারের দর ছিল ৮৮ টাকা ৫০ পয়সা। এছাড়া বেশিরভাগ ব্যাংকই ৮৭ টাকা থেকে ৮৮ টাকায় ডলার বিক্রি করছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, মহামারির শুরুর দিকে প্রবাসী আয়ে যে চাঙা ভাব ছিল, চলতি বছরের জুন থেকে সেখানে নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। গত আগস্ট মাসে প্রবাসীরা ১৮১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৫ হাজার ৩৮৫ কোটি টাকা (প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ৮৫ টাকা ধরে)। গত বছরের আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৬ কোটি ডলার। সেই হিসাবে গত বছরের চেয়ে এবার আগস্টে রেমিট্যান্স কমেছে প্রায় ৮ শতাংশ। একইভাবে রফতানি আয়ও কম হয়েছে। গত জুলাই-আগস্টে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় রফতানি আয় কমেছে দশমিক ৩১ শতাংশ। গত বছরের জুলাই মাসে আমদানি বাবদ ৪২২ কোটি ডলার খরচ করেছে বাংলাদেশ। চলতি বছরের জুলাইয়ে খরচের এ পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫১৪ কোটি ডলার। এ হিসাবে আমদানি খরচ বেড়েছে ২১ দশমিক ৬০ শতাংশ। এসব কারণে ডলারের চাহিদা বাড়ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।