Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ছাতকে আলোচিত ব্যবসায়ী আখলাদ হত্যা মামলার প্রধান আসামির আত্মসমর্পন

ছাতক (সুনামগঞ্জ) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৬:৪২ পিএম | আপডেট : ৮:৫৫ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১

ছাতকের গোবিন্দগঞ্জের আলোচিত ব্যবসায়ী আখলাদ মিয়া হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ও মামলার প্রধান আসামী আল আমিন (২৬) আদালতে আত্মসমর্পণ করেছে। সোমবার দুপুরে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পনের পর তাকে কারাগারের পাঠানোর নির্দেশ দেন। আল আমিন ছাতক উপজেলার মোল্লাআতা গ্রামের সুন্দর আলীর পুত্র। ঘটনার পর থেকে সে লাপাত্তা ছিল।

জানা যায়, মোল্লাআতা গ্রামের জাহির আলীর পুত্র ও গোবিন্দগঞ্জের হোছন মার্কেটের সামনে মুদি দোকানি আখলাদ মিয়া (৩৮)। গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার পর দোকান বন্ধ করে প্রতিদিনের মতো নিজের বাই সাইকেল যোগে বাড়ি ফিরছিলো। বুড়াইরগাঁও বাউভোগলী রাস্তায় যাওয়ার পর বুড়াইরগাঁও গ্রামের দক্ষিণের কবরস্থান এলাকায় পৌঁছা মাত্র পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা সংঘবদ্ধ দূর্বৃত্তরা তাকে ছুরিকাঘাত করে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এসময় দূর্বৃত্তদের হাত থেকে প্রাণে বাঁচতে ধানের জমি দিয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে ফের ওই দূর্বৃত্তরা তাকে জমির কাঁদায় ফেলে হত্যা নিশ্চিতের পর সিএনজি অটো-রিকশা যোগে পালিয়ে যায়। রাত প্রায় সাড়ে ১১টার দিকে ওই রাস্তা দিয়ে এলাকার অন্যান্য ব্যবসায়ীরা বাজার থেকে বাড়িতে যাওয়ার সময় পাকা রাস্তার এক পাশে রক্ত ও অপর পাশে বাইসাইকেল এবং সওদাপাতির ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখে। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়। এক পর্যায়ে ইউপি চেয়ারম্যান আখলাকুর রহমানের মাধ্যমে থানা পুলিশকে অবহিত করা হয়। খবর পেয়ে গভীর রাতে থানার ওসি শেখ নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ধান ক্ষেতের জমি থেকে ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার করে। ময়না তদন্ত শেষে ২০ সেপ্টেম্বর রাতে লাশ দাফন করা হয়।

২১ সেপ্টেম্বর নিহতের বড় ভাই আশিক আলী বাদি হয়ে ছাতক থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা (নং-২৪) দায়ের করেন। তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ২৩ সেপ্টেম্বর ভোর রাতে ছাতক থানা পুলিশ সিলেটের লালবাজার দিরাই রেস্টহাউজে অভিযান পরিচালনা করে আবু সুফিয়ান সোহাগ (২৬) নামের এক আসামিকে গ্রেফতার করে। সে ছাতক উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের গোবিন্দনগর গ্রামের মৃত ফজলু মিয়ার পুত্র। তার দেয়া তথ্য মতে পরদিন সকালে আলিম উদ্দিন (৩০) নামের আরেক আসামি ও সিএনজি চালককে তার বাড়ি গোবিন্দগঞ্জ-সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের দিঘলী চাকল পাড়া গ্রাম থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃত আসামি আবু সুফিয়ান সোহাগ বিজ্ঞ আদালতে এ হত্যার সাথে সে সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে। এর আগে থানা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও ভাইরাল হয় "ছাতক টু সুনামগঞ্জ" নামক একটি অনলাইন পেইজে। এ নিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠে। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় বিষয়টি নিয়ে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। গত শনিবার পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ গঠন করেন তদন্ত কমিটি। তিনদিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি কর্তৃক রিপোর্ট জমা দেয়ার কথা।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, থানার উপ-পরিদর্শক মহিন উদ্দিন সত্যতা স্বীকার করে বলেন, হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও মামলার প্রধান আসামি আল আমিন আদালতে আত্ম সমর্পণ করেছে। এনিয়ে মামলার তিন আসামি কারাগারে। তিনি বলেন এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ৫জনের মধ্যে দুই আসামি পলাতক রয়েছে। তাদেরকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। তদন্তের স্বার্থে পলাতক দুই আসামির নাম বলা যাচ্ছে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ