রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
রাঙ্গামাটি জেলা সংবাদদাতা
সরকারের উন্নয়ন কর্মকা-ের অংশ হিসাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পার্বত্য দুর্গম এলাকায় কৃষি, যোগাযোগ, শিক্ষা ক্ষেত্রসহ বিভিন্ন সেক্টরের উন্নয়নে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশল শাখা যোগাযোগের উন্নয়নের রাস্তা, ব্রিজ, কালভার্টসহ বিভিন্ন সড়ক সংস্কার করছে, শিক্ষা ক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার অবকাঠামো উন্নয়ন এবং কৃষি ক্ষেত্রে সেচ নালা ও ড্রেন নির্মাণ এবং স্লুইচ গেইট নির্মাণের মতো কাজ করে জনগণের প্রশংসা কেড়েছে। সম্প্রতি শেষ হওয়া পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ১৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার তিনটি প্রকল্প দুর্গম এলাকার কয়েক হাজার মানুষের জীবন যাত্রা পাল্টে দিয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড প্রকৌশল শাখা সূত্রও জানায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ভূমিকা রেখে চলেছে। তারাই ধারাবাহিকতায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড শত কোটি টাকার চলমান প্রকল্পের মধ্যে তিনটি বড়ো প্রকল্পের কাজ সমাপ্ত করেছে। তার মধ্যে পার্বত্য অঞ্চলের শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকদের আবাসন সুবিধা সৃষ্টির লক্ষ্যে ২ কোটি ৯১ লক্ষ ৫৪ হাজার টাকা ব্যয়ে ৫ তলাবিশিষ্ট ২৫০০ বর্গমিটার রানী দয়াময়ী হাই স্কুল কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। রাঙ্গামাটি শহর লেক বেষ্টিত হওয়ায় এই শহর সম্প্রসারণে আসামবস্তী হতে ব্রাহ্মণপাড়া যাতায়াতের একটি ব্রিজ এনে দিয়েছে ব্যাপক সাফল্য। এই ব্রিজের ফলে মূল শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা প্রায় ১ হাজার পরিবারের যোগাযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। দৃষ্টি নন্দন এই ব্রিজের নির্মাণ কাজ শেষ করতে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ব্যয় করেছে ৯ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। ২১০ মিটার দৈর্ঘ এবং ৬ মিটার প্রস্থ ব্রিজের নির্মাণের কাজ শেষ হওয়া এলাকার জনগণ পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়কে সাধুবাদ জানিয়েছেন। এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড শুধু শহর এলাকার নয় বোর্ড দুর্গম অঞ্চলগুলোতেও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে প্রত্যন্ত প্রান্তিক কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী বাজারজাত করতে সহজ হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড নানিয়ারচর উপজেলার বেতছড়ি দোসর পাড়ার খালের উপর ৯১.৫০ মিটার দীর্ঘ আরসিসি গাডার ব্রিজ ও এপ্রোস এবং বিভিন্ন রাস্তা নির্র্মাণের ফলে এলাকার প্রায় ৬ শতাধিক কৃষি ও জুমিয়া পরিবার তাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য বাজারজাত সহ যাতায়াতের ব্যাপক সফলতা এসেছে। এই ব্রিজ নির্মাণের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড ব্যয় করেছে ৩ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা। রানী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পার্বত্য এলাকার শিক্ষার মান উন্নয়নে দীর্ঘ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে। তারই অংশ হিসাবে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড পার্বত্য চট্টগ্রাম চট্টগ্রাম উন্নয়ন সহায়তা ৫০১০ প্রকল্পের আতওায় একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজ শেষ করেছে। আমার স্কুলের প্রায় ১ হাজারের বেশি ছাত্র ছাত্রী এই নতুন ভবনে ক্লাস শুরু করতে পারায় আমাদের ক্লাস রুম সংকট দূর হয়েছে। তিনি বলেন এই প্রকল্পের আওতায় আরো কিছু কাজ রয়েছে তাও উন্নয়ন বোর্ড দ্রুত কাজ শুরু করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। আসামবস্তি ব্রাহ্মণটিলার স্থায়ী বাসিন্দা বিমল চক্রবর্তী বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আমাদের এলাকার জনগণের জীবনমান পাল্টে দিয়েছে। একটি ব্রিজের আশায় আমরা দীর্ঘ বছর পার করেছি। একটু বৃষ্টি হলে আমরা ঘর থেকে বের হতে পারতাম না। আমাদের এই এলাকার হাজারো পরিবার ডিঙ্গী নৌকার উপর নির্ভর ছিলাম। কতোবার যে আমরা এই নৌকা ডুবির শিকার হয়েছি তা আমরা বলতে পারবো না। তিনি বলেন, এই একটি ব্রিজের কারণে আজ আমরা অন্ধকার থেকে আলোতে আসতে পেরিছি। এই ব্রিজ নির্মাণের ফলে আমাদের এলাকাকে আর কেউ দুর্গম বলতে পারে না। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আমাদের কষ্ট লাঘব করায় বোর্ড কর্তৃপক্ষ ও সরকারকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানান। বেতছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুবোধ জ্যোতি চাকমা উচ্ছ্বসিত কণ্ঠে বলেন, এই একটি ব্রিজ আমাদের গ্রামের দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছে। এই ব্রিজ নির্মাণ করে দেয়ায় উন্নয়ন বোর্ডকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের কাক্সিক্ষত এই ব্রিজ নির্মাণের ফলে এলাকার শত শত কৃষি পরিবার তাদের যোগাযোগ ব্যবস্থা যেমন উন্নত হয়েছে তেমনি কৃষি জাত পণ্য সামগ্রী বাজারজাত করতে সহজ হয়েছে। তিনি বলেন, এছাড়া শিক্ষার্থীরা আরো বেশি উপকৃত হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলে খালের উপর থেকে ছাত্র- ছাত্রীরা স্কুলে আসতে পারতো না এই ব্রিজ নির্মাণের ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা খুবই খুশী। এই বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মুজিবুল আলম জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে এই অঞ্চলের উন্নয়ন কাজ করছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও অন্যান্য সদস্য বর্গের নির্দেশনা মতে একদল দক্ষ প্রকৌশলীরা এই এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নে কাজ করছে। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অনেকগুলো প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। তার মধ্যে এই তিনটি প্রকল্প আমরা শেষ করে দেয়ার ফলে এলাকার জনগণ উপকৃত হচ্ছে। তিনি বলেন, শতভাগ কাজের গুণগত মান ঠিক রেখে এই এলাকার উন্নয়ন কাজ করতে পেরে আমরা নিজেরাও খুবই আনিন্দত। তিনি বলেন, রানী দয়াময়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের আরো কিছু কাজ রয়েছে আমরা আগামীতে এই প্রকল্পের কাজগুলোও শেষ করতে পারলে একটি স্কুলের পরিপূর্ণ আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারবো। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী পল্লব চাকমা জানান, এই তিনটি কাজ আমরা সার্বক্ষণিক তদারিকর মাধ্যমে খুব অল্প সময়ের মধ্যে শেষ করতে পেরেছি। এই কাজগুলো দ্রুত শেষ করতে আমাদের এলাকার জনগণ খুবই সহযোগিতা করেছে। তা না হলে দুর্গম এলাকায় গিয়ে কাজ করা খুবই অসম্ভব ছিল। তিনি বলেন, প্রতিটি সময় আমরা এই কাজগুলোর তদারকি করেছি। ঝড়, বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া উপেক্ষা করে আমরা কাজগুলো শেষ করতে পেরেছি বলেই আমাদের এই স্বার্থকতা। আমরা জনগণের হাসি মুখটুকু দেখতে পারছি বলেই আমাদের আরো বেশি আনন্দ হচ্ছে। এই ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে আরো বড় দুটি প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে। এরমধ্যে রিজার্ভ বাজার এলাকায় রিজার্ভ বাজার ও পুরানপাড়া সংযোগ ব্রিজ এই ব্রিজের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার কিছু বেশি। এই ব্রিজের প্রায় ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া মাইনীমুখ বাজার ও গাঁথাছড়া সংযোগ ব্রিজের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১০ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। এই ব্রিজের প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।