পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সাদা রঙের শতছিদ্র গেঞ্জির বুকের কাছে লাল রঙের টোপলাটা স্পষ্ট ধরা পড়ছিল। নিস্তব্দ নিসাড় দেহটা পড়ে আছে। তারই মাঝে পিটিয়ে বীরত্ব ফলাচ্ছে পুলিশের দল। এসময়ই মাটিতে লুটিয়ে পড়া শরীরটার ওপর ক্যামেরা হাতে লাফিয়ে পড়ে এক মানবরূপি পশু। মুহ‚র্তে ঘুরে মুষ্টিবদ্ধ হাতে বসিয়ে দিল ঘুসি-ও। বৃহস্পতির সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া সেই শঙ্কর বানিয়াকে গ্রেফতার করেছে আসাম পুলিশ। ঠিক কী আক্রোশে বৃহস্পতিবার এভাবে নৃশংসতায় মেতেছিলেন শঙ্কর তাই জানার চেষ্টা করছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার অসমের দরং। বেআইনি দখলদার উচ্ছেদ ঘিরে তুলকালাম। ঢোলপুর ৩ নম্বর এলাকা। হঠাৎই পুলিশের দিকে তেড়ে যান কয়েক জন। কিছু ভাবনা-চিন্তা না করে গুলি চালাতে শুরু করে পুলিশও। আহত হন কয়েক জন। রাগ কিন্তু তাতে মেটেনি পুলিশদের। লাঠি উঁচিয়ে সেই আহত-দেহের ওপর শক্তি জাহির করতে শুরু করেন তারা। সঙ্গেই যোগ দেন চিত্রগ্রাহক শঙ্কর ও আরো কয়েক জন। উন্মাদের মতো চিৎকার করতে করতে লাফাতে থাকেন আহতের শরীরটার ওপর।
লাঠি হাতে হাত দেড়েক অদূরে তখন জনা কয়েক পুলিশ কর্মী। কিছু মুহ‚র্ত আগে তারাও বিক্রম দেখিয়েছিলেন। বুকে গুলিবিদ্ধ দেহটার উপর লাফ শেষে হওয়ার আগে সেই পুলিশরাই সরিয়ে নিয়ে যান শঙ্করকে। কিন্তু, আহত দেহটাকে শাস্তি দেওয়ার উদগ্র বাসনা যে কাজ করছিল শঙ্করের মনে। তাই হয়তো ফের বীরবিক্রমে পুলিশের হাত ছাড়িয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়া দেহটার উপর লাফিয়ে পড়েছিলেন ক্যামেরাম্যান শঙ্কর। যেন প্রায় মরা দেহটাকে পুরো মারাই ছিল ক্যামেরাম্যান শঙ্করের এদিনের অ্যাসাইনমেন্ট।
শঙ্করের এহেন ‘বিক্রমের’ ছবি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। ওঠে সমালোচনার ঝড়। বিপদের আঁচ পেয়ে তড়িঘড়ি শঙ্করকে গ্রেফতার করে পুলিশ। রাজ্য পুলিশের ডিজি ভাস্করজ্যোতি মোহান্ত টুইট করে গ্রেফতারির খবর জানান। মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা নির্দেশ দেন তদন্তের। ঠিক কী কারণে উচ্ছেদ অভিযানে গুলি চালাতে হল, শুরু হয়েছে তা নিয়ে বিতর্ক। প্রশ্ন উঠছে গুলি চালাতে বাধ্য হলেও এমন কী পরিস্থিতি হল, যাতে বুকে গুলি করতে হল। যদিও এ সব প্রশ্ন কোনও উত্তর এখনও মেলেনি।
কিন্তু, বিভ‚তিভ‚ষণের অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় শঙ্করকে কয়েক যোজন পিছনে ফেলে বিতর্কের নবতম সংযোজন চিত্রগ্রাহক শঙ্কর। যার বন্ধ ক্যামেরা যেন নৃশংসতার নতুন ছবি লেন্সবন্দি করে ফেলল। ভারতের জাতির পিতা মহত্মা গান্ধী বলেছিলেন, দারিদ্র হিংস্রতার সব চাইতে খারাপ রূপ। কিন্তু, গত বৃহস্পতিবার বিজেপি শাসিত আসামের চিত্রগ্রাহক নিজেকে নিয়ে যে ছবি তুলে ধরলেন, সেটা কি নৃশংসতার নবতম সংযোজন হিসেবে লেখা হয়ে থাকল না?
গত বৃহস্পতিবার দারাং জেলার ধোলপুর-গরুখুঁটি এলাকায় বেআইনি উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দারাং জেলায় একটি শিবমন্দির নির্মাণের লক্ষ্যে হাজার হাজার বাঙালি মুসলিমকে তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছেদ করার পর বৃহস্পতিবার সেই আশ্রয়চ্যুতদের বিক্ষোভে পুলিশ গুলি চালিয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা পুলিশের গুলিতে অন্তত দুজনের মৃত্যু ও আরো বেশ কয়েকজনের আহত হওয়ার খবর জানিয়েছেন। রাজ্যের বিরোধী দল কংগ্রেসের সভাপতিও এ হত্যাকান্ডের খবর টুইট করেছেন। দারাং জেলার ধলপুর গ্রামে একটি প্রাচীন শিবমন্দিরকে অনেক বড় আকারে গড়ে তোলার লক্ষ্যে গত কয়েক মাস ধরেই আসাম সরকার সেখানে দফায় দফায় উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে, যদিও সেই ভিটেমাটি-হারানোরা দাবি করছেন তাদের সব ধরনের সরকারি নথি ও পরিচয়পত্রই আছে। বস্তুত আসামের দারাং জেলার ধলপুর হিলস ও সিপাহঝাড় এলাকায় প্রায় ৭৭ হাজার বিঘা জমি দখল করে বিশাল একটি শিবমন্দির কমপ্লেক্স বানানোর লক্ষ্যে রাজ্য সরকার সেখানে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে বেশ কয়েক মাস ধরেই। সেই অভিযানের সবশেষ ধাপে গত সোমবার ওই অঞ্চলের বাসিন্দা প্রায় আটশো পরিবারের বেশ কয়েক হাজার মানুষকে তাদের ভিটে থেকে উচ্ছেদ করে সেই জমি খালি করিয়ে দেয়া হয়। তার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দারাংয়ে উচ্ছেদ-বিরোধী কমিটির জমায়েতে পুলিশ গুলি চালালে অনেকে হতাহত হয়েছেন।
ইতিমধ্যেই ঘটনার একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে, যেখানে এক মুসলিমের লাশের উপরে বর্বর আচরণ করতে দেখা যাচ্ছে। ভিভিওতে দেখা যায়, এক ব্যক্তি লাঠি নিয়ে পুলিশের দিকে দৌড়ে যাচ্ছে। এরপর ওই ব্যক্তির বুকে গুলি করে পুলিশ। তাতে মৃত্যু হয় ওই ব্যক্তির। তারপরেই মৃত ওই ব্যক্তির দেহের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে লাঠি, ঘুসি মারতে দেখা গেল অপর এক ব্যক্তিকে। ধৃত ওই ব্যক্তির নাম বিজয় শঙ্কর বানিয়া, সে পেশায় একজন ফটোগ্রাফার। বিজেপির একান্ত আস্থাভাজন হওয়ায় তাকে আসাম সরকারের উচ্ছেদ অভিযান নথিভুক্ত করার জন্য জেলা প্রশাসন তাকে নিয়োগ করেছিল। ফটো তোলার যে দায়িত্ব তাকে দেয়া হয়েছিল তা পালন না করে পুলিশের চেয়ে আক্রমণাত্মকভাবে তাকে অভিযানে অংশ নিতে দেখা যায়। স্থানীয়রা জানিয়েছে, গত বিধানসভা ভোটের সময়ও সে নির্বাচন কমিশনের হয়ে জেলায় কাজ করেছিল। মূলত সেখানে আনুগত্য প্রদর্শন করায় পুনরায় কাজ পায় বলে মনে করা হচ্ছে।
পুলিশ-জনতা সংঘর্ষ বৃহস্পতিবার ধোলপুর গরুখুঁটি এলাকার পরিস্থিতি হিংসাত্মক ঘটনায় পরিণত হয়, যখন সরকারের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদকারীদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা করে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তাদের দমন করতে পুলিশ গুলি চালায়। যার জেরে ২ জন সাধারণ মুসলিমের মৃত্যু হয়। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মার সহোদর দারাংয়ের এসপি সুশান্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন যে, দু’পক্ষের সংঘর্ষের এ ঘটনায় কমপক্ষে দশজন আহত হয়েছেন।
বুধবার ঘটনাস্থল ঘুরে আসা বিবিসির সংবাদদাতা দেবব্রত দত্ত জানিয়েছেন, এ উচ্ছেদ হওয়া মানুষরা প্রায় সবাই বাঙালি মুসলিম যারা বহু দশক ধরে ধলপুরের চরাঞ্চলেই বসবাস করছেন। তাদেও মধ্যে একজন রহিমা শেখ বলছিলেন, ‘নদীর বুকেই বারবার ঘর বাঁধি আর সেই নদীর বুক থেকেই বারবার আমাদের খ্যাদায়ে দেয়। অথচ আমাদের কাগজপাতি সব আছে - এনআরসি, প্যান কার্ড। নিজেরা খাই বা না-খাই সরকারি খাজনা ঠিকই দিয়ে যাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘সেই তিরাশি সালেরও কত আগে থেকে আমরা এখানে থাকতেছি। তহন এইহানে মন্দির-টন্দির কিসুই আসিল না, ছোট্ট একটা পাহাড় আসিল শুধু!’ পাশ থেকে জাহানারা বেগম যোগ করেন, ‘রাত জেগে আমরা ঘর বানায়ছিলাম। আমরা দুখিয়া মানুষ ... এখন মন্দিরের দাবি কইর্যা আমাগো খ্যাদায় দিল।’ আর এক গ্রামবাসী হাসনু আরাও কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘বড়ো দুঃখু পাইসু। আমি এতিয়া ... মাটিবাড়ি নাই ... এখন কইত যাম?’
উচ্ছেদের বিরুদ্ধে গড়ে তোলা সেলের নেতা নিয়ামত শেখ বা জাহাঙ্গীর আলমরাও জানাচ্ছেন, তারা প্রত্যেকে দেশের বৈধ নাগরিক ও বহু বছর ধরে সরকারি খাজনা দিয়ে আসছেন ... তারপরেও তারা বিজেপির রাজনৈতিক চক্রান্তের শিকার। নিয়ামত শেখ যেমন নিজের দাবির স্বপক্ষে ২৬ আগস্ট, ১৯৮৪ তারিখে দেয়া একটি খাজনার রসিদও তুলে ধরেন। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উচ্ছেদ হওয়া প্রত্যেকের এনআরসিতে নাম আছে। লিগ্যাসি ডেটা আছে। এই অঞ্চলে বহু সরকারি প্রাথমিক স্কুল আছে - অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র আছে। তারপরেও কীভাবে আমরা অবৈধ হই? গোটা বিষয়টিকে চরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের ওপর বিজেপির ‘নির্মম অত্যাচার’ হিসেবেই দেখছেন তিনি।
যে ঘোষিত উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার এই উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে, সেটা হল ওই এলাকার একটি প্রাচীন শিবমন্দিরকে নতুন করে গড়ে তোলা। শিবমন্দিরটি বড়জোর তিন-চারশো বছরের পুরনো বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা এবং আসামের একটি নামী নিউজ পোর্টালের সম্পাদক আফরিদা হুসেইন মনে করেন এখানে আর যাই হোক সরকারের উদ্দেশ্য সৎ নয়। তিনি বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘সরকারের উদ্দেশ্যকে আমি সঠিক বলতে পারব না, সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়কে খুশি করতেই এসব পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমি নিজে ধলপুরে গেছি, কিন্তু সেই মন্দির সুপ্রাচীন যুগের - এমন কোনও প্রমাণই পাইনি। তাছাড়া মন্দিরটিকে ঘিরে হাজার হাজার মুসলিম পরিবার বহু বছর ধরে বাস করছে, আগে কোনওদিন অশান্তি হয়নি। এমনকি মন্দির কর্তৃপক্ষ বহু মুসলিম পরিবারকে চাষবাস ও খামার করার জন্য জমিও দিয়েছিল।’
গত জুন মাসে প্রথম দফা উচ্ছেদের পর আসামের মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা ঘটনাস্থল পরিদর্শনেও যান। ফিরে এসে তখন তিনি টুইট করেন, ধলপুর শিবপুরের কাছে বিস্তীর্ণ এলাকা কীভাবে অবৈধ বসতিস্থাপনকারীরা দখল করে রেখেছিল তা আমি সরেজমিনে দেখে এসেছি!
অসমীয়া প্রতিদিনের দিল্লি ব্যুরোর প্রধান আশিস চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘একের পর এক উচ্ছেদ অভিযানে এভাবেই বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে পুলিশ এবং প্রশাসন। মুসলিম এবং বাংলাভাষীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। সরকার তা সমর্থন করছে। বৃহস্পতিবারের ঘটনার পরেও মুখ্যমন্ত্রী তার সমালোচনা করেননি। কারণ, সমস্ত পরিকল্পনা স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীর’। পুলিশ কেন বুক লক্ষ্য করে গুলি চালালো, সে প্রশ্নও তিনি তুলেছেন।
আসামের সাংবাদিক এবং বরাক বুলেটিনের অন্যতম প্রধান অনির্বাণ রায়চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘মুসলিম বিদ্বেষের কদর্য প্রকাশ এদিনের ঘটনা। যেভাবে পুলিশ গুলি চালিয়েছে, যেভাবে নিহত ব্যক্তির উপর আক্রমণ হয়েছে, তা ভাষায় ব্যাখ্যা করা যায় না। ৪৮০টি পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। অথচ তাদের থাকার কোনো জায়গা নেই। কার্যত অনাহারে দিন কাটাচ্ছে তারা। মুখ্যমন্ত্রীর টুইট দেখে মনে হচ্ছে, তিনি আনন্দিত’।
শুক্রবার কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা ও রাজ্যসভার সংসদ সদস্য রিপুন বরার নেতৃত্বে প্রদেশ কংগ্রেসের প্রতিনিধিদল আসামের রাজ্যপাল জগদীশ মুখীর সাথে দেখা করে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার দাবি জানিয়েছে। এর পাশাপাশি, অবিলম্বে দারাংয়ের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে সাসপেন্ড করে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস নেতারা।
গণমাধ্যমে প্রকাশ, বৃহস্পতিবারের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার দারাং জেলায় ১২ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিল, ‘অল অসম মাইনরিটিজ স্টুডেন্টস ইউনিয়ন’ (আমসু) এবং ‘জমিয়ত-ই-উলেমায়ে হিন্দ’। উজান এবং নিম্ন আসামের বিভিন্ন এলাকাতেই তার প্রভাব পড়েছে।
‘নবভারত টাইমস’ জানিয়েছে ১২ ঘণ্টার বন্্ধে দারাং জেলায় জনজীবনে প্রভাব পড়েছে। পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, সমস্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে এবং রাস্তায় খুব কম যানবাহন দেখা গেছে। সিপাঝাড়ের গরুখুটি, ধোলপুর ১ ও ৩ গ্রামে ভারী নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, যেখানে বেদখলের বিরুদ্ধে অভিযান চলছিল।
এদিকে, দারাংয়ের পুলিশ সুপার সুশান্তবিশ্ব শর্মাসহ অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তা ও কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ‘আমসু’র পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবারকে ১০ লাখ এবং আহতদের পাঁচ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণের দাবি তোলা হয়েছে।
আসামের এমপি ও লোকসভায় কংগ্রেসের সহকারী দলনেতা গৌরব গগৈ শুক্রবার বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী এবং তার পুলিশ সুপার ভাই মিলে অশান্তি ছড়াচ্ছেন। বৃহস্পতিবার পুলিশের আচরণ প্রমাণ করছে, শান্তিপূর্ণভাবে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর কোনো সদিচ্ছাই ছিল না।’ এর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া বার্তায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারি নিয়ে সরকারের অভিযোগের সাথে জাতীয় নাগরিক পঞ্জি ‘এনআরসি’ খসড়া তালিকার তথ্য কিন্তু মিলছে না।’
আসাম প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ভুপেন কুমার বরা বলেন, ‘হাইকোর্ট কোভিড অতিমারির সময়ে উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত রাখার নির্দেশ দিলেও মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা অহংকারি ও একনায়কত্ববাদী মানসিকতা নিয়ে ১৯৭০ সাল থেকে বসবাসকারী ধলপুরের বাসিন্দাদের উচ্ছেদ শুরু করেন। সরকার আগে এসব মানুষদের পুনঃসংস্থাপনের ব্যবস্থা করুক। বলপ্রয়োগ করে নিরীহ মানুষদের উচ্ছেদ বন্ধ করা হোক।
তিনি আরো বলেন, বিজেপি সরকার ভুয়া এনকাউন্টার এবং এখন প্রকাশ্যে মানুষকে গুলি করে বুলেটের ভাষায় সরকার চালানোর অভিসন্ধি রচনা করেছে।’
এআইইউডিএফ নেতা ও ধিংয়ের বিধায়ক আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এই সরকারের শুধু রক্ত চাই, কারণ উপনির্বাচন ও লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। এ সরকার ব্যর্থ। আসামে রক্তপাতের সফট টার্গেট ধর্মীয় সংখ্যালঘুরাই। গোটা বিশ্বে এমন ঘটনার নজির নেই।’
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে দারাং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের বাইরে বিক্ষোভ করেছে। রাজ্য কংগ্রেসের প্রধান ভ‚পেন বরা, রাজ্যসভার সদস্য রিপুন বরা, কংগ্রেস বিধায়ক দলের উপনেতা রাকিবুল হুসেন এবং অন্য সিনিয়র নেতারা বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন। সূত্র: টিওআই, বিবিসি বাংলা, পার্স টুডে ও ডয়েচে ভেলে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।