বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : মাদারীপুর শহরের পুরানবাজারের লঞ্চঘাট এলাকার ২০০ বছরের পুরানো পুলিশ ফাঁড়ি পুকুর অবৈধভাবে গত তিন দিন যাবত নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের নির্দেশে একটি প্রভাবশালী মহল ভরাট করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পুকুরটি সরকারি হওয়ায় জেলা প্রশাসক কামাল উদ্দিন বিশ্বাসকে পুকুর ভরাট বন্ধের দাবিতে কয়েকদফা চিঠি দিয়েছে পৌরসভা কতৃপক্ষ ও পরিবেশবাদী সংগঠণ। তবে এই তিন দিনেও ভরাট বন্ধে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় তার রাষ্ট্রীয় আইন অমান্য করেছে বলে দাবি করেছেন সচেতন নাগরিক কমিটি, ফ্রেন্ডস অব নেচারের নেতৃবৃন্দ। আর অযোগ্যতা প্রমাণ হওয়ায় অপসারণ দাবি করেছে পৌর মেয়র, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকও। যদি স্বল্প সময়ের মধ্যে জেলা প্রশাসক ভরাট বন্ধে কার্যকরী পদক্ষেপ না নেন, তাহলে তীব্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে এসব মহল।
একাধিক ব্যক্তির সাথে কথা বলে জানা গেছে, শহরের পুরান বাজারের লঞ্চঘাট এলাকায় পুকুরটিতে গত তিন দিন যাবত খনন যন্ত্রের মাধ্যমে বালু ভরাট হচ্ছে। খননযন্ত্রের মালিক হিসেবে শাহীন মুন্সি ও সৈয়দ রাজিব এর নাম শোনা গেছে। এ সময় ভরাট কাজের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নৌপরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের চাচাতো ভাইয়ের ছেলে ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাইফুর রহমান রুবেল খান, জেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক জাহিদুল ইসলামসহ ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল। প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো দুই একর তিন শতাংশের এই পুকুরের মালিক জেলা প্রশাসন। পুকুরটি ভরাটের পাঁয়তারার বিষয়টি টের পেয়ে এটি রক্ষা করার অনুরোধ জানিয়ে গত এক বছরে জেলা প্রশাসককে তিন দফা চিঠি দিয়েছেন পৌর মেয়র। এছাড়া বৃহস্পতিবার দুুপুরেও তিনটি সংগঠন বন্ধের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছেন। এতো কিছুর পরেও জেলা প্রশাসক এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হয়নি। এতে জনমনে তৈরি হয়েছে নানা গুঞ্জুন। ফলে তার এই ভূমিকাকে রাষ্ট্রীয় আইন অমান্য করার সামিল হিসেবে দেখছেন অনেকে। তারা জেলা প্রশাসকের অপসারণ দাবি করেন।
এ ব্যাপারে পরিবেশবাদী সংগঠন ফ্রেন্ডস অব নেচারের নির্বাহী পরিচালক রাজন মাহমুদ জানান, ‘জেলা প্রশাসক যদি মনে করেন, কারো চাপে বা ভয়ে ভরাট বন্ধ করতে পারছে না। তাহলে উচিৎ তাকে বদলী হয়ে অন্য জেলায় চলে যাওয়া।’
ট্রান্সপারেন্সী ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সচেতন নাগরিক কমিটি’র সভাপতি খান মো. শহীদ বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের স্বচ্ছ একটি অবস্থান থাকতে হবে, কেন বা কোন কারণে পুকুরটি ভরাট হচ্ছে। তার একটি স্বচ্ছ ধারণাও দিতে হবে। কিন্তু এসব বিষয় এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের দেশে তো সার্বজনীনভাবেই উচ্চ মহলের চাপে বা ইঙ্গিতে অনেক কিছু এড়িয়ে যায়। আমরা এই ক্ষেত্রে তার সঠিক ধারণা চাই।’
উল্লেখ্য, গত তিন দিন যাবত পুকুরটি অবৈধভাবে ভরাট বন্ধের দাবিতে সভা, সেমিনার, মানববন্ধন, সড়ক অবরোধ, জেলা প্রশাসকের বাস ভবন ঘেরাওসহ নানা প্রতিবাদী কর্মসূচি করে আসছে মাদারীপুর পৌরসভা কর্তৃপক্ষ, পরিবেশবাদী সংঠগনসহ হাজারো সাধারণ মানুষ। তারপরেও পুকুরটি ভরাট বন্ধ হচ্ছে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।