Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মানহীন ভাইরাল গানের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে ভালো গান

বিনোদন রিপোর্ট: | প্রকাশের সময় : ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

এখন ইউটিউবের মাধ্যমে যে কেউ গানের শিল্পী হয়ে যাচ্ছেন। গানে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও সাধনা বা কণ্ঠে সুর থাকুক আর নাই থাকুক, অনেকেই গান প্রকাশ করে ফেলছেন। সেসব গান নিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের মধ্যে হাস্যরসেরও সৃষ্টি হচ্ছে। এতে প্রকৃত শিল্পীদের ভাল গানও আড়ালে পড়ে যাচ্ছে। আগে একটি ক্যাসেট বা সিডিতে গান প্রকাশ করতে অনেক শ্রম ও সাধনার প্রয়োজন পড়ত। প্রতিষ্ঠিত প্রযোজনা সংস্থাগুলো শিল্পীর সম্ভাবনা বিচার করে গান প্রকাশ করতেন। এজন্য অনেক শ্রম ও অর্থ বিনিয়োগ করতে হতো। রীতিমতো গবেষণা করে গান প্রকাশ করা হতো। এতে যেমন গানের মান ঠিক থাকতো, তেমনি শ্রোতাদেরও পছন্দ হতো। সেসব গান তাদের মুখে মুখে থাকত। এখন গান হয়ে গেছে ওয়ান টাইম বলপেনের মতো। একটি গান প্রকাশিত হওয়ার পর তা স্থায়ী হচ্ছে না। এর মধ্যে অশিল্পীদের ভিড়ে প্রতিষ্ঠিত শিল্পীদের ভালো গানও হারিয়ে যাচ্ছে। তবে কিছু শিল্পী এখন ইউটিউবে নিজে চ্যানেল খুলে গান প্রকাশ করছেন। এসব গানের কোনো কোনোটি অনেক ভিউ পেলেও তা স্থায়ীত্ব পাচ্ছে না। অন্যদিকে যে কেউ প্রযুক্তির সহায়তায় খুব সহজেই ইউটিউবে গান প্রকাশ করতে পারছেন। ফলে দেশীয় বাংলা গানের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আবার বেশকিছু তথাকথিত ভাইরাল গায়ক কিংবা গায়িকার মানহীন গানের কারণে ভালো মানের গানগুলো থেকে যাচ্ছে আড়ালে। বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী ফাহমিদা নবী বলেন, এখন সবাই শিল্পী হয়ে গেছে। গান গাওয়াটা যেন অনেক সহজ। এখানে যেন সাধনার প্রয়োজন নেই। এটা এক ভয়ংকর ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তির মাধ্যমে অনেকে নিজেকে গায়ক কিংবা গায়িকা পরিচয় দিচ্ছে। এসব দেখে মনে হয়, আমরা যারা সারাজীবন সাধনা করেছি এবং এখনও করছি, তাদের পরিশ্রমই যেন বৃথা হয়ে যাচ্ছে। আসলে শুধু গানের ক্ষেত্রেই নয়। এমনটা প্রতিটি ক্ষেত্রে হচ্ছে। যে যেটার যোগ্য না, সে সেটাই করছে। এ কারণে প্রতিটি ক্ষেত্রেই অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে। গানের ক্ষেত্রে অবস্থা আরও খারাপ। প্রযুক্তি অনেক কিছু সহজ করে দিলেও, এর অপব্যবহার অনেক কিছু নষ্টও করেছে। তবে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করতে হবে। এক্ষেত্রে সচেতনতার বিকল্প নেই। শ্রোতাদের সচেতন হতে হবে। এ ধরনের গানকে ভাইরাল করছে কিন্তু শ্রোতারাই। আর সেটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে বরেণ্য গীতিকার মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান বলেন, গানের মান ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে। অনেক আগেই গানের সেন্সর বোর্ড গঠনের কথা বলে আসছি। সেটা হলে এ ধরনের মানহীন গান প্রকাশ হতো না। এখন উচিত সেন্সর বোর্ড গঠনের মাধ্যমে এ ধরনের অবস্থা প্রতিহত করা। গানের সাথে সংশ্লিষ্টদের এ নিয়ে ভাবতে হবে। সঙ্গীতশিল্পী ইমরান বলেন, ভালো ও খারাপ সব ধরনের কাজই এখন হচ্ছে। তবে নেতিবাচক বিষয়গুলোর প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি। তাই সেসব গান কিংবা কনটেন্ট মানুষ ভাইরাল করছে। এর প্রভাব পড়ছে আমরা যারা ভালো গান করার চেষ্টা করছি তাদের ওপর। মানহীন কিংবা অশ্লীল গানা ভাইরাল হলে ভালো গান শ্রোতাদের কাছ থেকে হারিয়ে যায়। এক্ষেত্রে শ্রোতাদের সচেতন হতে হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভালো গান
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ