Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ষণ মামলার সুবিচার চায় প্রতিবন্ধী পরিবার

ময়মনসিংহ ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

আব্দুল হাই (৫২)। তার শারীরিক উচ্চতা মাত্র আড়াই ফুট। তিন কন্যা সন্তান ও স্ত্রী নিয়ে পাঁচ সদস্যের সংসার তার। তারা সবাই চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘ডোয়ার ফিজম বা বামুন’ রোগে আক্রান্ত। সবাই প্রতিবন্ধী, তাদের শারীরিক গঠনও এক। ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানা এলাকার বেলদীয়া গ্রামের উত্তরপাড়া এলাকার বাসিন্দা তারা।

পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী হিসেবে স্থানীয় হাট-বাজারে বাদাম বিক্রি করে চালান সংসার ডোয়ার ফিজম বা বামুন রোগে আক্রান্ত আ. হাই। তার বড় মেয়ে রাহেলার (ছদ্দনাম) বয়স মাত্র ১৩ বছর। সে স্থানীয় একটি মাদরাসার তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী।
রাহেলা কাজের ফাঁকে প্রতিবেশি পোল্টি শ্রমিক ইলিয়াস হোসেনের ঘরে গিয়ে প্রায়ই টেলিভিশন দেখতে যেত। এ সুযোগে রাহেলার প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ইলিয়াসের। চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল নাবালিকা এ প্রতিবন্ধি মেয়েকে ধর্ষণ করে ওই লম্পট। সেই সাথে ঘটনাটি কাউকে বললে খুন করারও হুমকি দেয় ইলিয়াস। এতে ভয় পেয়ে যায় প্রতিবন্ধী রাহেলা।
কাউকে কিছু না বলেই কাটছিল তার দিন। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই প্রকৃতির নিয়মে রাহেলার শরীরিক পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। তখন মেয়ে অসুস্থ ভেবে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় প্রতিবন্ধী বাবা-মা। ডাক্তার জানায়, মেয়ে ৪ মাসের অন্তসত্ত্বা। এতে আকাশ ভেঙে পড়ার অবস্থা এ প্রতিবন্ধী প্ররিবারের।
ধর্ষিতার পিতা আ. হাই জানান, ইলিয়াসকে নানা চেষ্টা করেও গ্রাম্য শালিসে আনতে না পেরে ইলিয়াসের পোল্ট্রি মালিক রহুল আমিনের কথা মতো আমরা তাকে থানায় সোপর্দ করতে নেয়ার পথে পুলিশ থানায় নিয়ে আমাকে বাদী করে নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা করে। অপরদিকে, ইলিয়াসের বউকে বাদীকে আমার আত্মীয়দের নামে অপহরণ মামলা করে। আর এই ঘটনাটি এখন ওই প্রতিবন্ধী পরিবারের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ বিপদে এগিয়ে এসে আত্মীয়রা এখন অপহরণ মামলায় কারগারে।
তার দাবি মূলত রুহুল আমিন ও ইলিয়াস ষড়যন্ত্র করে এ অপহরণ নাটক সাজিয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পোল্টি ব্যবসায়ী রুহুল আমিন। তিনি বলেন, তবে ধর্ষণ ঘটনা ঘটেছে এটা সত্য কিন্তু ইলিয়াস এ ঘটনায় দোষী নয়।
এ বিষয়ে অপরহরণ ও ধর্ষণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাগলা থানার উপ-পরিদর্শক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, ধর্ষন ও অপহরণ অভিযোগে পৃথক দুটি মামলার আসাসিরা কারাগারে আছে। এখনো মামলার তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।
এ ঘটনায় সুবিচার দাবি করে গত সোমবার দুপুরে ময়মনসিংহ রেঞ্জ পুলিশের ডিআইজি ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ধর্ষিতার পিতা আ. হাই। এ বিষয়ে ময়মনসিংহের রেঞ্জ ডিআইজি ব্যারিস্টার হারুন অর রশিদের মুঠোফোনে যোগাযোগ করেও তার বক্তব্য জানা যায় নি। তবে তার অফিস সহকারীরা অভিযোগ দায়েরর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ধর্ষণ মামলা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ