বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ঝালকাঠির নলছিটি পৌরসভার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে তদন্তের জন্য আজ সরেজমিন নলছিটি পৌরসভায় যাচ্ছেন ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ পরিচালক মো. কামাল হোসেন।
অভিযোগে জানা যায়, গত ৩০ জানুয়ারি নলছিটি পৌরসভা নির্বাচনে জয়ী হন আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবদুল ওয়াহেদ খান। গত ১০ মার্চ শপথ নেন মেয়র ও কাউন্সিলররা। মেয়রের দায়িত্ব গ্রহণের পর পৌরসভার কয়েকটি কাজ পাইয়ে দেন মেসার্স খন্দকার ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে। এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী হলেন পৌর বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য ও মেয়রের বড় ছেলে রাসেলের মামা শ্বশুর পারভেজ খন্দকার। এমনকি পৌরসভার একটি উন্নয়ন কাজ শুরু হওয়ার আগেই ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৫ লাখ টাকার বিল দিয়ে দেওয়া হয়। এ টাকা থেকে অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এছাড়াও এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পৌরসভার ডেকরেশন ও পেইন্টিংয়ের কাজ দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন মেয়র ও সচিব।
এদিকে গত ৮ এপ্রিল ডেঙ্গু ও মসক নিধনের জন্য একটি খাতে দুই লাখ ৮৮ হাজার ৪০০ ও অপর একটি খাতে এক লাখ চার হাজার ২৮ টাকার কোন কাজ না করেই ভাগবাটোয়ারা করে নেওয়া হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও ইজিপি দরপত্র ম্যানুয়ালে করার মাধ্যমে পছন্দের ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মেয়র আবদুল ওয়াহেদ খান, সচিব এএইচএম রাশেদ ইকবাল ও উপ সহকারী প্রকৌশলী আবু সায়েমের বিরুদ্ধে। পৌরসভার সচিব ও উপ সহকারী প্রকৌশলী নিয়মিত অফিস করেন না। মাসে ৮-১০ দিন অফিস করেন তারা। পৌরসভার নামে সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকের দুটি শাখার হিসাবের চেকে অগ্রীম স্বাক্ষর করে থাকেন সচিব এএইচএম রাশেদ ইকবাল। গত ২৬ জুলাই সোনালী ব্যাংকে সচিবের স্বাক্ষর করা একটি চেক দিয়ে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে দুই কর্মচারী আটক হয় পুলিশের হাতে। ওই চেকে মেয়রের সই জাল করা হয়েছিল।
নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির সঠিক বিচার চেয়ে নলছিটি পৌরসভার সূর্য্যপাশা গ্রামের ছাইদুর রহমান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণায়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থার কাছে অভিযোগ দেন। অভিযোগের ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের পৌর শাখা-২ এর উপ সচিব ফারজানা মান্নান গত ২ সেপ্টেম্বর ঝালকাঠির জেলা প্রশাসকের কাছে তদন্তের জন্য পাঠান।
নানা অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে পৌর মেয়র আবদুল ওয়াহেদ খান বলেন, সম্প্রতি আমার স্বাক্ষর জাল করে একটি চক্র ব্যাংক থেকে টাকা তুলতে গিয়ে ধরা পড়েছে। এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। পৌরসভার ক্যাশিয়ার ছুটিতে আছেন। তাই তদন্ত পিছিয়ে দেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপ পরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামাল হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসক অভিযোগ তদন্তের জন্য আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন। আজ পৌরসভায় সরেজমিনে তদন্ত করা হবে। তদন্ত প্রতিবেদন দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।