Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আলু ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

আলুর দরপতনে কুড়িগ্রামে কৃষকসহ মজুদদাররা পড়েছেন চরম বিপাকে। গেল বছরে লাভ বেশি পাওয়ায়, এ বছর কৃষকেরা বেশি জমিতে আলু আবাদ করে। ফলনও বাম্পার হওয়ায় কৃষক ও ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফার আশায় পর্যাপ্ত আলু রাখেন হিমাগার গুলোতে।

কিন্তু কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত ও হোটেল রেস্তোরাসহ খাবারের দোকানগুলো বন্ধ থাকায় বাজারে আলুর বিক্রি কমে যায়। ফলে চাহিদা না থাকায় হিমাগারগুলোতে সংরক্ষিত বিপুল পরিমাণ আলুর মজুদ অবিক্রিত থেকে যায়। এ পরিস্থিতিতে লাভের আশায় আলু মজুত করে এখন বড় লোকসানের কবলে পড়েছেন আলুচাষী ও মজুতদাররা।
গত বছর করোনা ও বন্যায় অসহায় মানুষদের পাশে সরকারী সাহায্যের পাশাপাশি অনেক সহৃদয়বান ব্যক্তিবর্গ এগিয়ে আসায় ত্রাণ সামগ্রীর মধ্যে আলুই ছিল অন্যতম সামগ্রী। ফলে সে বছর আলুতে প্রচুর লাভের মুখ দেখেন আলু ব্যবসায়ীরা। সেকারণেই এবছর লাভের আশায় চাষিরা আলু চাষে একটু বেশিই মনোনিবেশ করেছিলেন।
অনেকে বেশি দামের আশায় আলু হিমাগারে মজুদ করেছিলেন। কিন্তু বাজারে ভালো দাম না থাকায় এখন লোকসান গুনতে হচ্ছে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের। এভাবে চলতে থাকলে আগামীতে আলু চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন কৃষকরা। তাদের লোকসান ঠেকাতে আলু রফতানির দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে হিমাগার খরচসহ প্রতি কেজিতে উৎপাদন খরচ পড়ছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। আর বর্তমান আলু বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১০ থেকে সাড়ে ১০ টাকায়। এতে প্রতি কেজিতে লোকসান গুনতে হচ্ছে সাড়ে ৭ থেকে সাড়ে ৯ টাকা। এখন প্রতি বস্তা ডায়মন্ড আলুর দাম ৬০০ টাকা আর হিমাগারের ভাড়াই প্রতি বস্তা ২৬০ টাকা । হিমাগারগুলোতে পাইকারি ব্যবসায়ী না যাওয়ায় জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে হিমাগারগুলোতে আলু পচে নষ্টও হচ্ছে অনেক।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা জানান, ভালো দাম পাওয়ার আশায় হিমাগার থেকে ঋণ নিয়ে আলু সংরক্ষণ করেছিলেন তারা। কিন্তু তাদের এখন লাভের গুড় পিঁপড়ায় খাওয়ার মতো অবস্থা। এভাবে আলুর দাম কমে যাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন তারা।
সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নের সুভারকুটি গ্রামের আলু চাষী আ. রাজ্জাক জানান, প্রতি বছর প্রায় ১০০ একর জমিতে আলুর আবাদ করেন তিনি। এখন প্রতি কেজি আলু ১০ থেকে সাড়ে ১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে এ বছর প্রায় ৫০ থেকে ৫৫ লাখ টাকার মতো লোকসান গুনতে হবে। লোকসান ঠেকাতে এবং কৃষক বাঁচাতে সরকারকে আলু বিদেশে রফতানির করার দাবিও জানান তিনি।
এ বিষয়ে সেকেন্দার বীজ হিমাগার লিমিটেড এর মালিক মো. সেকেন্দার আলী জানান, প্রতিটি হিমাগারের মালিক আলুর বিপরীতে কৃষকদের ঋণ দিয়েছেন। কিন্তু বর্তমানে আলুর বাজার দর কম থাকায় এখনো প্রতিটি হিমাগারে প্রায় ৭০ ভাগ আলু সংরক্ষণে রয়েছে। এভাবে বাজারে আলুর বাজার দর নামতে থাকলে চাষী ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু বের করার আশা ছেড়ে দেবেন। এতে হিমাগারের মালিকদেরও লোকসান গুনতে হবে।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন জানান, এবারে আলুর মৌসুমে বীজের দাম বেড়ে যাওয়ায় আলুর উৎপাদন খরচ বেশি হয়েছে। এছাড়া অন্যবারের মতো এবার বৃষ্টি না হওয়ায় শাকসবজিও নষ্ট হয়নি। এর ফলে আলুর উৎপাদন বৃদ্ধি ও শাকসবজির বাম্পার ফলনে আলুর দাম কম।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আলু ব্যবসায়ী

৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ