Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আদমদীঘিতে সরকারি টাকা আত্মসাৎ

আদমদীঘি (বগুড়া) উপজেলা সংবাদদাতা : | প্রকাশের সময় : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

বগুড়ার আদমদীঘিতে পুকুর খনন ও প্রাকৃতিক উপায়ে মৎস্য পোনা উৎপাদন প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম ও অর্থ লোপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুজয় পালের বিরুদ্ধে। অর্থ লোপাটের সাথে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও জড়িত থাকার ও অভিযোগ রয়েছে। নামকাওয়াস্তে পুকুর খননের এক মাস সময় পার না হতেই খনন করা পুকুর বিলীন হয়ে গেছে বিলের অথৈই পানিতে। পুকুরে ছাড়া রেনু পেনা বড় হওয়ার আগেই ভেসে গেছে বিলের পানিতে। ফলে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়েছে সরকারের বিল নার্সারী প্রকল্প, গচ্চা গেছে লাখ লাখ টাকা ।
জানা যায়, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার রক্তদহ বিলে প্রাকৃতিক উপায়ে মৎস্য পোনা উৎপাদন করার জন্য বিল নার্সারি পুকুর খননের প্রকল্প গ্রহণ করে রাজশাহী বিভাগীয় মৎস্য সম্পদ উন্ন্য়ন প্রকল্প কর্তৃপক্ষ। এই প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হল উন্মুক্ত বিল জলাশয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে পোনা উৎপাদন এবং বিলের পানিতে ছড়িয়ে দেওয়া। উপজেলার সান্তাহার ইউনিয়নের রক্তদহ বিলে এক একর আয়তনের যে ৪ নার্সারি পুকুর খনন করা হয়েছে বিলের প্রায় তলা বরাবর। প্রতিটি পুকুর খননের ব্যয় বরাদ্দ ৫ লাখ ১৬ হাজার টাকা। প্রতি পুকুরের আয়তন দৈর্ঘ্যে ৩ শ’ ফুট এবং প্রস্থ্যে ৮০ ফুট এবং গভীরতা ৬ ফুট করার কথা থাকলেও সেটা করা হয়নি বলে ওই বিলের মৎস্যজীবীদের নিকট থেকে অভিযোগ মিলেছে। এদিকে ৪ পুকুর খননে মোট ২০ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ছাড়াও উপকরণ ক্রয় খাতে সাড়ে ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ পায় উপজেলা মৎস্য বিভাগ। পুকুর খননে ৪টি শ্রমিক দল(এলসিএস দল) গঠন এবং দলপতি নিয়োগ করা হয়। কিন্তু মাটি কাটা কোন শ্রমিক ব্যবহার করা হয়নি। পুকুর খনন করা হয়েছে মেশিনে। কিন্তু বরাদ্দ করা সমুদয় টাকা খরচ দেখানো হয়েছে শ্রমিক দলপতির নামে। পুকুর খননে ব্যবহার করা ভেকু মেশিন মালিক আব্দুর রহিম বলেন, একাজে তার খরচ হয়েছে ৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা। তাকে ওই পুকুর খননের কাজে লাগায় সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এরশাদুল হক সরদার টুলু। কাজ চলার সময় এবং শেষে তাকে মাত্র সাড়ে ৪ লাখ টাকা দিয়েছেন। অবশিষ্ট টাকা দেয়-দিচ্ছি বলে হয়রানী করে চলেছে স্থানীয় ওই চেয়ারম্যান।
এদিকে উপকরণ খাতে বরাদ্দ সাড়ে ৬লাখ টাকার মধ্যে মাত্র ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার উপকরণ দিয়ে অবশিষ্ট টাকা মৎস্য কর্মকর্তা সুজয় পাল আত্মসাৎ করেছেন বলে মৎস্য বিভাগের উচ্চ মহলে অভিযোগ দিয়েছেন বিলের সমাজ ভিত্তিক মৎস্যচাষি সমবায় সমিতি লিমিটেড এর সভাপতি মিজানুর রহমান মিন্টু এবং সম্পাদক মো. মন্টু। এই অভিযোগ করার ঘটনা জানার পর মৎস্য কর্মকর্তা ও পুকুর খননের দায়িত্ব পালন করা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ঘটনা ধামাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে উঠে। তারা গত বৃহস্পতিবার অভিযোগকারিদের ডেকে নিয়ে সান্তাহার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে বৈঠক করে।
এ ব্যাপারে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুজয় পাল বলেন, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজে কোন দুর্নীতি হয়নি। ভুল বোঝার মাধ্যমে করা অভিযোগ বিষয়ে তাদের ভুল ভাঙানোর জন্য বৈঠক করা হয় বলে দাবি করেন ওই মৎস্য কর্মকর্তা। এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এরশাদুল হক সরদার টুলুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তার মুটোফোন বন্ধ থাকায় কথা বলা সম্বব হয়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সরকারি টাকা আত্মসাৎ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ