Inqilab Logo

সোমবার, ১৩ মে ২০২৪, ৩০ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে সাড়ে ১৭ মাসে ভর্তিকৃত ৫,৬০৯ জনের মধ্যে মারা গেছেন ১,৩৪৯ জন

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ২:১৬ পিএম

বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ও করোনা ওয়ার্ডে গতবছর ১৭ মার্চ গত ৩১ আগষ্ট ভর্তিকৃত ৭ হাজার ৫৩ জন রোগীর মধ্যে ১ হাজার ৩৪৯ জন মৃত্যুবরন করেছেন। গত ৪ দিনে হাসপাতালটিতে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার আরো ৪জন করোনা রোগী মারা গেছেন। তবে এসময়ে ৫ হাজার ৬০৯ জন সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরলেও মৃত্যুর সংখ্যাটা স্বাভাবিকের কিছু বেশী বলে মনে করছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগন। এসময়ে সুস্থ হয়ে ওঠাদের মধ্যে ১ হাজার ৮০৪ জনই ছিলেন করোনা পজিটিভ। আর মৃত ১,৩৩৯ জনের মধ্যে ৪০৫ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছিল বলে জানা গেছে। যাদের সবাই হাসপাতালটির করোনা ওয়ার্ডে মারা গেছেন।

অবশিষ্ট ৯৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে হাসপাতালটির আইসোলেশন ওয়ার্ডে। দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত করোনা সংক্রমনে যে ৬৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার ৪০৫ জনই শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।
করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত এ সরকারী চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখযোগ্য ভ’মিকা পালন করলেও চিকিৎসক ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে রোগী এবং তাদের স্বজনদের অভিযোগও রয়েছে। তবে এরপরেও গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে ১ হাজার বেডের এ হাসপাতালে প্রথমে ১২৫টি শয্যা নিয়ে করোনা ওয়ার্ড চালু করা হলেও ক্রমে তা বৃদ্ধি পেয়ে এখন তা ৩শর ওপরে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে আইসিইউ রয়েছে ৩০টি। হাসপাতালটির সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট সহ সিলিন্ডারের মাধ্যমেও এ পর্যন্ত প্রায় নিরবিচ্ছিন্ন সরবারহ অব্যাহত রয়েছে। তবে গত প্রায় দেড় বছরে হাসপাতালটি থেকে শতাধীক অক্সিজেন সিলিন্ডার গায়েব হয়ে যাবার একটি অভিযোগের তদন্তও চলছে।
ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় হাসপাতালটিতেও রোগীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। বর্তমানে এ হাসপাতালটির করোনা ও আইসেলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রোগী থাকছে ১শর নিচে। আইসিইউ’তে গড়ে ১০ জন রোগী চিকিৎসাধীন থাকেছ। যাদের অন্তত ৫০ ভাগই করোনা পজিটিভ । কয়েকদিন ধরে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে গড়ে ১৮০ জনের মত নমুনা পরিক্ষায় ২০-২২ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হচ্ছে। বতমানে শনাক্তের হার ১১Ñ১২%। অথচ একমাস আগেও এখানে নমুনা পরিক্ষায় শনাক্তের হার ছিল প্রায় ৭৫%।
হাসপাতালটিতে গত সাড়ে ১৭ মাসে ভর্তিকৃতদের মধ্যে ২ হাজার ৪শ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৭৭০ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। গড় শনাক্তের হার ছিল প্রায় ৩২%। এখন হাসপাতালটিতে ২৪ ঘন্টায় গড়ে ৪Ñ৬ জন কোভিড পজিটিভ সহ ১০-১২ জনকে করোনা ও আইসোশেন ওয়ার্ডে ভর্তি হলেও সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরছেন ১০Ñ১৪ জন। যাদের মধ্যে গড়ে ৫ জন পর্যন্ত কোভিড-১৯ রোগী।
এসব ব্যাপরে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সাইফুল আলম জানান, অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা অন্যসব রোগীর মত করোনা সংক্রমিতদের যথাযথ চিকিৎসার চেষ্টা করে যাচ্ছি । এখন পর্যন্ত এ হাসপাতালে সুস্থতার হার ভাল বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, আমাদের অনেক চিকিৎসক ও নার্স সহ স্বাস্থ্য কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তার পরেও চিকিৎসা ব্যবস্থা কোন ব্যত্যয় ঘটেনি।
এদিকে করোনা সংক্রমন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে পুনরায় সব ধরনের রোগী ভর্তি শুরু হয়েছে বুধবার থেকে। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর স্থান সংকুলন না হওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় আগষ্টের শুরুতে জেনারেল হাসপাতালটিতে ‘করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল’এ রূপান্তর করে। ফলে অন্যসব রোগী ভর্তি বন্ধ করে দেয়া হয়। গত প্রায় একমাসে হাসপাতালটিতে ৩ শতাধীক কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে মারা গেছেন দুজন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনা

৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
১০ ডিসেম্বর, ২০২২
৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ