বরিশাল শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ও করোনা ওয়ার্ডে এ পর্যন্ত ভর্তিকৃত ৭ হাজার ৫৩ জন রোগীর মধ্যে ১ হাজার ৩৪৯ জন মৃত্যুবরন করলেও ৫ হাজার ৬০৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। ঘরে ফেরাদের মধ্যে ১ হাজার ৮০৪ জনই ছিলেন করোনা পজিটিভ। আর মৃতদের মধ্যে ৪০৫ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছিল বলে জানা গেছে। যাদের সবাই হাসপাতালটির করোনা ওয়ার্ডে মারা গেছেন। অবশিষ্ট ৯৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে আইসোলেশন ওয়ার্ডে। দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় বুধবার সকাল পর্যন্ত করোনা সংক্রমনে যে ৬৫৪ জনের মৃত্যু হয়েছে, তার ৪০৫ জনই শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছেন।

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত এ সরকারী চিকিৎসা সেবা প্রতিষ্ঠানটি উল্লেখযোগ্য ভ’মিকা পালন করলেও চিকিৎসক ও চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে রোগী এবং তাদের স্বজনদের অভিযোগও রয়েছে। তবে এরপরেও গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে ১ হাজার বেডের এ হাসপাতালে প্রথমে ১২৫টি শয্যা নিয়ে করোনা ওয়ার্ড চালু করা হলেও ক্রমে তা বৃদ্ধি পেয়ে এখন তা ৩শর ওপরে। বর্তমানে হাসপাতালটিতে আইসিইউ রয়েছে ৩০টি। হাসপাতালটির সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট সহ সিলিন্ডারের মাধ্যমেও এ পর্যন্ত প্রায় নিরবিচ্ছিন্ন সরবারহ অব্যাহত রয়েছে। তবে গত প্রায় দেড় বছরে হাসপাতালটি থেকে শতাধীক অক্সিজেন সিলিন্ডার গায়েব হয়ে যাবার একটি অভিযোগের তদন্তও চলছে।
তবে ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে করোনা সংক্রমন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় হাসপাতালটিতেও রোগীর সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। বুধবার সকাল পর্যন্ত এ হাসপাতালটির করোনা ওয়ার্ডে ৯৫ জন ও আইসিইউ’তে ৯জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। যাদের মধ্যে ৪৯ জনই করোনা পজিটিভ । গত ২৪ ঘন্টায় শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে ১৭৯ জনের নমুনা পরিক্ষায় ২০ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ছিল ১১.১৭%।

হাসপাতালটিতে গত সাড়ে ১৭ মাসে ভর্তিকৃতদের মধ্যে ২ হাজার ৪শ জনের নমুনা পরিক্ষায় ৭৭০ জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। গড় শনাক্তের হার ছিল প্রায় ৩২%। বুধবার সকালে হাসপাতালটির আইসোলেশন ওয়ার্ডে ৪৬ জন ও করোনা ওয়ার্ডে ৪৯ জন কোভিড-১৯ পজিটিভ রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালটিতে ৪ জন কোভিড পজিটিভ সহ ১১ জনকে করোনা ও আইসোশেন ওয়ার্ডে ভর্তি হলেও এসময়ে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১০ জন। যাদের মধ্যে ৪ জনই কোভিড-১৯ রোগী ছিলেন।

এসব ব্যাপরে শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সাইফুল আলম জানান, অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও আমরা অন্যসব রোগীর মত করোনা সংক্রমিতদের যথাযথ চিকিৎসার চেষ্টা করে যাচ্ছি । এখন পর্যন্ত এ হাসপাতালে সুস্থতার হার ভাল বলেও জানান তিনি।
এদিকে করোনা সংক্রমন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হওয়ায় বরিশাল জেনারেল হাসপাতালে পুনরায় সব ধরনের রোগী ভর্তি শুরু হয়েছে বুধবার থেকে। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীর স্থান সংকুলন না হওয়ায় স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় আগষ্টের শুরুতে বরিশাল জেনারেল হাসপাতালটিতে ‘করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল’এ রূপান্তর করে অন্যসব রোগী ভর্তি বন্ধ করে দেয়। গত প্রায় একমাসে হাসপাতালটিতে ৩ শতাধীক কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।