গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
চট্টগ্রাম ব্যুরো : জন্মের কয়েক ঘণ্টার পর মৃত ঘোষণা করে প্যাকেটে পুরে টেপ মুড়িয়ে দেওয়া সে নবজাতক ইন্তেকাল করেছে। দুই দিনের জীবনে সে দেখে গেল চিকিৎসকের নিষ্ঠুর অবহেলা।
বুধবার বেলা দেড়টায় বন্দরনগরীর মেহেদিবাগের ম্যাক্স হাসপাতালের মহাব্যবস্থাপক রঞ্জনপ্রসাদ দাসগুপ্ত জানান, নবজাতকটি মারা গেছে। সোমবার রাতে নগরীর প্রবর্তক মোড়ের বেসরকারি হাসপাতাল সিএসসিআরে ওই শিশুর জন্ম হয়। দুর্বল শরীর নিয়ে (কম ওজন) পৃথিবীতে আসার পর মৃত ঘোষণা করে তাকে প্যাকেট বন্দি করার মাধ্যমে দ্রুত মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয় ওই হাসপাতালের চিকিৎসকরা। তার মা রিদওয়ানা কাউসার বান্দরবানের আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডেন্টাল সার্জন; আর বাবা নুরুল আজম কক্সবাজার জেলা হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার। জীবিত সন্তানকে মৃত ঘোষণার জন্য সিএসসিআরের নিওনেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (এনআইসিইউ) কর্তব্যরত চিকিৎসক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন তারা।
ডা. রিদওয়ানা অভিযোগ করেছেন, সোমবার রাত ১টায় তাকে লেবার রুমে নেওয়ার দুই ঘণ্টা পর তার বাচ্চাকে মৃত ঘোষণা করেন এনআইসিইউয়ে দায়িত্বরত চিকিৎসক। একটা প্যাকেটে আমার বাচ্চাকে আমার কেবিনে দিয়ে যায় তারা। আমি প্যাকেট খুলে দেখি আমার বাচ্চার চেস্ট মুভমেন্ট ও গ্যাসপিং রেস্পিরেশন (লম্বা শ্বাস) হচ্ছে। দ্রুত আমার বাচ্চাকে নিওনেটালে পাঠালে ওরা বারবার বাচ্চাকে মৃত বলতে থাকে। বাচ্চার মুভমেন্টকে তারা পাত্তাও দিল না। একটু ধরেও দেখল না। এরপর শিশুটিকে সিএসসিআর থেকে নেওয়া হয় ট্রিটমেন্ট হাসপাতালে। সেখান থেকে পরে নেওয়া হয় ম্যাক্স হাসপাতালে। মঙ্গলবার রাতেও মেয়েকে নিয়ে আশায় ছিলেন রিদওয়ানা; বলেছিলেন, সে মোটামুটি সুস্থ আছে। সিএসসিআর কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় অবহেলায় অভিযোগ এনে তিনি বলেন, তারা যদি বাচ্চাটাকে অক্সিজেন সাপোর্ট দিত, রিসাসিটেইট (জীবন ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা) করত, তাহলে ওর কন্ডিশন ইমগ্রুভ করত। ম্যাক্স হাসপাতালের চিকিৎসক মৌ জানিয়েছিলেন, সুস্থ নবজাতকের ওজন ২ দশমিক ৩ থেকে ২ দশমিক ৫ কিলোগ্রাম হয়, সেখানে রিদওয়ানার মেয়ের ওজন মাত্র ৫০০ গ্রাম।
এদিকে নবজাতকটিকে ‘মৃত’ ঘোষণার বিষয়টি তদন্তে এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছে সিএসসিআর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে জীবিত নবজাতককে ‘মৃত ঘোষণা’ করার ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে সিভিল সার্জন অফিস। শিশু বিশেষজ্ঞ মো. শাহ আলমকে আহ্বায়ক করে গঠিত এ কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- ডেপুটি সিভিল সার্জন অজিত কুমার দে ও সিভিল সার্জন অফিসের প্রধান সহকারী এসএম সাহেদুল ইসলাম। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন আজিজুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের নির্দেশে গঠিত কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।