Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যমুনায় ভাঙনের কবলে মসজিদ

ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৩১ আগস্ট, ২০২১, ২:৩৭ পিএম

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর ভারি বর্ষণে কয়েক সপ্তাহ ধরেই যমুনা নদীতে আশঙ্কাজনক হারে পানি বৃদ্ধির কারণে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। নদীর তীরবর্তী এলাকার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ বসতভিটা গিলে খাচ্ছে যমুনা। নদী ভাঙনের এই ভয়াবহতায় রক্ষা পায়নি বসতভিটা-সহ বিভিন্ন স্থাপনা। এরই ধারাবাহিকতায় মসজিদ বিলীনের পথে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি-উপজেলা প্রশাসন ও জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডও এই মসজিদটি রক্ষায় কোন ধরণের কার্যকর ভূমিকা রাখেননি বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

এ মসজিদটি উপজেলার গোবিন্দাসী ইউনিয়নের ভালকুটিয়া এলাকায় অবস্থিত। গত কয়েকদিন ধরেই যমুনার ভাঙনের মুখে পড়ে আছে মসজিদটি। প্রথম ধাপে নামাজের এই মসজটি রক্ষায় জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড এগিয়ে না আসলেও স্থানীয় কিছু তরুণ-যুবক ও এলাকার বয়োজ্যেষ্ঠ লোকজন ছাড়াও নানা বয়সী লোকজন প্লাস্টিকের বস্তায় মাটি ভরে ও মসজিদটি রক্ষায় নদীতে ফেলছেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, মসজিদের মিনারের অংশে ইতিমধ্যেই মাটি ধসে পিলার বেরিয়ে পড়েছে। পানির ঢেউয়ে ঢেউয়ে মাটি সরে যাচ্ছে সেখান থেকে। ফলে যে কোন সময় মসজিদটি নদী গর্ভে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

এদিকে, গেল রবিবার (২৯ আগস্ট) সকালে পানির তীব্র ¯্রােতে ভালকুটিয়া-চিতুলিয়া পাড়া রাস্তাটি ভেঙে যায়। এর ফলে আশপাশের গ্রামের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এতে করে মানুষের যাতায়াতে দুর্ভোগ বেড়ে যায়। বিকল্প কোন রাস্তা না থাকায় প্রায় ৩ কিলোমিটার ঘুরে এসব এলাকার মানুষ যাতায়াত করছেন। এছাড়া ভাঙনের ফলে কষ্টাপাড়া, খানুরবাড়ি, ভালকুটিয়া, স্থলকাশি, চিতুলিয়া পাড়া এলাকায় বন্যার পানি প্রবেশ করায় তাদেরও অনেকটা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

ভালকুটিয়া গ্রামের লিটন মিয়া বলেন, যমুনা নদীর তীরবর্তী হওয়ায় প্রতি বছর আমাদের বসত-ভিটা নদী গর্ভে চলে যাচ্ছে। তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থায়ী বেড়ি বাঁধ চাই। ভালকুটিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর মন্ডল (সাবেক চেয়ারম্যান) বলেন- আগ্রাসী যমুনার ভাঙনে নিঃস্ব শতশত পরিবার, বিলীন হয়ে গেছে অনেক বাড়িঘর, মসজিদ। বারবার অবহিত করলেও পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন ধরণের কর্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। ব্যক্তি উদ্যেগে এরআগে ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। এখন মসজিদটি রক্ষায় প্রশাসনিক সহযোগিতা প্রয়োজন। গোবিন্দাসী ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার বাবলু বলেন- মসজিদটি রক্ষায় স্থানীয় এমপি জিও ব্যাগ দেয়ায় কাজ শুরু হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান বলেন- উপজেলার ভালকুটিয়া এলাকায় মসজিদটি ভাঙনের মুখে পড়ার বিষয়টি জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবগত করা হয়েছে। যাতে করে তারা দ্রুত মসজিদটি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেয়। এদিকে, টাঙ্গাইল- ২ (ভূঞাপুর-গোপালপুর) আসনের স্থানীয় সাংসদ ছোট মনিরের নিজস্ব অর্থায়নে গত সোমবার (৩০ আগস্ট) দিনভর ভালকুটিয়ার ওই মসজিদটি রক্ষায় জিও ব্যাগ ফেলা শুরু করেছেন। ফলে ওই এলাকার লোকজনদের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যমুনায় ভাঙন
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ