পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গত এক দশকে দক্ষিণাঞ্চলে মাছের উৎপাদন প্রায় ৭৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। খাদ্যে উদ্বৃত্ত দক্ষিণাঞ্চলে ইতোমধ্যে মাছের উৎপাদন প্রায় ৬ লাখ টনে উন্নীত হয়ে আড়াই লাখ টন উদ্বৃত্ত রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চল ইতোমধ্যেই সাড়ে ৭ লাখ টন খাদ্য উদ্বৃত্বের টেকসই অবস্থান তৈরির পাশাপাশি গত এক দশকে মাছের উৎপাদনও বেড়েছে প্রায় ৭৫%। তবে এসময়ে দেশে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ৫৫%। দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় ৩.৩৮ লাখ টন মাছের চাহিদার বিপরীতে উৎপাদন ৬ লাখ টনের কছে। গত এক দশকে দক্ষিণাঞ্চলে ইলিশের উৎপাদন বেড়েছে ১১৫%। মৎস্য অধিদফতরের পরিসংখ্যানে সারা দেশের ৬৬% ইলিশ আহরিত হয় দক্ষিণাঞ্চলে। কৃষি ফসলের চেয়ে মাছে মুনাফা বেশি হওয়ায় গ্রামাঞ্চলে এখন মৎস্য চাষে আগ্রহ আরো বাড়ছে।
দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলার প্রায় ২৮ হাজার হেক্টর বদ্ধ জলাশয়, ৪ লাখ ২৭ হাজার ৮৪২ হেক্টর উন্মুক্ত জলাশয়, দেড় সহস্রাধিক বেসরকারি মৎস্য খামার, ৫০টির মত সরকারি-বেসরকারি মৎস্য হ্যাচারি, ৯২০টি নার্সারি খামার এবং প্রায় ৯ হাজার চিংড়ি খামারে মৎস্য উৎপাদনে ব্যাপক সাফল্য আসছে।
তবে অব্যাহত নগরায়নে বরিশাল মহানগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের জেলা শহরের মত অনেক উপজেলা সদরের পুকুর, দীঘি ও খালগুলো ক্রমাগত ভরাট হয়ে যাচ্ছে। যা আগামীতে দুঃসংবাদ বয়ে আনতে পারে বলেও মনে করছেন মৎস্য বিশেষজ্ঞরা।
তবে এরপরেও বর্তমানে দক্ষিণাঞ্চলের ৬টি জেলায় প্রায় ৪ লাখ ২৭ হাজার পুুকুর ও দীঘি, ৬৬৭টি বরোপীট, ৯০টি প্রবাহমান নদ-নদী, ৪৩টি বিল, একটি বাঁওড় বা মরা নদী, প্রায় দেড় হাজার খাল ও সোয়া ৬শ’ প্লাবন ভ‚মিসহ মোট জলাশয়ের পরিমাণ ৫৪ লাখ ৫৬ হাজার হেক্টরের মত। এসব জলাশয়ে মাছের উৎপাদন ২০০৮-০৯ সালে ২ লাখ ৯৮ হাজার টন থেকে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সোয়া ৫ লাখ টনেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়ছে। বর্তমানে তা প্রায় ৬ লাখ টন। যার মধ্যে ইলিশের উৎপাদনই প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টনের মত। এছাড়াও রুই জাতীয় মাছ প্রায় ৭৬ হাজার টন। পাঙ্গাস, শিং-মাগুর, কৈ, তেলাপিয়া এবং চিংড়ি ছাড়াও অন্যান্য মাছের উৎপাদনও ১ লাখ ২০ হাজার টনের মত। এসময়ে দক্ষিণাঞ্চলের সরকারি-বেসরকারি ৫০টি হ্যাচারি ও ৯২৩টি নার্সারিতে প্রায় ২৫ হাজার কেজি রেনু ও প্রায় ৩০ লাখ মাছের পোনা উৎপাদন হচ্ছে।
দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৫ লাখ জেলে মৎস্য খাতের ওপর নির্ভরশীল। যার মধ্যে মৎস্য অধিদফতরের নিবন্ধিত জেলে ৩ লাখ ৫২ হাজার ৭২৪। মৎস্য অধিদফতরের মতে, বরিশাল বিভাগেই প্রায় সোয়া ৩ লাখ জেলে ইলিশ আহরণে জড়িত। যার ৬৫% সার্বক্ষণিকভাবে জড়িত বলে মৎস্য অধিদফতর সূত্রে বলা হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন উন্মুক্ত জলাশয়ে ‘খাঁচায় মাছ চাষ’ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলেও প্রায় দেড় হাজার খাঁচায় বছরে প্রায় ১ হাজার টন বিভিন্ন ধরনের মাছ উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়া এ অঞ্চলে কাঁকড়া ও কুচিয়া চাষ সম্প্রসারণেও সাফল্য আসছে। ইতোমধ্যে এ অঞ্চলের ৫টি জেলার ১১টি উপজেলার পুকুরে কিশোর কাঁকড়া চাষ, পেনে কাঁকড়া মোটাতাজাকরণ, খাঁচায় কাঁকড়া মোটাতাজাকরণ ও সামাজিক পর্যায়ে কুচিয়া চাষের ২৫টি প্রদর্শনী খামার স্থাপন করা হয়েছে।
ফলে দক্ষিণাঞ্চলের ৭৩৫টি খামারে বছরে ৩শ’ টনেরও বেশি কাঁকড়া উৎপাদন হচ্ছে। এছাড়াও দক্ষিণাঞ্চলের ৮টি উপজেলার প্রায় তিন হাজার মৎস্যজীবী বছরে ১ হাজার টনেরও বেশি শুটকি উৎপাদন করছে।
তবে এসব অর্জনের পরেও দক্ষিণাঞ্চলে মৎস্য অধিদফতরের অবস্থা খুব ভালো নয়। জনবল সঙ্কটে এ অধিদফতরের কার্যক্রম অনেকটাই অচলাবস্থার মুখে। ৬টি জেলার ৪২টি উপজেলার জন্য মৎস অধিদফতরের যে মাত্র ১৬৭টি জনবল মঞ্জুরি রয়েছে, তার অর্ধেকেরও বেশি পদ শূন্য। সিনিয়র সহকারী পরিচালক, সহকারী পরিচালক, সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, মৎস্য স¤প্রসারণ কর্মকর্তা, মৎস্য স¤প্রসারন ও মান নিয়ন্ত্রণ কর্মকতা ও মৎস্য জরিপ কর্মকর্তার বেশিরভাগ পদেই জনবল নেই। খামার ব্যবস্থাপক ও সহকারী মৎস্য কর্মকর্তার ৪২টি পদেরও বেশিরভাগই শূন্য।
এসব বিষয়ে মৎস্য অধিদফতরের বরিশাল বিভাগীয় উপ-পরিচালক জানান, নদ-নদী ও খাল-বিল সমৃদ্ধ দক্ষিণাঞ্চলে মাছ চাষের অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে উন্নত প্রযুক্তিতে মাছ চাষ স¤প্রসারণে অধিদফতর উদ্যোক্তাদের প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে। অধিদফতরের জনবল সঙ্কটের বিষয়টি সদর দফতর ও মন্ত্রণালয়কে নিয়মিত অবহিত করার কথা জানিয়ে অদূর ভবিষ্যতে এ সঙ্কট কাটিয়ে ওঠা যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।