Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

স্বপ্নের ঠিকানায় আনন্দ

স্টাফ রিপোর্টার, মাদারীপুর থেকে : | প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোয়া ছাড়া আর কি দিতে পারি? তাঁকে দেওয়ার মতো আমাগো তো আর কিছুই নাই। তিনি যে মমতাময়ী মা। আইজ তাঁর জন্যিই তো আমরা মাথা গোঁজার ঠাঁই পাইলাম। সুন্দর ঘর পাইছি; জমি পাইছি। অহন কইতে পারি আমরা ভ‚মিহীন না। যা কোনো দিন স্বপ্নেও দেহি নাই। এর থাইক্যা আনন্দের আর কি আছে? এতোদিন আমরা মাইনষের বাড়িতে, অন্যের জমিতে খুপড়ি বানাইয়্যা থাকতাম। আইজ এহানে তো কাল অন্যহানে থাকতাম। কতোজনে কতো কথা কইছে। জাগা খালি কইরা দেও, তোমরা সমাজের জঞ্জাল; তোমাগো জন্যি আমাগো যতো জ্বালা। অহন আর কেউ এ সব কথা কইবো না। অহন মাথা উইচা কইরা কইতে পারুম, আমরা সমাজের জঞ্জাল না, আমরাও মানুষ। নামাজ পইড়্যা আল কাছে প্রধানমন্ত্রীর জন্যি দোয়া করি, তিনি যেনো আরো অনেক দিন বাঁইচ্যা থাহেন, আমাগোর মতোন আরো অনেক অসহায় মাইষেরে যেনো ঘরবাড়ি-জমি দিতে পারেন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি এমন কৃতজ্ঞতা ও অনুভ‚তি প্রকাশ করলেন মাদারীপুর সদর উপজেলার পেয়ারপুর ইউনিয়নে নির্মিত আশ্রয়ন প্রকল্পে জমিসহ ঘর পাওয়া বৃদ্ধা আছিয়া বেগম, গৃহবধূ নাজমা বেগম ও বৃদ্ধ আবদুল ওয়াহেদ তালুকদার। তাদের মতো একই অনুভ‚তি জানালেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাওয়া সুবিধাভোগীরা।
গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত পেয়ারপুর আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সবুজে ঘেরা প্রাকৃতিক পারিবেশে গড়ে তোলা হয়েছে দীর্ঘ লাইনে সারি সারি ঘর। সুন্দর এবং মজবুত এসব ঘরের পেছনে-সামনে নানা জাতের সবুজ বনানীর শীতল ছায়া। প্রতিটি ঘরের সামনে যার যার সীমানার খোলা জায়গা। কেউ বাগান করেছে, কেউ করেছে সবজি চাষ, কেউ আবার নিজের ঘরটির সামনে রঙিন তোরণ নির্মাণ করে আরো দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে। সীমানার সামনে রাস্তা এবং রাস্তার পাশে সারি সারি গাছ। সবুজ পল্লবী পরিবেশ যেনো অক্সিজেনের ফ্যাক্টরি। রয়েছে সার্বক্ষণিক ফ্রি বিদ্যুৎ সুবিধা। প্রকল্পের সামনে দিয়ে বয়ে গেছে লোয়ার কুমার নদী। সাংসারিক কাজের জন্য নদীটি সুবিধাভোগীদের জন্য আশির্বাদস্বরূপ। বিশুদ্ধ পানীয় জলের চাহিদা মেটাতে প্রতি ১০ পরিবারের জন্য স্থাপন করা হয়েছে একটি করে ডিপটিউবয়েল। প্রতিটি ঘর সাজানো-গোছানো বেশ পরিপাটি। অনেকের ঘরে নিজেরাই টাইলস বসিয়ে আরো আকর্ষনীয় করে তুলেছে।
মাদারীপুর সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আমরা দু’দফায় ১৭৫টি ঘর বরাদ্দ পেয়েছি। এর মধ্যে ১০০ ঘর নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করে প্রতি পরিবারে ২ শতাংশ জমিসহ ঘরগুলো সুবিধাভোগীদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ৭৫টি ঘরের নির্মাণ প্রক্রিয়া চলমান আছে। কাজ শেষ হলেই তা হস্তান্তর করা হবে।
গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার সুন্দর ও মানসম্পন্ন হওয়ার কারণ জানতে চাইলে মাদারীপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুদ্দিন গিয়াস বলেন, আমরা নিজেদের তত্ত্বাবধানে ঘরগুলো নির্মাণ করেছি। আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহার শতভাগ ত্রুটিমুক্ত করার। আমাদের আরো পরিকল্পনা আছে আশ্রয়ন প্রকল্পে সুবিধাভোগী পরিবারগুলোর সন্তানরা যাতে লেখাপড়া শিখতে পারে সেজন্য প্রাক-প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা। এ জন্য স্থান নির্ধারণ করে মাটি দিয়ে জায়গা ভরাট করা হচ্ছে। পাশাপাশি নদী সংলগ্ন বড় আশ্রয়ন প্রকল্পের সামনে লোয়ার কুমার নদে কয়েকটি ঘাটলা তৈরি করার পরিকল্পনাও রয়েছে। যাতে পানির জন্য অসহায় মানুষগুলো কষ্ট না পায়।
জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন সাংবাদিকদের বলেন, বরাদ্দ অনুযায়ী আমাদের জেলার ঘরগুলো উন্নতমানের। জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ঘরগুলো নির্মাণ করায় এর গুণগতমান ভালো হয়েছে। দেশের কয়েকটি জেলার আশ্রয়ন প্রকল্পে ঘর নির্মাণে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এরপরে সরকার কিছুটা বরাদ্দ বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে আশা করি দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের ঘরগুলো আরো উন্নমানের হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্বপ্নের ঠিকানায় আনন্দ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ