Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

দক্ষিণাঞ্চলে মাল্টার আবাদ বাড়ছে

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৯ আগস্ট, ২০২১, ১২:০০ এএম

দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বিপুল সম্ভবনাময় রসালো ফল মাল্টার আবাদ ক্রমশ বাড়ছে। গত কয়েক বছরে বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি ও পটুয়াখালীর বেশ কিছু এলাকায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এ ফলের আবাদ সম্প্রসারণ ঘটেছে। পারিবারিক পর্যায়ের বাইরে বাণিজ্যিকভাবেও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে মাল্টার আবাদ হচ্ছে। ভালো জাত ও মানের মাল্টার কলম বা চারার সরবরাহ এখনো সহজলভ্য নয়।

অথচ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ইতোমধ্যে বারি মাল্টা-১ ও বারি মাল্টা-২ নামের দুটি উন্নতমানের মাল্টার জাত উদ্ভাবন করেছে। ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে বারি মাল্টা-১ এর আবাদ শুরু হয়েছে। সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত ৩ হাজার হেক্টরে মাল্টার আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমেই বাণিজ্যিকভাবে এর বিপণনও শুরু হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের মাল্টা এ এলাকা ছাড়িয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানেও বাজারজাত হচ্ছে।
মাঠ পর্যায়ের কৃষিবিদদের মতে, ভালো জাতের ও মানের চারা ও কলমের সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারলে দক্ষিণাঞ্চলে খুব দ্রুত এ ফলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে টেকসই বাজার গড়ে উঠবে। ফলে অদূর ভবিষ্যতেই বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে মাল্টার আমদানি বহুলাংশে হ্রাস করাও সম্ভব হতে পারে বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা।
গত কয়েক বছরে বরিশাল সদরের কয়েকটি এলাকা ছাড়াও উজিরপুর, আগৈলঝাড়া, পিরোজপুরের নেছারাবাদ ও নাজিরপুর, ঝালকাঠির সদর উপজেলার বিপুল সংখ্যক গ্রামে মাল্টা’র আবাদ হচ্ছে। তবে এ ফলের ভালো মানের কলম কিছুটা দুস্প্রাপ্য হওয়ায় কোন কোন এলাকায় এর উৎপাদন মানসম্মত হচ্ছে না।
বরিশালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের রহমতপুর হর্টিকালচার নার্সারি ভালোজাত ও মানের চারা উত্তোলন ও বিক্রি করছে। তবে প্রচারণার অভাবে তা বেশিরভাগ কৃষকেরই অজানা। আবার সেখানে চারার দুস্প্রাপ্যতাও রয়েছে। এবার বর্ষা মৌসুম শেষ হবার আগেই ওই নার্সারিতে মাল্টার চারা নিঃশেষ হয়ে গেছে।
ভালোমানের চারা রোপন করলে দু’বছরের মাথায়ই গাছে ফল আসছে। সঠিক বালাই ও সার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে প্রতিটি গাছে বছরে ২শ’র ওপরে মাল্টা ধরে থাকে। বরিশালের বাজারে এখন দেশি মাল্টা সর্বনিম্ন ১শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। যা কৃষক পর্যায়ে পাইকাররা ৬০-৬৫ টাকা দরে কিনছেন। কৃষিবিদদের মতে, সঠিক পরিচর্যা করলে প্রতিটি গাছ থেকে মৌসুমে ৪০ কেজি পর্যন্ত মাল্টা পাওয়া সম্ভব। এতে করে জমি তৈরি, চারা সংগ্রহ এবং সার ও বালাই ব্যবস্থাপনাসহ পরিচর্র্যার ব্যয় প্রথম ফলন থেকেই তুলে আনা সম্ভব।
কিন্তু চারা সহজলভ্য করা ও আবাদ প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে পৌছে দেয়ার অভাবে এখনো দক্ষিণাঞ্চলের কৃষক পর্যায়ে মাল্টা’র আবাদ সম্পর্কে যথাযথ বার্তা পৌছাচ্ছে না। ফলে এ ফল আবাদ যতটা সম্প্রসারণ হবার কথা, ততটা না হলেও গত ২-৩ বছরে আবাদ বেড়েছে আশাব্যঞ্জকভাবে। এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের বরিশাল কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক জানান, দক্ষিণাঞ্চলে এ ফলের আবাদ সম্প্রসারণের যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি কৃষক পর্যায়ে এর আবাদ প্রযুক্তিসহ উন্নতমানের চারা পৌঁছে দিতে।
বরিশালের রহমতপুরে ডিএই’র হর্টিকালচার নার্সারির দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিচলক জানান, আমরা চলতি বর্ষা মৌসুমে বিপুল সংখ্যক বাড়ি-১ মাল্টার চারা সরবরাহ করেছি। আগামীতে তা আরো বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। তার মতে, মাল্টা আবাদের বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে আগামী দশ বছরের মধ্যে এ ফল আমদানির প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যেতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাল্টার আবাদ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ