Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলে ভিনদেশী ফল মালটা’র আবাদ আশাব্যঞ্জকভাবে সম্প্রসারন ঘটছে

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ২৮ আগস্ট, ২০২১, ১০:৪৬ এএম

দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় বিপুল সম্ভবনাময় রসালো ফল ‘মালটা’র আবাদ ক্রমশ বাড়ছে। গত কয়েক বছরে বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠী ও পটুয়াখালীর বেশ কিছু এলাকায় ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এ ফলের আবাদ যথেষ্ঠ সম্প্রসারন ঘটেছে। পারিবারিক পর্যায়ের বাইরে এখন বানিজ্যিক ভাবেও দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে মালটা’র আবাদ হচ্ছে। তবে এ অঞ্চলে ভাল জাত ও মানের মালটা’র কলম বা চাড়ার সরবারহ এখনো সহজলভ্য নয়। অথচ আমাদের কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট ‘বারি’ ইতোমধ্যে ‘বারি মালটা-১’ ও বারি মালটা-২’ নামের দুটি উন্নতমানের মালটা’র জাত উদ্ভাবন করেছে। ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্নস্থানে ‘বারি মলটা-১’এর আবাদ শুরু হয়েছে। সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও ইতোমধ্যে দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত ৩ হাজরার হেক্টরে মালটার আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমেই বানিজ্যিকভাবে এর বিপননও শুরুর হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের মালটা এ এলাকা ছাড়িয়ে রাজধানী সহ দেশের বিভিন্নস্থানেও বাজারজাত হচ্ছে।
মাঠ পর্যায়ের কৃষিবীদদের মতে ভাল জাতের ও মানের চাড়া ও কলমের সরবারহ নিশ্চিত করতে পারলে দক্ষিণাঞ্চলে খুব দ্রুত এ ফলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে টেকসই বাজার গড়ে উঠবে। ফলে অদুর ভবিষ্যতেই বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ব্যায়ে মালটার আমদানী বাহুলাংশে হ্রাস করাও সম্ভব হতে পারে বলে মনে করছেন কৃষিবীদগন।
গত কয়েক বছরে বরিশাল সদরের কয়েকটি এলাকা ছাড়াও উজিরপুর ও আগৈলঝাড়া এবং পিরোজপুরের নেসারাবাদ, নাজিরপুর সহ ঝালকাঠীর সদর উপজেলার বিপুল সংখ্যক গ্রামে মালটা’র আবাদ হচ্ছে। তবে এ ফলের ভাল মানের কলম কিছুটা দুস্প্রাপ্য হওয়ায় কোন কোন এলাকায় এর উৎপাদন মানসম্মত হচ্ছে না।
বরিশালে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের রহমতপুর হর্টিকালচার নার্সরী ভালজাত ও মানের চাড়া উত্তোলন ও বিক্রী করলেও প্রচারনার অভাবে তা বেশীরভাগ কৃষকেরই অজানা। আবার সেখানে চাড়ার দুস্প্রপ্যতাও রয়েছে। এবার বর্ষা মৌসুম শেষ হবার আগেই ঐ নার্সারীতে মালটার চাড়া নিঃশেষ হয়ে গেছে।
ভালমানের চাড়া রোাপন করলে দুবছরের মাথায়ই গাছে ফল আসছে। সঠিক বালাই ও সার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে প্রতিটি গাছে বছরে ২শর ওপরে মালটা ধরে থাকে। বরিশালের বাজারে এখন দেশী মালটা সর্বনি¤œ ১শ টাকা কেজি দরে বিক্রী হচ্ছে। যা কৃষক পর্যায়ে পাইকাররা ৬০-৬৫ টাকা দরে কিনছেন। কৃষিবীদদের মতে সঠিক পরিচর্যা করলে প্রতিটি গাছ থেকে মৌসুমে ৪০ কেজি পর্যন্ত মালটা পাওয়া সম্ভব। এতে করে জমি তৈরী, চাড়া সংগ্রহ এবং সার ও বালাই ব্যবস্থাপনা সহ পরিচর্র্জার ব্যায় প্রথম ফলন থেকেই তুলে আনা সম্ভব।
কিন্তু চাড়া সহজলভ্য করা সহ আবাদ প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে পৌছে দেয়ার অভাবে এখনো দক্ষিনাঞ্চলের কৃষক পর্যায়ে অত্যন্ত অর্থকারী ফসল মালটা’র আবাদ সম্পর্কে যথাযথ বার্তা পৌছছে না। ফলে এ ফল আবাদ যতটা সম্প্রসান হবার কথা, ততটা না হলেও গত ২-৩ বছরে আবাদ বেড়েছে আশাব্যঞ্জক ভাবে। এব্যাপরে কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের বরিশাল কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক জানান, দক্ষিনাঞ্চলে এ ফলের আবাদ সম্প্রসারনের যথেষ্ঠ সম্ভবনা রয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি কৃষক পর্যয়ে এর অবাদ প্রযুক্তি সহ উন্নতমানের চাড়া পৌছে দিতে।
বরিশালে রহমতপুরে ডিএই’র হর্টিকালচার নার্সারীর দায়িত্ব প্রাপ্ত উপ-পরিচলক জানান আমরা চলতি বর্ষা মৌসুমে বিপুল সংখ্যক ‘বাড়ি-১ মালটা’র চাড়া সরবারহ করেছি। আগামীতে তা আরো বৃদ্ধির চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি। তার মতে মালটা আবাদের বর্তমান ধরা অব্যাহত থাকলে আগামী দশ বছরের মধ্যে এ ফল আমদানীর প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যেতে পারে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ