গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
সরকার হটানোর আন্দোলনের জন্য আগাম প্রস্তুতির ডাক দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমি আগাম আন্দোলনের প্রস্তুতির আহবান জানাচ্ছি। আমাদেরকে রাস্তায় নামতে হবে, রাস্তায় নেমে আসতে হবে, সোচ্চার হতে হবে এবং আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ সরকারকে পরাজিত করতে হবে। তাদেরকে বাধ্য করতে হবে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় দেশে একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দেয়ার জন্য। যার মধ্য দিয়ে জনগণ ভোট দিয়ে তার প্রতিনিধিকে নির্বাচিত করবে, সরকার গঠন করবে।
বৃহস্পতিবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর গোড়ানে ফ্রেন্ডস কনভেনশন সেন্টারে ঢাকা-১০ আসনের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে ‘করোনা হেল্প সেল’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, বাংলাদেশকে যদি আমরা মুক্ত করতে না পারি, আওয়ামী লীগকে যদি সরাতে না পারি, তাহলে তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারবো না, বেগম খালেদা জিয়াকেও মুক্ত করতে পারব না। আমরা হাজার হাজার মানুষ যে মিথ্যা মামলা নিয়ে বসে আছি আমরাও মুক্ত হতে পারবো না।
তিনি বলেন, এখন আমাদেরকে উঠে দাঁড়াতে হবে। আমরা ১০/১২ বছর ধরে সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি। আমাদের ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়েছে, আমাদের ৫‘শ বেশি ভাই গুম হয়ে গেছে, হাজারের উপর মানুষ খুন হয়ে গেছে, অনেককে পঙ্গু করে দিয়েছে। সুতরাং আন্দোলন ছাড়া আমাদের কোনো বিকল্প নেই। বিশেষ করে তরুণ-যুবক যারা আছেন তাদেরকে জেগে উঠতে হবে। পরিবর্তনে আসে সবসময় তরুণদের মাধ্যমে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, কথা বললেই বলে যে আমরা সমালোচনা করি। সরকারের দোষ-ত্রুটি দেখিয়ে দেয়া বিরোধী দলের দায়িত্ব। আপনারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হচ্ছেন মানুষের জীবন-জীবিকা রক্ষা করতে। আপনারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন এই করোনা মোকাবিলা করতে এবং জনগণের সাথে প্রতারণা করেছেন, মিথ্যা কথা বলেছেন। টিকা নিয়ে যে তেলেশমাতি কান্ড তারা করেছে তার একমাত্র কারণ হচ্ছে-চুরি করা। টিকা নিয়ে দুর্নীতি করেছে, ব্যবসা করতে চেয়েছে, মানুষের জীবনকে জিম্মি করে তারা টিকা নিয়ে ব্যবসা করছে। টিকার দাম বলে না- কত দিয়ে কিনছে তাও বলে না। আজকে যে টিকা ৩ ডলারে পাওয়া যায় সেই টিকা তারা কিনছে ১০ ডলারে।
অপহরণের সাথে জড়িত থাকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, দিনাজপুরে একজন এএসপিসহ ৫ জন পুলিশ কর্মকর্তা গ্রেফতার হয়েছে। কেনো? অপহরণ করার দায়ে। যাবে কোথায় মানুষ। পুলিশের অফিসাররা যদি অপহরণ করে, ৫০ লাখ টাকা চায় দেশের মানুষ যাবে কার কাছে? চট্টগ্রামের কক্সবাজারে মেজর সিনহা হত্যা মামলা শুরু হয়েছে। কী ভয়ংকর? একজন পুলিশ অফিসার সরাসরি গুলি করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য পা দিয়ে গলা চেপে ধরেছে। চিন্তা করতে পারা যায় কী অমানবিক? আমরা জানি আমাদের অনেক পরিবার আছেন, অনেক ভাই-বন্ধু আছেন যাদের ছেলেরা গুম হয়ে গেছে, যাদের সন্তান গুম হয়ে গেছে। এই পুলিশ বাহিনী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে তারা এসব করিয়েছে। সেজন্য এদেশের মানুষ অসহায়ের মধ্যে পড়েছে তারা কোথায় যাবে? বিচারালয়ে যাবে, কোর্টে যাবে সেখানেও দলীয়করণ, দল হিসেবে মানুষের বিচার হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, সরকার মুখে গণতন্ত্রের কথা বলে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছে। সাংবাদিক ভাইয়েরা নিজেরা কিছু লিখতে পারবেন না, সাহস করে লেখার শক্তি নাই। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ বিভিন্ন আইন দিয়ে গণমাধ্যমের মুখ বন্ধ করে দিয়েছে। এটা কোনোভাবে একটা গণতান্ত্রিক দেশ হতে পারে না, এটা সম্পূর্ণ ভাবে একটা কর্তৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী দেশে পরিণত হয়েছে। এখন আমাদেরকে উঠে দাঁড়াতে হবে।
জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও খিলগাঁও থানা সভাপতি ইউনুস মৃধার পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিব, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।