বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
মেধাবী কলেজ শিক্ষার্থী জাকিয়া সুলতানা রূপা হত্যার ৪ বছরেও রায় কার্যকারী না হওয়ায় দ্রুত রায় কার্যকরের দাবিতে মানববন্ধন পালন করেছে রূপার পরিবার। গতকাল বুধবার সকালে তাড়াশ উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানবন্ধনে নিহত রুপার মা হাসনা হেনা খাতুন কান্না জড়িতকন্ঠে বলেন রুপা হত্যার ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও রায় কার্যকর হচ্ছে না। আমার একটাই দাবি মুত্যুর আগে রায় কার্যকরের মাধ্যমে আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক।
এ সময় মামলার বাদী রূপার বড় ভাই সংবাদ পত্রের এজেন্ট মো. হাফিজুর রহমান বলেন, দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রয়ারী খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। এরপর চাঞ্চল্যকর এ মামলায় শুনানি শুরু হয়নি। নিম্ন আদালতে দ্রততম সময়ে মামলার রায় ঘোষণা করে এতে আমরা সন্তুষ্ট হয়ে ছিলাম। কিন্তু উচ্চ আদালতে আসামিদের আপিলের পর মামলাটি গত ৪ বছর ঝুলে থাকায় আমরা হতাশ হয়ে পড়েছি। এতে আমরা ন্যায় বিচার পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত।
তিনি আরো বলেন, ক্ষতিপূরণ হিসেবে ছোঁয়া পরিবহনের বাসটি আমাদেরকে দেয়ার আদেশ আদালতের আদেশও কার্যকর হয়নি। গত ৪ বছর হলো অপেক্ষায় আছি, কবে দেখবো আমার বোনের হত্যাকারীদের ফাঁসি হয়েছে।
উল্লেখ, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টে টাঙ্গাইলের মধুপুরে চলন্ত বাসে রূপাকে গণধর্ষণের পর নৃংশসভাবে হত্যা করে পঁচিশ মাইল নামক স্থানে ফেলে দেয় ধর্ষককারী বাসের স্টাফ। পরে মধুপুর থানা পুলিশ রুপার লাশ উদ্ধার করে। এ নিয়ে তখন সারাদেশে চাঞ্চল্যকর ঘটনা হিসেবে আলোড়ন সৃষ্টি করে। পরিচয় না পেয়ে ২৬ আগস্ট ময়নাতদন্ত শেষে বেওয়ারিশ হিসেবে টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। এরপর ২৭ আগস্ট নিহতের বড়ভাই হাফিজুর রহমান বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদে দেখে মধুপুর থানায় রক্তাক্ত লাশের ছবি শনাক্ত করেন যে অজ্ঞাত লাশটি তার ছোট বোন রুপার। পরে ৩১ আগস্ট রুপার লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। ওইদিন রাতেই সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার আসানবাড়ি গ্রামের কবরস্থানে রুপার লাশ দাফন করা হয়। নিহত রুপা আসানবাড়ি গ্রামের মৃত জেলহাজ প্রামানিকের মেয়ে।
ঘটনার জন্য টাঈাইল জেলা আদালত রূপা ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় অভিযোগে ছোঁয়া পরিবহণের ৪ শ্রমিককে দোষী সাব্যস্থ করে। ২০১৭ সালের ২৮ আগস্ট এ ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ময়মনসিংহ-বগুড়া সড়কের ছোঁয়া পরিবহণের হেলপার শামীম (২৬), আকরাম (৩৫) ও জাহাঙ্গীর (১৯) এবং চালক হাবিবুর (৪৫) ও সুপারভাইজার সফর আলীকে (৫৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা প্রত্যেকেই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর নিম্ন আদালতে ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী ৪ আসামীর মৃত্যুদন্ড ও ১ জনের ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড হওয়ার পর তারা জেলে রয়েছেন। তাছাড়া ২০১৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারীর সকল আসামি খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন। এরপর গত ৪২ মাসেও চাঞ্চল্যকর রুপা গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার আপিল শুনানি শুরুই হয়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।