গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
সরকার হটাতে জনগণের অভ্যুত্থান ছাড়া কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের হাতে অস্ত্র নেই, আমরা অস্ত্রবাজ নই। আমরা সশস্ত্র সংগ্রামের বিশ্বাস করি না। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বিজয় অর্জন করতে চাই।
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে কারাবন্দী সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে ‘রুহুল আমিন গাজী মুক্তি পরিষদের’ উদ্যোগে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের একটু আশ্রয়-প্রশ্রয় পাওয়ার জন্য কিছু সংবাদপত্রের কর্মী মরিয়া হয়ে চাটুকারিতা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমার দুঃখ হয়, কষ্ট হয়, এই সংবাদপত্রের কর্মী বা সংবাদপত্রের যারা মালিক তাদের একটা বিরাট অংশ আজকে উচ্ছিষ্ট ভোগী হয়ে গেছে। তারা সরকারের একটু সুন্দর দৃষ্টি দেখলে, সরকার একটু আশ্রয়-প্রশ্রয় পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে চাটুকারিতা করছে। যার ফলে ভিন্নভাবে একটা সংবাদমাধ্যম তৈরি হয়ে গেছে বাংলাদেশে। ইলেক্ট্রনিক, প্রিন্ট মিডিয়াগুলো দেখুন-কী অবস্থা তৈরি হয়ে গেছে। একটা-দুইটা পত্রিকা, যারা একটু লিখতেন তারাও লিখতে সাহস করেন না। আমি তাদেরকে দোষারোপ করি না, আমি বলছি যে দেশে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, এরা রাষ্ট্র ও সরকারকে এক করে ফেলেছে এবং সবকিছুতে দলীয়করণ করে ফেলেছে। আওয়ামী লীগ একটি দলটি কখনোই গণতন্ত্রের বিশ্বাস করেনি। আওয়ামী লীগই সেই দল যারা ১৯৭৫ সালে একদলীয় বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিলো সমস্ত দলগুলোকে নিষিদ্ধ করে দিয়ে, পত্রিকা সব বন্ধ করে দিয়েছিলো।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই সরকারের জনগণের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই। যারা জনগণের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতার বিরুদ্ধে, সংবিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা আজকে এদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। প্রকৃত পক্ষে একটা তাবেদার রাষ্ট্র হয়েই গেছে। এই সরকার একটা পুতুল সরকার। যার ফলে এদেশে মানুষের কোনো স্বাধীনতা নেই, কথা বলার স্বাধীনতা নেই।
সরকার সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোথায় তাকে সফল বলবেন। একমাত্র চুরি ছাড়া, দুর্নীতি ছাড়া আর ডাকাতি ছাড়া কোথাও সফল না। করোনা টিকা সংগ্রহেও সরকারের চরম অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলেন তিনি।
রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে ঢাকায় একটি কনভেশন অনুষ্ঠানের পরামর্শ দিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আসুন গাজী সাহেবের মুক্তির আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর করে তুলি, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের জন্য আমরা আন্দোলন গড়ে তুলি, আমরা যেসমস্ত নিবর্তনমূলক আইন আছে তা বাতিলের জন্য আন্দোলন গড়ে তুলি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, সবচেয়ে বড় যে দাবিতে আমাদের সোচ্চার হওয়া দরকার তা হচ্ছে- এই মুহূর্তে এই ব্যর্থ ফ্যাসিবাদী সরকারকে পদত্যাগ করে নিরপক্ষে সরকারের অধীনে এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের পরিচালনায় একটা সুষ্ঠু নির্বাচন দিতে হবে। আসুন সেই লক্ষ্যে আমরা সকলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করি। ইজরাইল থেকে টেলিফোন হ্যাকিং ডিভাইস এনে সরকার মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, যে যেরকম করে পারেন লড়াইটা ছাড়বেন না। খুব যে বেশিদিন লাগবে এরকম বোধহয় না। ভবিষ্যত বাণী করার আমি কেউ নয়। কিন্তু আমি দেখছি যে, এই সরকার পতনের আগে সারা দুনিয়াতে যেরকম জ্বরে কাঁপতে থাকে অথবা কোনো জ্বর ছাড়াও কাঁপতে থাকে এরা এরকম কাঁপতে শুরু করেছে। ওদের একেক জায়গার দুর্বলতা মানুষের সামনে প্রকাশ পাচ্ছে। সেটা পুলিশের কথা বলেন, প্রশাসনের কথা বলেন, মন্ত্রিসভার কথা বলেন, সরকারি যারা লোক আছে তাদের কথা, সরকারি দলের লোকের কথা বলেন সর্বত্র ক্ষোভ। পায়ের নিচে থেকে মাটি তাদের চলে যাচ্ছে। এটার পতন হবেই কেউ ঠেকাতে পারবে না।
সংগঠনের আহবায়ক সাংবাদিক আলমগীর মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে আমিরুল ইসলাম কাগজীর সঞ্চালনায় এই সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পারোয়ার, সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার, কামাল উদ্দিন সবুজ, বাকের হোসাইন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মোরসালীন নোমানী, কারাবন্দী নেতা রুহুল আমিন গাজীর ছেলে আরফান আবরার আমিন প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।