রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
এম এস এমরান কাদেরী, বোয়ালখালী (চট্টগ্রাম) থেকে
বয়সের ভারে নুজ্যু সত্তরোর্ধ হাফিজা বেগম, থাকেন নগরীর চকবাজার এলাকায়, আসছেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী পৌরসভার চরখিদির পুরের হাজিরপুল সড়কস্থ এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে। কিন্তু সড়কটির বেহাল অবস্থা দেখে গাড়ির চালক পথিমধ্যে তাদের নামিয়ে দিলে কিছুটা বিব্রত অবস্থায় পড়ে যান তারা। তখন তাদেরকে বলতে শুনা যায়, অ-বাজি ইবা কি রাস্তা-না নালা। সরেজমিন পরিদর্শনপূর্বক দেখা যায়- বোয়ালখালী উপজেলা সদর ও পৌর সদর হতে মাত্র কয়েকশ’ গজ দূরে অবস্থিত এ সড়কটির দু’পাশে বেশ কয়েকশ’ পরিবারের বসবাস। তাছাড়াও রয়েছে শত শত মানুষের নিত্য যাতায়ত। কিন্তু বিগত বেশ কয়েক বছর যাবৎ ধরে কোন পক্ষই সড়কটি সংস্কার কিংবা মেরামতের উদ্যোগ না নেয়ায় এটি এখন বিলুপ্তির পথে এসে ঠেকেছে। এর উপর বিগত কয়েকদিনের বর্ষণে সড়কটির অবস্থা এখন মারাত্মক পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। এমতাবস্থায় এলাকাবাসী সড়কটি দিয়ে বহু কষ্টে যাতায়ত করে আসলেও বাইরের লোকগুলোকে বিব্রতবস্থায় পড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এলাকাবাসীর অভিযোগ, চরখিদির পুরের এ সড়কটি সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন, মিটিং-মিছিল স্থানীয় সংসদ, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউপি চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন জানাতে জানাতে তাদের ভাষা হারিয়ে ফেলেছে। এখন শুধু একটি কাজ বাকি এখানকার জনপ্রতিনিধিদের ধরে এনে পাজেরো থেকে নামিয়ে পায়ে হেঁটে আনা-নেয়া করানো। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সরকারি পাজেরো বা দামি গাড়িতে চড়তে চড়তে তাদের গায়ে মাটি বাজে না। ফলে তারা এলাকার খেটেখাওয়া মানুষের দুঃখ বুঝে আসে না। এখানকার জনপ্রতিনিধিদের এসব এলাকায় একান্তই যাওয়ার প্রয়োজন পড়লে খুঁজে নেয় বিকল্প সড়ক। হোক না সেটা ১৫ মাইল দূর, তাতে কি হয়েছে। তেল-পেট্রোলতো সরকারি কোষাগারের যাবে। এ নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সড়ক সংস্কারে এখানকার জনপ্রতিনিধিদের মুখ থেকে পেয়েছি শুধুই কথার ফুলঝুড়ি আর বাটপারি প্রতিশ্রুতি। এছাড়া পৌর এলাকা হওয়ায় স্থানীয় উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ যেন নাকে-মুখে সরিষা তেল দিয়ে ঘুমে রয়েছে। রয়েছে ঘুষ-দুর্নীতিসহ অবৈধ কারিকুলামে। এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সড়কটির এ বেহাল অবস্থার কারণে এখানকার শিশুরা ঝুঁকি নিয়ে যেতে হয় স্কুল-মাদ্রাসা ও কলেজে। প্রায় সময় জোয়ারের পানিতে বই-খাতা নষ্টসহ আহত হয়ে ঘরে ফিরতে হয়। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষার্থী, চাকরিজীবী, শ্রমজীবী ও খেটেখাওয়া মানুষের সাংসারিক জীবন। ফলে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ও পরিবর্তনের কার্যতালিকা থেকে পিছিয়ে পড়ছে এখানকার কয়েকশ’ পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়া এখানকার খেটেখাওয়া একাধিক শ্রমজীবী মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের ছেলেমেয়েদের সুন্দর জীবন নিয়ে গড়ে উঠতো দূরের কথা ঠিকভাবে এলাকার পরিচয়টুকুও দিতে পারছি না। এসব এলাকার পরিচয় দিলেই কোন একটা সম্মন্ধও ভালোভাবে করতে পারছি না। কত ছেলেমেয়ে উপযুক্ত হলেও সময় মতো বিয়েশাদীর কথা ভাবতে পারি না। কোনভাবে আত্মীয়তা করলেও এসব আচার অনুষ্ঠানাধি নিয়ে বেশ বেকায়দায় আছে তারা। বাধ্য হয়ে অধিক টাকা খরচ করে এলাকার বাইরে গিয়ে অনুষ্ঠানাধি পালন ছাড়া তাদের আর কোন গত্যান্তর থাকে না। তাদের আক্ষেপ সড়কটির এ অবস্থার কারণে এ অবস্থা। বোয়ালখালী পৌরসভা গঠিত হয়েছে প্রায় ৫ বছরের অধিক সময় পেরিয়ে গেছে কিন্তু দীর্ঘ এ সময়ে কেন পৌর সদরের এসব গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাটের এমন বেহাল অবস্থা ভাবতে কষ্ট হয়। মনে হয় যেন এখানে জনপ্রতিনিধি নামক এ ভুতটি অন্তত এখানে নেই। এ ব্যাপারে বোয়ালখালী পৌর মেয়র হাজী আবুল কালাম আবু জানান, নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব নেয়ার দু’বছরের মাথায় বিভিন্ন ওয়ার্ডের অনেক সড়ক-উপসড়ক অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে মেরামত করা হয়েছে। কিছু কাজ চলমান আছে, বাকিগুলোর কাজও যথা শীঘ্রই আরম্ভ করা হবে। প্রকৃৃতপক্ষে চরখিদিরপুরের হাজিরপুল সড়কটির এমন অবস্থা হয়ে থাকলে স্থানীয় কাউন্সিলরের সাথে আলাপ করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।