পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মুক্তির দাবিতে শাহবাগে সমাবেশের ডাক : নানা-ভাইয়ের সঙ্গে কথা বললেন পরীমণি
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় তৃতীয় দফায় ঢাকাই চলচ্চিত্রের আলোচিত নায়িকা পরীমণির একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম শুনানি শেষে এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গতকাল সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে পরীমণিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাকে রাখা হয় আদালতের হাজতখানায়। এরপর সাড়ে ১১টার দিকে নেয়া হয় আদালতের কাঠগড়ায়। কাঠগড়ায় উঠেই অঝোরে কাঁদতে থাকেন পরীমণি। বারবার তাকে হাত দিয়ে চোখের পানি মুছতে দেখা যায়।
এদিকে শুনানি শেষে পরীমণির আইনজীবী মজিবুর রহমান বলেন, এ মামলায় তাকে (পরীমণি) বার বার রিমান্ডে নেওয়ার গ্রাউন্ড নেই। তার বিরুদ্ধে যা অভিযোগ সেটার শাস্তি সর্বোচ্চ ৫ বছর। যে যে কারণে রিমান্ডে নেওয়া হয় তার কোনোটিই এ মামলায় নেই। ফলে স্বীকারোক্তি আদায় করতেই তাকে বার বার রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য নয়। যদি সত্য হয়েও থাকে এ মামলায় তাকে আর জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন নেই। সে কোনও আন্তর্জাতিক চক্রের সদস্য বলে কোনও অভিযোগ করা হয়নি। কোন মামলায় কাকে রিমান্ডে নিতে হবে তার বিধান আইনে আছে, যার কোনোটিই এ মামলায় পরিলক্ষিত হয়নি।
আইনজীবী বলেন, তার কাছে আইস ৪ গ্রাম, সাড়ে ১৮ লিটার মদ পাওয়ার কথা বলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে যতগুলো ধারা দেওয়া হয়েছে তাতে তার ৫ বছরের বেশি সাজা হওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের শঙ্কা, তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্যই বার বার রিমান্ড চাওয়া হচ্ছে।
এর আগে ১৬ আগস্ট সুষ্ঠু তদন্তের জন্য পরীমণিকে ফের পাঁচদিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি পুলিশের পরিদর্শক কাজী গোলাম মোস্তাফা। গত ১৩ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় ছয়দিনের রিমান্ড শেষে পরীমণি ও তার সহযোগী দিপুকে আদালতে হাজির করা হয়েছিল। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন সিআইডির পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা। এ সময় আসামিপক্ষে তাদের আইনজীবী মজিবুর রহমান জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর পরীমণিকে গাজীপুরের কাশিমপুর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
পরীমণির মুক্তির দাবিতে শাহবাগে সমাবেশের ডাক: এদিকে পরীমণির তৃতীয় দফায় রিমান্ড মঞ্জুরের পর আগামী ২১ আগস্ট শাহবাগে বড় সমাবেশ ডেকেছে ‘বিক্ষুব্ধ নাগরিকজন’। এদিন বিকেল ৪ চায় পরীমনির মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংগঠনটির আহবায়ক রবিন আহসান জানান, ২১ আগস্ট বিকাল ৪টায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে তারা পরীমণির সুবিচারের পক্ষের সকল মানুষের অংশগ্রহণ প্রত্যাশা করছেন।
নানা-ভাইয়ের সঙ্গে কথা বললেন পরীমণি: রিমান্ড শুনানির জন্য কারাগার থেকে পরীমণিকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় আদালতে ছুটে আসেন তার নানা শামসুল হক। শুনানি শেষে পরীমণি বিচারককে বলেন, ‘আমার নানা ও ভাইয়ের সঙ্গে কথা বলতে চাই।’ এরপর বিচারক অনুমতি দেন। দুপুর ১২টা ২৫ মিনিটে পরীমণির নানা কাঠগড়ার বাইর থেকে তার সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় পাশে ছিলেন পরীমণির দুই খালাত ভাই। ১২টা ২৭ মিনিটে তাদের কথা শেষ হয়। এই দুই মিনিট কি কথা বলছেন জানতে চাইলে পরীমনির খালাত ভাই বলেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে কথা হয়েছে।
অঞ্জনাই এবার পরীমণির জামিন চাইলেন: চিত্রনায়িকা পরীমণি মাদক মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পরে গত ৭ আগষ্ট চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি তার সদস্যপদ স্থগিত করে। একই দিন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পরীমণি প্রসঙ্গে ‘সন্ধ্যার পরে মেয়েদের বাইরে বের হওয়া ঠিক নয়’ এমন বক্তব্য দিয়ে সমালোচিত হন অঞ্জনা। এবার তিনিই পরীমণির জামিন প্রার্থনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
গত বুধবার নিজের ফেসবুক হ্যান্ডেলে পরীমণির সঙ্গে নিজের একটি ছবি পোস্ট করে অঞ্জনা বলেন, ‘আমরা কোনো মানুষই ভুলের ঊর্ধ্বে নই। জীবনে চলার পথে সঠিক দিকনির্দেশনা না থাকলে অবশ্যই জীবন অনাকাঙ্খিতভাবেই ভুল পথে অতিবাহিত হয়। পরীমণির বেলায়ও তাই হয়েছে। একটা এতিম মেয়ে শৈশব বয়স থেকে পারিবারিক মায়া মমতার স্পর্শ পায়নি, পারিবারিকভাবে সুনির্দিষ্ট কোনো দায়বদ্ধতা ছিলো না, তাই হয়তো না বুঝেই অন্য পথে ধাবিত হয়েছিলো তার জীবন। আরেকটি কথা বলতেই হয়, শিল্পী হিসেবে পরীমণি যথেষ্ট ভালো অভিনয় করে- এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়, আর সে দেখতেও অপূর্ব সুন্দরী।’
এরপর পরীমণির জামিন প্রার্থনা করে অঞ্জনা বলেন, ‘আমাদের চলচ্চিত্র সমৃদ্ধ করতে অবশ্যই তার প্রয়োজন আছে। আমি আশা করি, সব কিছু ছাপিয়ে সে ভবিষ্যতে অভিনয়ে মনোযোগী হবে। সর্বোপরি সব কিছু বিবেচনা করে একটা অসহায় মেয়ের সার্বিক সুদূর ভবিষ্যতের কথা চিন্তাভাবনা ও পর্যালোচনা মোতাবেক আমি এ দেশের আইন ও বিচার বিভাগের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও সম্মান প্রদর্শন করে শুধু একটি বিনীত অনুরোধ জানাব- সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে পরীমণির জামিন মঞ্জুরের আদেশ প্রদান করলে চিরকৃতজ্ঞ থাকব।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।