গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
ফেসবুকে পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডঃ আসিফ নজরুলের কক্ষে তালা দেয়া ও নানা ধরনের হুমকি-ধামকির বিষয়ে কথা বললেন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর এবং আমেরিকার ইনস্টিটিউট অফ বাংলাদেশ স্টাডিজ এর প্রেসিডেন্ট ডক্টর আলী রীয়াজ। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টের তিনি লেখেন,
"ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের প্রধানের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীন দলের সমর্থক ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগ এবং ‘বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের’ কর্মীরা। আইন বিভাগের প্রধান আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোগ তিনি ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’ বক্তব্য দিয়েছেন। ফেসবুকে দেয়া একটা স্ট্যটাসের জেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিভাগের প্রধানের অফিস কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়ার ঘটনা বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কী করেছেন সেটা কোন গণমাধ্যমেই বলা হয়নি, কারন কর্তৃপক্ষ আদৌ কিছু করেছেন বলে মনে হয়না। মৌণতা সম্মতির লক্ষণ নাকি এই নিষ্ক্রিয়তা আসলে কর্তৃপক্ষের অসহায়ত্ব নাকি এটাই তাঁদের আদর্শিক অবস্থান তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে, কিন্ত যা বিতর্কের উর্ধ্বে তা হচ্ছে মতপ্রকাশের কারণে কোনও ব্যক্তিকে হেনস্তা করা বাংলাদেশের সংবিধানের পরিপন্থী। নাগরিক হিসেবে যে কোন ব্যক্তির মতপ্রকাশের যে স্বাধীনতা সংবিধান দিয়েছে সেটাই এ ক্ষেত্রে হরণ হয়েছে এবং তা ঘটছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে। অথচ যে বিশ্ববিদ্যালয় ঘটা করে শতবর্ষের উৎসব করেছে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে নির্বিকার।
বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই কথা বলার ও সমাবেশের অধিকার প্রায় অবসিত, ভয়ের সংস্কৃতি সর্বব্যাপ্ত হয়ে পড়েছে। এই ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি করার একটা উপায় হচ্ছে সেন্সরশীপকে ‘আউটসোর্সিং’ করা। দৃশ্যত রাষ্ট্র বা সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছেনা; কিন্ত তা তুলে দেয়া হয়েছে ‘বে-সরকারি’ ব্যক্তিদের হাতে। ক্ষমতাসীনদের কর্মী ও সমর্থকরাই নির্ধারন করছেন কোনটি ‘রাষ্ট্রের পক্ষে’ আর কোনটি ‘রাষ্ট্রদ্রোহী’। এবারই প্রথম তা ঘটেছে তা নয়, এর আগে এমনকি একজন সম্পাদকের বিরুদ্ধে কয়েক ডজন ‘রাষ্ট্রদ্রোহিতার’ মামলা হয়েছিলো। রাষ্ট্র, সরকার এবং দল একাকার হয়ে গেলে এটাই স্বাভাবিক হয়ে ওঠে। মতপ্রকাশের কারণে আসিফ নজরুলের বিরুদ্ধে যা বলা হচ্ছে তা আসলে বলা হচ্ছে যিনিই মতপ্রকাশে উৎসাহী তাঁর বিরুদ্ধে। ফলে তালা কেবল বিশেষ অফিসের দরজায় লাগানো হয়েছে তা নয়, এই তালা আসলে লাগানো হয়েছে এবং হচ্ছে মতপ্রকাশের ক্ষীণ যে সুযোগ আছে সেই দরজায়।"
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।