বহুজাতিক কোম্পানি, ব্যাংক ও আর্থিক খাতের শেয়ারের দাম কমায় সপ্তাহের চতুর্থ কার্যদিবস গতকাল বুধবার দেশের পুঁজিবাজারে দরপতন হয়েছে। এদিন দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচক কমেছে ১৫ পয়েন্ট। অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক কমেছে ২৮ পয়েন্ট। এর ফলে টানা চার দিন উত্থানের পর বুধবার পুঁজিবাজারে দরপতন হলো। তবে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বাজারের এই অবস্থানকে দরপতন বলছেন না। তারা এটিকে বলছেন মূল্যসংশোধন। টানা চারদিন উত্থানের পর একদিন সূচক সামান্য কমেছে। এটা স্বাভাবিক বিষয়। আরও দুদিন এভাবে লেনদেন হলেও দরপতন বলা যাবে না। ডিএসইর তথ্য মতে, ব্যাংক, বিমা ও বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ারের দাম কমাকে কেন্দ্র করে গতকাল লেনদেনের প্রথম দেড় ঘণ্টায় সূচকের নিম্নমুখী প্রবণতায় লেনদেন হয়। তবে বস্ত্র, আর্থিক এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং বিমা খাতের শেয়ারের দাম বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় লেনদেন হয়। ফলে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর পৌনে ১টা পর্যন্ত সময়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৬ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ৮১৯ পয়েন্টে দাঁড়ায়। এরপর দিনের শেষ পৌনে দুই ঘণ্টা লেনদেন হয় শেয়ার বিক্রির চাপের মধ্য দিয়ে। তাতে সূচকের পতন হয়। দিন শেষে ডিএসইতে মোট ৩৭৪টি প্রতিষ্ঠানের ৮৩ কোটি ৭৭ হাজার ৬৮৫টি শেয়ারের হাতবদল হয়েছে। লেনদেন হওয়া ৩৭৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দাম বেড়েছে ১৩৮টির, কমেছে ২১৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের। বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১৫ দশমিক ৩১ পয়েন্ট কমে ছয় হাজার ৭৭১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। প্রধান সূচকের পাশাপাশি ডিএসইর অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক দুই দশমিক ৭৭ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪৬৬ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক চার পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৪২৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। গতকাল বুধবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৪৬৫ কোটি ৫৩ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৬৭৩ কোটি ৪৯ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কমেছে।

ডিএসইতে লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে শীর্ষে ছিল বেক্সিমকো লিমিটেড। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৩০ কোটি টাকার। এরপর দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে একই মালিকানাধীন গ্রুপের প্রতিষ্ঠান আইএফআইসি ব্যাংক। গতকাল ব্যাংকটির লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি টাকার। এরপর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে লঙ্কাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডের শেয়ার। এই কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৬২ কোটি টাকার। এরপর ক্রমান্বয়ে ছিল অরিয়ন ফার্মা, লাফার্জহোলসিম, মালেক স্পিনিং, শাহজিবাজার পাওয়ার, জেনেক্স ইনফোসেস, ন্যাশনাল ব্যাংক এবং সাইফ পাওয়ার লিমিটেড।

অন্যদিকে অপর বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ২৮ পয়েন্ট কমে ১৯ হাজার ৭৪০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩২৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেড়েছে ১৩১টির, কমেছে ১৭৩টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৪টি কোম্পানির শেয়ারের দাম। এ বাজারে লেনদেন হয়েছে ৯২ কোটি ৪২ লাখ এক হাজার ২০৯ টাকা। এর আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১০৯ কোটি ৭০ লাখ ৩৫ হাজার ৯৪৩ টাকা।