প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
আলোচিত-সমালোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি'র গ্রেফতার, রিমান্ড এবং চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ভূমিকা নিয়ে মুখ খুলেছেন ফিল্ম ক্লাবের সভাপতি ও একসময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক ওমর সানী। রবিবার (১৫ আগস্ট) রাতে ওমর সানি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন। তিনি পরীমনিকে একটা সুযোগ দেয়ার পক্ষে, যাতে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি নিজেকে সংশোধন করতে পারেন।
ওমর সানির দেওয়া স্ট্যাটাসটি ইনকিলাব পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে দেওয়া হলো-
‘আইন বলে ইনোসেন্ট, A person is innocent until proven guilty. যতক্ষণ পর্যন্ত অপরাধ প্রমাণ না হয়, ততোক্ষণ পর্যন্ত ওই ব্যক্তি কেবল অপরাধের জন্য অভিযুক্ত, দোষী নয়। কিন্তু পরীমনিকে গ্রেফতারের পর থেকে আমরা কী দেখলাম? চলচ্চিত্র থেকেই তাকে বের করে দেওয়া হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলন করে তাকে অপরাধী প্রমাণ হবার আগে আমরা শাস্তি দিয়ে দিলাম। বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে, বিনোদন জগৎ সম্পর্কে সাধারণ জনগণের মনকে বিষিয়ে দেওয়া হলো না? এর আগেও তো একজন নামী অভিনেতা, প্রযোজক জেল খেটেছেন। কই তার বেলায় তো এই নিয়ম ছিলো না।
যাই হোক এবার মূল কথায় আসি। পরীমনি'র বাড়ি থেকে যে পরিমাণ মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে, তা দেখে প্রশ্ন জাগে এই পরিমাণ বোতল তো পরীমনি বাড়ির পাশের মুদির দোকান থেকে কেনেননি বা নিজে বাড়িতে তৈরি করেননি। তাহলে এই মাদকদ্রব্যের সরবরাহ কোথা থেকে হলো, কার কাছ থেকে এগুলো কিনলো বা সংগ্রহ করলো। মূল রাঘব বোয়ালদের আগে ধরতে হবে। তারা সব সময়ই আড়ালে থেকে যায়।
আমি জানি না পরীমনি মূল অপরাধী কি-না। তবে চলচ্চিত্রের একজন শিল্পী হিসেবে বুঝি, মুম্বাইয়ের চিত্রজগতে যা ঘটেছিলো, এক প্রভাবশালী ধনী ব্যবসায়ী এক সুন্দরী নায়িকাকে তার লালসার শিকার করতে না পেরে তার বন্ধু একজনের সহায়তায় তাকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে যেভাবে তার জীবন ও ক্যারিয়ার ধ্বংস করেছিলো, ঢাকায় পরীমনি'র ক্ষেত্রে সেই ষড়যন্ত্রের যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীও সেই কথাটা বলেছেন একটা লেখায়। বরং রিহ্যাবে দিয়ে তাকে সুস্থ করার দায়িত্বও এই সমাজের। তাকে ভুল শোধরানোর সময় দিতে হবে।
রাজধানীতে পরীমনিকে যারা বিভিন্নভাবে ব্যবহার করে লাভবান হয়েছেন, তারা যদি বেআইনিভাবে অর্থ উপার্জন করে থাকেন তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা উচিত। বিশেষ করে পরীর কাছের মানুষদেরও দায় আছে। যারা তার কাছে থেকেও ভালো পরামর্শ দেবার কথা কিন্তু তা না দিয়ে মা, বেবী, মামা, বলে বলে নানা সময় নানা ফায়দা নিয়েছেন। আমি নিজে ধোয়া তুলশি পাতা না। আমিও এক সময় সিগারেটসহ নানা আড্ডায় যেতাম। তবে তা শুধরিয়ে নিয়েছি। স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এমন কিছু স্পর্শ করি না এখন।
আমরা আইন প্রয়োগের বিভিন্ন ধাপ যতো বেশি স্বচ্ছ ও আবেগমুক্ত রাখতে পারবো, ততো বেশি করে নিশ্চিত করতে পারবো দেশে আইনের শাসন এবং আইনের প্রতি জনগণের আস্থা। একজন আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নাগরিক হিসেবে, একজন অভিনয়শিল্পী হিসেবে, একটি স্বাভাবিক, মর্যাদাপূর্ণ ও নিরাপদ জীবন আমাদের দাবি। এই দাবি পূরণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে তাদের দায়িত্বের অংশটুকু যথাযথভাবে পালন করতে হবে। তাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই, পরীমনি এখনো কোটি ভক্তের মনে গেঁথে আছেন। একজন অভিনয়শিল্পী। তার ক্যারিয়ার সবে শুরু। তার ভুল শোধরানোর সুযোগ দিলে হয়তো আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারবেন। তাতে চলচ্চিত্রশিল্পও একজন অভিনয়শিল্পীকে হারাবে না।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।