Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অবিলম্বে মাদরাসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিন

বিভিন্ন ইসলামী দলের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেছেন, নতুন কোনও টালবাহানা না করে আগস্টের মধ্যে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৮ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ছাত্র-ছাত্রীরা বইয়ের জগৎ ছেড়ে ফেসবুক বা পাবজি গেমে কিংবা নেশার জগতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। কেউ কেউ ভুগছে চরম মানসিক সমস্যায়। এ পরিস্থিতিতে অভিভাবক, ছাত্র ও শিক্ষক সবাই উদ্বিগ্ন। তাছাড়া সবকিছু খোলা রেখে শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার কি অর্থ আমাদের তা বুঝে আসে না। করোনার কারণে শিক্ষাক্ষেত্রে যেসব সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে, সেটা আমাদের অর্থনীতি, রাজনীতি ও ভবিষ্যতকে প্রভাবিত করবে। তাই নতুন কোন টালবাহানা না করে আগস্টের মধ্যে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।

শুক্রবার বিকেলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর মজলিসে আমেলার সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সংগঠনের সেক্রেটারী মাওলানা আরিফুল ইসলামের সঞ্চালনায় অন্যানের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আনোয়ার হোসেন, জয়েন্ট সেক্রেটারী নূরুল ইসলাম নাঈম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী ফরিদুল ইসলাম, প্রচার ও দাওয়াহ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার গিয়াস উদ্দিন (পরশ), অর্থ সম্পাদক ডাক্তার মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, সব কিছু মিলিয়ে দেশ একটি মেধাশূন্য জাতিতে পরিণত হতে যাচ্ছে। তবুও সরকার কোন ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না। বর্তমানে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট আদান-প্রদান চলছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট ভালোভাবে বুঝতে পারছে না বলে জানা গেছে। তাদের সঙ্গে মতবিনিময় বা সপ্তাহে কমপক্ষে তিন দিনের জন্য হলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিলে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট বুঝতে সুবিধা হবে। পাশাপাশি শিক্ষাবিদ, অভিভাবক, শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটা জাতীয় কমিশন গঠন করে অবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। শিফট পদ্ধতিতে বিভিন্ন রকম ক্যারিকুলাম প্রণয়ন করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চালু করতে হবে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ : সারাবিশ্ব করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত। এ থেকে মুক্তির পথ আমাদের সবাইকে খাঁটি দিলে তওবা করে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করা। করোনার কারণে ১৮ মাস যাবত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষাব্যবস্থা এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের প্রতি লক্ষ্য করে কওমি মাদরাসাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। গতকাল শনিবার জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ কুমিল্লা জেলার কাউন্সিল অধিবেশনে জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মহাসচিব শায়খুল হাদিস হাফেজ মাওলানা ড. গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম এসব কথা বলেন। জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এতথ্য জানানো হয়েছে।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ কুমিল্লা জেলার সহ-সভাপতি মাওলানা নজির আহমদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা খলিলুর রহমানের পরিচালনায় বিকেল ৩টায় কুমিল্লাস্থ মদিনাতুল উলুম মিলনায়তনে এই কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি শায়খুল হাদিস হযরত মাওলানা মুফতি শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, যখন করোনা মহামারিতে পুরো জাতি আতঙ্কিত ছিল। সেই সময় সরকার হাফেজি মাদরাসাসহ সকল কওমি মাদরাসা খুলে দিয়েছিল। কোরআন তেলাওয়াতের বরকতে আস্তে আস্তে করোনা কমতে ছিল। আমরা আশাবাদী এখনোও যদি হাফিজি মাদরাসাসহ সকল কওমি মাদরাসা সরকার খুলে দেয় তাহলে করোনা থেকে আমরা মুক্তি পাবো। ইনশাআল্লাহ।

আরো বক্তব্য রাখেন, মাওলানা চৌধুরী মোহাম্মদ হাশেম, মাওলানা সারোয়ারুল আলম ভূঁইয়া, মাওলানা মাহমুদুল হাসান জিহাদী, মাওলানা নুরুল হক সিরাজী, মাওলানা জসিম উদ্দিন বিজয়পুরী ও হাফেজ ইজহারুল হক। নেতৃবৃন্দ বলেন, দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা পাবজিসহ বিভিন্ন গেমসে আসক্ত হয়ে পড়েছে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের ভবিষ্যত নিয়ে খুবই দুশ্চিন্তায় অবস্থায় আছেন। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের প্রতি লক্ষ্য রেখে গার্মেন্টস, শিল্প-কলকারখানা ও মার্কেট- শপিংমলের মত শর্তসাপেক্ষে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। নেতৃবৃন্দ শিক্ষার্থীদেরকে দ্রুত সময়ে ভ্যাকসিন প্রদান করে কওমি মাদরাসাসহ সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।

জাতীয় শিক্ষক ফোরাম : জাতীয় শিক্ষক ফোরাম এর কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেছেন, সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চললেও ৫০০ দিনের অধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষা সেক্টর চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সরকার সব সেক্টর থেকে লকডাউন তুলে নিলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের লকডাউন তুলে না নিয়ে দ্বিমুখী আচরণ করছে। গতকাল শনিবার বিকেলে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির উদ্যোগে দেশের চলমান পরিস্থিতি পর্যালোচনাকালে সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে অংশ নেন সংগঠনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা এবিএম জাকারিয়া, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল প্রভাষক আব্দুস সবুর, সাংগঠনিক সম্পাদক ইশতিয়াক মু. আল আমীন, অর্থ সম্পাদক এ. রহমান, দফতর সম্পাদক প্রভাষক আমজাদ হোসেন আযমী। তিনি বলেন, আমরা বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি কোরআন তেলাওয়াতের বাতিঘর এবং ইলম চর্চার কেন্দ্র আবাসিক কওমি মাদরাসাগুলো বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে যা মোটেই সমীচীন নয়।
তিনি শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে ধ্বংসের কবল থেকে রক্ষার্থে সপ্তাহে দুদিন অথবা ক্লাস্টার পদ্ধতি অনুসরণ করে হলেও অন্যান্য সবকিছুর মত স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর নিকট আহবান জানান। সভায় জাতীয় শিক্ষক ফোরাম এর কেন্দ্রীয় মাদরাসা বিষয়ক সম্পাদক বি.বাড়িয়ার সন্তান মাওলানা নিয়াজুল করীম-এর নিঃস্বার্থ মুক্তির দাবি জানানো হয়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ