Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কৃষকের ঘরে উঠতে শুরু করেছে জুমের সোনালি ফসল

প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রাঙ্গামাটি জেলা সংবাদদাতা

পাহাড়ে এবার জুমের ফলন ভালো হয়েছে। রাঙ্গামাটির পাহাড়ে জুমেতে এখন পাকা ধান কাটার ধুম পড়েছে। ঘরে উঠতে শুরু করেছে সেই সোনালি ফসল। পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়িদের ঐতিহ্যবাহী চাষ হচ্ছে জুমচাষ (পাহাড়ের ঢালে বিশেষ ধরনের চাষাবাদ)। পাহাড়ের ঢালে বিশেষ পদ্ধতির এ জুম চাষ করে থাকেন তারা। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের পাহাড়িদের জুমের ক্ষেতে শুরু হয়েছে পাকা ধান কাটা। সাথে সংগ্রহ করা হচ্ছে মারফা, বেগুন, ধানি মরিচ, ঢেঁড়শ, কাঁকরোল, কুমড়াসহ বিভিন্ন ফসল তোলার কাজ। এরপর ঘরে উঠবে তিল, যব এবং সব শেষে তোলা হবে তুলা। এ মওসুমে উপযুক্ত জলবায়ু ও বৃষ্টিপাতে এবং ইঁদুরের উৎপাত কমে যাওয়ায় ভালো ফলন হয়েছে। জুমের সোনালি ফসল ঘরে তুলতে পারায় পাহাড়ি নারী-পুরুষ এখন খুশি। জুমে বীজ বপনের ছয় মাস পরিচর্যা ও রক্ষণাবেক্ষণের পর ফসল পাওয়া যায়। পাহাড়ের জুমচাষিরা বলেন, জুমিয়ারা পৌষ-মাঘ মাসে পাহাড়ের ঢালে জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করে রৌদ্রে শুকানোর পর ফাল্গুন-চৈত্র মাসে আগুনে পুড়িয়ে জমি জুম চাষের উপযোগী করে তোলেন। এপর বৈশাখ- জ্যৈষ্ঠে পোড়া জুমের মাটিতে সুঁচালো দা দিয়ে গর্ত খুঁড়ে একত্রে ধান, মারফা, মিষ্টিকুমড়া, তুলা, তিল, ভুট্টাসহ বিভিন্ন রকম বীজ বপন করা হয়। আর এসব জুমের ধান আষাঢ়-শ্রাবণেই পেকে থাকে। এরপর শুরু হয় জুমের ফসল তোলার কাজ। সে সময় মারফা, কাঁচামরিচ, চিনার, ভুট্টো পাওয়া যায়। ধান পাকে ভাদ্র-আশ্বিনে। সব শেষে তুলা, তিল, যব ঘরে তোলা হয় কার্তিক-অগ্রহায়ণে। রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপসহকারী উদ্যান কর্মকর্তা শান্তিময় চাকমা বলেন, এখানে স্থানীয় ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে জুম চাষ পদ্ধতি প্রচলিত রয়েছে। পাহাড়ে জুমচাষিরা সাধারণত গেলং, বাধিয়া, কবরক, ছুড়ি, বিন্নি এসব জাতের ধান চাষ করেন। এ ছাড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জুম চাষ পদ্ধতিতে কিছু আধুনিক ধানের চাষ প্রচলন করেছে। বিশেষ করে আধুনিক ব্রি ধান-২৪, ২৬, ২৭ ও ব্রি ধান-৫৫ জুমের জমিতে ফলন ভালো হয়েছে। স্থানীয় জাতের ধানের চেয়ে আধুনিক ধানের চাষের ওপর আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর উপপরিচালক রমনী কান্তি চাকমা বলেন, পাহাড়ের জুমচাষিদের কৃষি বিভাগ থেকে বলা হয়েছে উন্নত জাতের বীজ ধান বপন ও উন্নত কলাকৌশল ব্যবহার করার জন্য। বিশেষ করে সুষম সার প্রয়োগের পাশাপাশি ফসলের পরিচর্যা করলে ফলন ভালো হয়। তিনি বলেন, এ বছর রাঙ্গামাটিতে ছয় হাজার ৫০ হেক্টরে জুম চাষের আবাদ হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি ধানিজমিতে জুমের ধান কাটা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষকের ঘরে উঠতে শুরু করেছে জুমের সোনালি ফসল
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ