Inqilab Logo

শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

দুর্ভোগের আরেক নাম সুর তরঙ্গ সড়ক

প্রকাশের সময় : ১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মো. হেদায়েত উল্লাহ, টঙ্গী থেকে

গাজীপুর মহানগরীর ৫৪নং ওয়ার্ডের আউচপাড়া সুর তরঙ্গ সড়কটি এখন এলাকাবাসীর দুর্ভোগের অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন অঞ্চল-১ টঙ্গী কার্যালয় (সাবেক টঙ্গী পৌর ভবন) থেকে এই সড়কটির দূরত্ব খুব বেশি হলে ৫০ গজ হবে। অথচ এই সড়কটির অবর্ণনীয় বেহাল দশা কর্তৃপক্ষের নজরে আসছে না। সিটি কর্পোরেশন গঠনের পূর্বে টঙ্গী পৌরসভা থাকাকালীন সময় থেকেই বিগত ৭/৮ বছরের মধ্যে সুর তরঙ্গ সড়কটির কোন সংস্কার কাজ হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। যথাযথ ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই এই সড়কে হাঁটুর ওপরে পানি জমে যায়। সেই পানি সপ্তাহ পার হলেও নামে না। এছাড়া স্থানে স্থানে সড়কটিতে বড় বড় গর্ত থাকায় সেখানে অনেক সময় সিএনজি ও রিকশা উল্টে দুর্ঘটনা ঘটছে বলেও ভুক্তভুগীরা অভিযোগ করেন। সুর তরঙ্গ এলাকার বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক আব্দুল হান্নান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, অখ্যাত কোন গ্রামের রাস্তাও মনে হয় টঙ্গীর সুর তরঙ্গ সড়কের মত এত খারাপ নেই। তার মতে, সুর তরঙ্গ সড়কটি দেখে এখন কোন রাস্তা বলেই মনে হয় না। এটি নালা নর্দমায় পরিণত হয়েছে। অথচ এই সড়কটি সিটি কর্পোরেশন অফিসের নাকের ডগায় অবস্থিত। এ যেন ‘বাতির নিচে অন্ধকার’। তিনি আরো বলেন, এই এলাকার নির্বাচিত কাউন্সিলর বিএনপি সমর্থিত আলহাজ শেখ মোহাম্মদ আলেক। অনেকগুলো মামলার আসামি হওয়ায় তিনি বেশিরভাগ সময় এলাকায় থাকেন না। ফলে এই এলাকার নাগরিকদের দুর্ভোগ দুর্দশা দেখার দায়িত্ব যেন এখন আর কারো নেই। টঙ্গী সরকারি কলেজ, সফিউদ্দিন সরকার স্কুল এন্ড কলেজ, টঙ্গী পাইলট স্কুল এন্ড গার্লস কলেজ ও আল-হেলাল স্কুলসহ বেশ কিছু স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার ছাত্রছাত্রী নিয়মিত আবর্জনাযুক্ত পানি মাড়িয়ে স্কুল-কলেজে যাতায়াত করতে হয়। দিনের পর দিন রাস্তায় পানি জমে থাকায় অনেক শিক্ষার্থী স্কুলেও যেতে পারে না। বৃষ্টি হলে তো দ্বিগুণ ভাড়া দিয়েও এই রাস্তায় কোন রিকশা পাওয়া যায় না। আউচপাড়া এলাকার অধিবাসী ব্যাংক কর্মকর্তা আরিফুর রহমানের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, এই এলাকার বর্তমান রাস্তাঘাটের চিত্র দেখে কেউ এটিকে কোন শহর এলাকা হিসেবে বিশ্বাস করবে না। অথচ আউচপাড়া সারা টঙ্গীর মানুষের কাছে অভিযাত আবাসিক এলাকা হিসেবে খ্যাত ছিল। এলাকার সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর কেয়া শারমিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সড়কটি বিআরটি (বাস র‌্যাপিড ট্রান্সপোর্ট) প্রকল্পের অধীন থাকায় সিটি কর্পোরেশন কোন কাজ করছে না। তবে রাস্তাটির অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গেছে। বিআরটি প্রকল্পের কাজ শুরু হতে দেরি হলে সিটি কর্পোরেশন যাতে বিশেষ ব্যবস্থায় সড়কটি সংস্কারের ব্যবস্থা করে তার জন্য আমি চেষ্টা করবো। টঙ্গী পৌরসভার সাবেক কমিশনার আবুল হোসেন বলেন, এই এলাকায় ৮/১০ তলা ভবনসহ কয়েক হাজার বাড়ি ঘর রয়েছে যেখানে লাখ লাখ লোক বসবাস করেন। স্কুল, কলেজ ও অফিস-আদালতে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক যাতায়াত করেন এই সড়ক দিয়ে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি বিশেষ বরাদ্দের মাধ্যমে হলেও খুব দ্রুত মেরামত করা প্রয়োজন। এছাড়া আগের তুলনায় এই এলাকায় বহুতল ভবনসহ কয়েকগুণ বাড়িঘর বেড়েছে কিন্তু সেই তুলনায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হয়নি। তাই প্রশস্ত ড্রেন নির্মাণ করার জন্যও তিনি বর্তমান ভারপ্রাপ্ত মেয়রসহ সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ ব্যাপারে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন টঙ্গী অঞ্চল-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সিদ্দিকুর রহমানের নিকট জানতে চাইলে তিনি ইনকিলাবকে বলেন, যে সকল ওয়ার্ডের কাউন্সিররা তাদের নিজ নিজ এলাকার রাস্তাঘাট উন্নয়নের প্রস্তাব দিয়েছে সেইগুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। তবে সুর তরঙ্গ সড়কসহ ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের সাথে সংযুক্ত টঙ্গীর মোট ১৪৩টি সড়ক উন্নয়নের জন্য বিআরটি প্রকল্পের অধীনে এলজিইডি মন্ত্রণালয় একটি টেন্ডার প্রক্রিয়া বেশ কিছু দিন আগেই সম্পন্ন করেছে। কিন্তু বিশেষ সমস্যার কারণে সেই টেন্ডারের কার্যাদেশ এখনো প্রদান করা হচ্ছে না। কবে নাগাদ হবে তা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা মন্ত্রণালয়ের বিষয় আমাদের জানা নেই।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্ভোগের আরেক নাম সুর তরঙ্গ সড়ক
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ