Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নাটক ও চলচ্চিত্র শিল্পী সংগঠনগুলোর উচিৎ মডেল ও অভিনয়শিল্পীদের পরিচয় নিশ্চিত করা

বিনোদন রিপোর্ট: | প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০২১, ১২:০১ এএম

সম্প্রতি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অভিযান চালিয়ে মাদকসহ তিন জন মডেলকে গ্রেফতার করে। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে তাদের পরিচয় দেয়া হয়েছে মডেল বা অভিনেত্রী। এ নিয়ে শোবিজ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বয়ে যায়। যারা গ্রেফতার হয়েছে, তারা প্রকৃত অর্থে মডেল বা অভিনেত্রী কিনা তা নিয় বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তাদেরকে মডেল বা অভিনেত্রী হিসেবে আখ্যায়িত করা কতটা যৌক্তিক তা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। কাকে মডেল আর কাকে অভিনেত্রী বলা হবে, এর মাপকাঠি কি, এমন আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে। একটি দুটি পণ্যের মডেল হয়ে বা নাটকে অভিনয় করে অনিয়মিত বা আর কাজ না করলে তাকে মডেল-অভিনেত্রী বলা যায় কিনা তা বিবেচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে। এতে মেইন স্ট্রিমের দর্শকপ্রিয় মডেল বা অভিনয়শিল্পীরা বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন। তারা মনে করছেন, এতে তাদের মানহানি হচ্ছে। যাকে তাকে মডেল বা অভিনয়শিল্পী বলা ঠিক হচ্ছে না। খ্যাতিমান চলচ্চিত্র নির্মাতা মনতাজুর রহমান আকবর বলেন, অভিনয়শিল্পী হওয়া এত সহজ নয়। এ পথটি অত্যন্ত কঠিন। এজন্য একজন অভিনয়শিল্পীকে অত্যন্ত পরিশ্রম করতে হয়। এটি সাধনার বিষয়। চাইলেই কেউ রাতারাতি মডেল বা অভিনেত্রী হতে পারে না। একজন মডেল বা অভিনেত্রীকে তার কাজের প্রতি নিষ্ঠা, একাগ্রতা ও সাধনা থাকতে হয়। এখন যেন যে কেউ ইচ্ছা করলেই মডেল বা অভিনেত্রী পরিচয় দিতে পারছে। ফেসবুক বা ইউটিউবে নিজের ভিডিও আপলোড করে বা টিকটক করে নিজেকে মডেল বা অভিনেত্রী পরিচয় দিচ্ছে। এটা কোনোভাবেই উচিৎ নয়। আজকে যারা দর্শকপ্রিয় মডেল বা অভিনয়শিল্পী তারা দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন তাদের প্রতিভার গুণে। তাদের প্রতিভা বিচার-বিশ্লেষণ করে নির্মাতারা তাদের তুলে ধরার কারণেই দর্শক গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। তবে আগে নির্মাতার কাছে তাদের পরীক্ষা দিতে হয়েছে। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর নির্মাতাদের যথাযথ উপস্থাপনের মধ্যদিয়েই তারা দর্শক গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠে। তবে কেউ দর্শকগ্রহণযোগ্যতা পায়নি কিংবা একটি-দুটি পণ্যের মডেল হয়ে বা নাটক ও চলচ্চিত্রে অভিনয় করে শোবিজে আর কাজ না করলে, অন্যকাজে জড়িয়ে পড়লে তাকে মডেল বা অভিনয়শিল্পী বলা যায় না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র নাট্যাভিনেতা বলেন, যাদের নাম খবরের শিরোনামে এসেছে তারা নামমাত্র মডেল। এদের সম্পর্কে কেউ অবগত নন। আদৌ এরা মডেল কিনা সেটাও কিন্তু কারো জানা নেই। তারা মডেল বা অভিনেত্রীর তকমা লাগিয়ে সুবিধা নেয়। এতে সত্যিকারের মানুষগুলোর বদনাম হয়। এদের কারণেই মূল ধারার শিল্পী ও মডেলদের অনেক সময় সাধারণ মানুষ ভুল বোঝে। যেসব মডেল এসব কাজে লিপ্ত তাদের কোনো আত্মসম্মান কিংবা অতীত নেই। কেউ যাতে নাম ভাঙিয়ে এ ধরনের ঘৃণিত কাজ করতে না পারে সে ব্যাপারে সবাইকে সাবধান হওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি। তাদের এ কথার সূত্র ধরে বলা যায়, এক্ষেত্রে টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের অভিনয়শিল্পী ও কলাকুশলীদের সংগঠনগুলোর ভূমিকা থাকা প্রয়োজন। মডেল বা অভিনয় শিল্পীদের পরিচয় নিশ্চিতে নির্দিষ্ট মান অনুযায়ী তালিকাভুক্ত করে নির্দিষ্ট শ্রেণীভুক্ত এবং শর্ত দিয়ে পরিচয়পত্র দেয়া এবং তার নির্দিষ্ট মেয়াদ নির্ধারণ করে দেয়া উচিৎ। বাংলাদেশ টেলিভিশনে অভিনয়শিল্পীদের এ ধরনের শ্রেণীভুক্ত শিল্পীদের তালিকা রয়েছে। প্রথম শ্রেণী থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীর শিল্পীদের তালিকা করা হয়েছে। চলচ্চিত্র পরিচালক, শিল্পী ও কলাকুশলীদের সংগঠনগুলোর সদস্য হওয়ার ক্ষেত্রেও শর্ত সাপেক্ষে সদস্য হওয়ার বিধান রয়েছে। নতুন সদস্যর ক্ষেত্রে এ বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ তারা যদি পেশা বদল করে এবং শোবিজে আর কাজ না করে, তবে তাদের সদস্যপদ বাতিল করা। এখন মডেল বা অভিনেত্রী হিসেবে ধরা পড়ে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, তা আর থাকবে না। সংগঠনগুলো বিবৃতি দিয়ে বলতে পারবে তারা সংগঠনের সদস্য নন এবং এ পেশায়ও তারা নেই। এতে কেউ অপরাধ করে ধরা পড়লেও মূলধারার মডেল বা অভিনয়শিল্পীদের মর্যাদার হানি হবে না।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ