পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চারদিকে নিথুয়া পাথার মাঝখানে দ্বীপের মতো ৫০ থেকে ৬০ বিঘা জমির এক ঘন জঙ্গল। ওই জঙ্গলাকীর্ণ জায়গাটিই বগুড়ার শাজাহানপুরের পেঁচুলবাড়ি গ্রাম। দেশি-বিদেশী মিডিয়ার কল্যাণে গ্রামটি এখন বেশ পরিচিত। স্থানীয়ভাবে ভূতের গ্রাম বলেও আখ্যা দেয় অনেকেই।
কেন গ্রামটি আলোচিত হল তা জানতে বগুড়া থেকে সিএনজি অটোরিকশা, ভ্যান এবং অবশেষে দেড় কিলোমিটার এলাকা হাঁটু সমান পানি ডিঙিয়ে হেঁটে ওই পরিত্যক্ত গ্রামে গিয়ে জানা গেল বেশ কিছু চমকপ্রদ তথ্য। পেঁচুলবাড়ি গ্রাম সংলগ্ন তাড়ইল গ্রামের মধ্য বয়সী বাচ্চু মিয়া জানালেন, ১৯৭৫-৭৬ সালের দিকে এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিলো না। পাকা হয়নি রাস্তাঘাট। তখন দুর্গম এলাকাটিতে জাসদ-সর্বহারা ছাড়াও পেশাদার চোর ডাকাতদের অভয়ারণ্য ছিল পুরো এলাকা। তবে রাস্তাঘাট না থাকায় পেঁচুলবাড়ি ছিল একবারেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ।
ফলে চোর-ডাকাতের উৎপাত ছিলো খুবই বেশি। সবকিছু সয়েও গ্রামটিতে মোটামুটি সচ্ছল ২০ থেকে ২৫ ঘরের বসতি বড় একটি দীঘি ও মসজিদ ছিল। খাবার পানির ইঁদারাসহ বেশ কয়েকটি পাতকুঁয়া। তবে নান্নু হাজি নামের সবচেয়ে প্রভাবশালী এক ব্যক্তি ধান বিক্রির টাকা নিয়ে গ্রামে ফেরার পথে ডাকাতের হাতে খুন হলে ওই পরিবারের সদস্যরা গ্রাম ছেড়ে চলে যায়। নান্নু হাজির পরিবার গ্রাম ছেড়ে চলে গেলে অন্যরাও ভিটেমাটি ছেড়ে একে একে চলে গেলে জনমানব শূন্য হয়ে যায় গ্রামটি।
জনমানব শূন্য হলেও তাড়ইল, জোড়গাড়ি এলাকায় বসবাসকারীরা জুমার নামাজ আদায় করতে পেঁচুলবাড়ির মসজিদেই যান। কেউ মারা গেলে কবর দেয়া হয় সেখানেই। নান্নু হাজির মৃত্যুর পর ৪৫ বছর পেরিয়ে গেলে পরিত্যক্ত ওই গ্রামটি এখন পুরোপুরি ভ‚তুড়ে গ্রামে পরিণত হয়েছে। মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়েছে নানান ভৌতিক গল্প। গ্রামটির দক্ষিণ পূর্বদিকের একটি বটগাছকে বলা হয় ভূতের গাছ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের মাটির বাড়িগুলো মাটির সাথে মিশে বড় বড় জঙ্গলে ঢাকা পড়লেও মসজিদটি সংষ্কার করে ঠিক রাখা হয়েছে। বিশাল দিঘীতে মাছ চাষ করা হচ্ছে। দিঘীর পাড়ে হাঁস ও মুরগির খামার করা হয়েছে। নতুন একটি কবরও দেখা গেল। জানা গেছে এক সপ্তাহ আগে এক বৃদ্ধার লাশ দাফন করা হয়েছে।
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী আতোয়ার তালুকদার ফজু ও কয়েকজন ইউপি সদস্য বলেন, এখন আর আইন শৃঙ্খলা বা নিরাপত্তার সমস্যা নেই। যারা গ্রাম ছেড়ে চলে গেছে তারা আবার ফিরে আসতে পারে। তারা ফিরে আসলে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সব ধরনের সহায়তাই দেবে। তবে যেসব পরিবার গ্রামছাড়া হয়েছে তাদের সবারই দাবি পেঁচুলবাড়ি গ্রামে বসবাসের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা রাস্তা। গ্রামে যাওয়া আসার রাস্তা করে দিলেই গ্রামটিতে আবারও বসত ভিটায় ফিরে যাবেন তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।